চিনের বিরুদ্ধে জোটে সামিল হতে ভারতের উপর চাপ বাড়িয়ে দিল আমেরিকা। নয়াদিল্লি সফরে এসে মার্কিন নৌসেনার অন্যতম শীর্ষকর্তা অ্যাডমিরাল হ্যারি হ্যারিস প্রকাশ্যেই চিনের বিরুদ্ধে ভারত-মার্কিন জোটের ডাক দিলেন। খোলাখুলিই বললেন, চিনকে সব দিক দিয়ে ঘিরে ফেলতে ভারতকে দরকার। আমেরিকা জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়ে দক্ষিণ চিন সাগরে যৌথ নজরদারিতে এখনই অংশ নেওয়া উচিত ভারতের। মন্তব্য হ্যারিসের।
অ্যাডমিরাল হ্যারি হ্যারিস মার্কিন নৌসেনার প্যাসিফিক কম্যান্ডের প্রধান। এই প্যাসিফিক কম্যান্ডই প্রশান্ত মহাসাগর থেকে ভারত মহাসাগর পর্যন্ত বিরাট এলাকায় নজরদারি চালায়। অতএব দক্ষিণ চিন সাগরে বেজিং-এর আগ্রাসন রুখতে ওয়াশিংটন যত রকম সামরিক পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা রূপায়ণের দায়িত্ব মার্কিন নৌসেনার এই প্যাসিফিক কম্যান্ডের উপরেই। চিনকে ঘিরতে জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার নৌসেনার সঙ্গে ইতিমধ্যেই গাঁটছড়া বেঁধেছে মার্কিন নৌসেনার প্যাসিফক কম্যান্ড। কিন্তু ভারত মহাসাগর তথা এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে চিনকে টক্কর দিতে হলে শুধু জাপান আর অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা যে যথেষ্ট নয়, তা আমেরিকা ভালই জানে। ভারতকে ছাড়া চিনের মোকাবিলা করা কোনওভাবেই সম্ভব নয় এই অঞ্চলে। তাই দক্ষিণ চিন সাগরে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করে চিন যে ভাবে নিজেদের জলসীমা বাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে, তা রুখতে ভারতকে চিন-বিরেোধী জোটে সামিল করতে আমেরিকা খুব আগ্রহী।
আরও পড়ুন:
চিনের কৃত্রিম দ্বীপের গা ঘেঁষে উপস্থিতি বাড়াচ্ছে ভারতীয় নৌসেনা
আমেরিকা চিনের বিরুদ্ধে জাপান অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতকে নিয়ে জোট গড়ছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছিল কিছু দিন আগেই। চার দেশের এই জোট দক্ষিণ চিন সাগরে নৌসেনা পাঠিয়ে নজরদারি চালাবে বলে জল্পনা শুরু হয়েছিল। বেজিং এই খবরে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যমে প্রবল সমালোচনা করা হয় এই চিন-বিরোধী সম্ভাব্য জোটের। ভারত অবশ্য কখনও প্রকাশ্যে এমন কোনও জোটে সামিল হওয়ার কথা বলেনি। বরং ভারতীয় নৌসেনা জানিয়ে দেয়, দক্ষিণ চিন সাগরে আমেরিকার সঙ্গে যৌথ টহলদারি চালানোর কোনও পরিকল্পনা ভারতের নেই। ভারতীয় নৌসেনার এই ঘোষণা নিঃসন্দেহে স্বস্তি দিয়েছিল চিনকে। কিন্তু অ্যাডমিরাল হ্যারিস দিল্লিতে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সামরিক আলোচনা চক্রে যোগ দিয়ে যে সব মন্তব্য করেছেন, চিনের অস্তস্তি তাতে আবার বাড়ছে।
দিল্লি সফরে অ্যাডমিরাল হ্যারি হ্যারিস জানিয়েছেন, বিশ্বের বৃহত্তম সামরিক শক্তিগুলির অন্যতম হিসেবে আন্তর্জাতিক জলসীমার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে এগিয়ে আসা ভারতের কর্তব্য। দক্ষিণ চিন সাগরে আন্তর্জাতিক জলপথকেই চিন নিজেদের এলাকা বলে দাবি করছে। তার বিরুদ্ধে আমেরিকা যখন ব্যবস্থা নিতে চাইছে, তখন ভারতের উচিত সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। অ্যাডমিরাল হ্যারিসের বক্তব্যের সারকথা অনেকটা এই রকমই। ভারত শেষ পর্যন্ত চিন বিরোধী জোটে সামিল হয়ে আমেরিকার সঙ্গে দক্ষিণ চিন সাগরে যৌথ টহলদারি চালাবে কি না তা নিশ্চিত নয়। কিন্তু ভারত, আমেরিকা, জাপানের নৌসেনা কয়েক মাসের মধ্যেই দক্ষিণ চিন সাগরে সামরিক মহড়া দিতে একত্রিত হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy