ট্রেন থেকে পড়ে সারা রাত অচেতন পড়ে ছিলেন ৩৮ বছরের সুনীল চৌহান। ছবি: সংগৃহীত।
চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে গিয়েছিলেন মাঝরাতে। লোহার রডে লেগে চিরে যায় পেট। বেরিয়ে এসেছিল নাড়িভুঁড়ি। ওই ভাবেই বাকি রাতটা অচেতন পড়ে ছিলেন ৩৮ বছরের সুনীল চৌহান। সকালে জ্ঞান ফিরলে কোনও মতে হাত দিয়ে নাড়িভুড়ি সামলে পেটে বেঁধে নেন গায়ের জামাটা। ওই অবস্থাতেই লাইন ধরে হেঁটে যান প্রায় ১০ কিলোমিটার। ঘটনাটি ঘটেছে তেলঙ্গানার ওয়রঙ্গল জেলায় উপ্পল স্টেশনের কাছে। আপাতত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সুনীল।
পুলিশ জানায়, উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা সুনীল কাজের খোঁজে অন্ধ্রপ্রদেশ যাচ্ছিলেন সঙ্ঘমিত্রা এক্সপ্রেসে। সঙ্গে ছিলেন তাঁর ভাই প্রবীণ ও আরও বেশ কয়েক জন। রবিবার রাত দু’টো নাগাদ শৌচালয়ে যাওয়ার জন্য দরজার কাছে এসেছিলেন সুনীল। ট্রেন হঠাৎ জোরে বাঁক নেওয়ায় ছিটকে বাইরে পড়ে যান। কামরার বাকি যাত্রীরা তখন ঘুমিয়ে। কেউ জানতেও পারেননি।
পুলিশের রিপোর্ট বলছে, পড়ে গিয়ে কোনও লোহার রডে ধাক্কা খান সুনীল। পেটের অনেকটা অংশ চিরে যায়। অন্ধকারে হারিয়ে গিয়েছিল মোবাইল ফোনও। তবে হাল ছাড়েননি। সকালে উঠে জামা খুলে পেটের কাছটা শক্ত করে বেঁধে নিয়েছিলেন। তার পরে হাত দিয়ে কোনওমতে নাড়িভুঁড়ি সামলে হাঁটতে শুরু করেন। প্রায় ১০ কিলোমিটার হেঁটে পৌঁছন হাসনপর্থী স্টেশনে।
হাসনপর্থীর স্টেশন মাস্টার নবীন পান্ড্য সঙ্গে সঙ্গে উচ্চতর কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান। আনা হয় অ্যাম্বুল্যান্স। সুনীলকে নিয়ে যাওয়া হয় ওয়রঙ্গলের এমজিএম হাসপাতালে। অস্ত্রোপচারে বেরিয়ে আসা অন্ত্র আবার যথাস্থানে ফিরিয়েছেন চিকিৎসকেরা। আপাতত সুনীলের অবস্থা স্থিতিশীল।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, মেরুদণ্ড ও শরীরে বিভিন্ন অংশে চোট রয়েছে সুনীলের। তবে মাথায় আঘাত না-লাগাতেই এ যাত্রা বেঁচে গিয়েছেন। যে কারণে গুরুতর জখম অবস্থাতেও ভাই প্রবীণের ফোন নম্বর বলতে পেরেছেন তিনি। খবর পেয়ে মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশ থেকে তেলঙ্গানায় আসে সুনীলের পরিবার। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার সময়ে মত্ত অবস্থায় ছিলেন না সুনীল। তাঁর রক্তে কোনও রকম মদের চিহ্ন মেলেনি বলে পুলিশি রিপোর্টেও জানানো হয়েছে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy