বেঙ্কাইয়া নায়ডু।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে কংগ্রেস-সহ সাত বিরোধী দলের আনা ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব নিয়ে আপাতত ধীরে এগোচ্ছেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু। সূত্রের খবর, আইন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে তবেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত পদক্ষেপ করতে চাইছেন তিনি।
গত কাল ৭১ জন বিরোধী সাংসদ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রকে সরানোর দাবি তুলে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে নোটিস দিয়েছিলেন। বিরোধীদের মূল অভিযোগ, দেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে তিনি একাধিক আচরণবিধি ভেঙেছেন। অভিযোগ আনা হয় কারচুপি এবং অসত্য হলফনামা দেওয়ারও। সূত্রের খবর, বেঙ্কাইয়া প্রথমেই দেখে নিতে চাইছেন, দীপক মিশ্রের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি আদৌ সঠিক কিনা। প্রয়োজনে তিনি কোর্ট রেকর্ড দেখে এ বিষয়ে তাঁর নিয়োগ করা আইন বিশেষজ্ঞদের প্যানেল কী বলছে, তা যাচাই করে নেবেন। যদি প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ না পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে ওই প্রস্তাব সম্ভবত বাতিল করে দেওয়ার পথেই হাঁটবেন নায়ডু। সূত্রের খবর, বিষয়টি যে হেতু রাজনৈতিক ভাবে সংবেদনশীল, তাই মেপে পা ফেলার পক্ষে নায়ডু। বিরোধী শিবিরের একাংশ বলছে, শেষ পর্যন্ত প্রস্তাব গৃহীত না হলে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হওয়া যায় কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে আনা ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব দুর্ভাগ্যজনক বলেই মনে করছেন প্রাক্তন সলিসিটর জেনারেল হরিশ সালভে। ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওই প্রস্তাব হয় গৃহীত হবে বা বাতিল হবে। যদি প্রস্তাব গৃহীত হয়, তা হলে বিচারপতির মর্যাদা নষ্ট হবে। যদি প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়, তা হলে উপরাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠবে। ঘটনা হল, ওই পদক্ষেপের ফলে বিচারব্যবস্থার ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে।’’ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ বা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের ওই প্রস্তাবে সই না করার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন সালভে।
কংগ্রেস নেতৃত্বের অন্দরে দোলাচল নিয়ে গতকাল থেকেই সরব বিজেপি। গতকাল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনাকে ‘প্রতিশোধের রাজনীতি’ বলেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। বিজেপি শিবিরের অভিযোগ, অমিত শাহের নাম যে হেতু লোয়া মামলায় জড়িয়ে রয়েছে, তাই বিজেপি সভাপতিকে অস্বস্তিতে রাখতেই এ কাজ করছে কংগ্রেস। আজ জবাবে কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘যখন অরুণ জেটলি বিচারপতি সৌমিত্র সেনের ইমপিচের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন, তখন তো কেউ প্রতিশোধের রাজনীতির কথা বলেনি। বরং ইউপিএ সরকার তখন সংবিধান মেনেই পদক্ষেপ করেছিল।’’
কংগ্রেস পাল্টা আক্রমণ শানাতেই আসরে নামে বিজেপি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু বলেন, ‘‘কংগ্রেস বলছে গণতন্ত্র বিপন্ন। অথচ, সেই কংগ্রেসই না বিশ্বাস করে সেনায়, না সুপ্রিম কোর্টে। না সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির উপর। এদের না বিশ্বাস রয়েছে নির্বাচন কমিশনে, না বিশ্বাস রয়েছে প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতিতে। দেশের লোকের যেমন কংগ্রেসের উপর বিশ্বাস নষ্ট হয়ে গিয়েছে, তেমনই কংগ্রেস এ দেশের মানুষ ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের উপর থেকে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy