নেতা: কর্নাটকের হাবেরীতে জনসভায় কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। শনিবার। পিটিআই
নীরব মোদীর ভিডিয়ো লোকসভা ভোটের আগে নতুন অস্ত্র তুলে দিল কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের হাতে।
সভাপতি রাহুল গাঁধী বলেছেন, নীরবের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর মিল দেখেছেন তিনি। মুখ খুলেছেন পি চিদম্বরম, রণদীপ সুরজেওয়ালা, প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদীরাও। সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে কংগ্রেস অভিযোগ তুলেছে প্রধানমন্ত্রী থেকে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির সঙ্গে নীরবের পুরনো যোগাযোগ নিয়ে। বিরোধীদের প্রশ্ন হল, পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের ১৩,৫০০ কোটি টাকা প্রতারণা করেও নীরব নিশ্চিন্তে লন্ডনে ঘুরে বেড়াচ্ছেন কী করে? তাঁকে ফেরাতে মোদী সরকার কী করছে?
সুরজেওয়ালার টুইট, ‘‘প্রথমে টাকা লুট, কোনও তল্লাশি ছাড়াই দেশ থেকে পালানো। সিবিআই-ইডিকে নিয়ে ছেলেখেলা করার পরে ৭৫ কোটির ফ্ল্যাটে থাকা। মোদী আছেন। সবই সম্ভব।’’ বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে চিদম্বরমের কটাক্ষ, ‘‘যখন ললিত মোদী ব্রিটেনে ছিলেন, সেই সময়ে ওঁকে ভারতে ফেরত পাঠানোর জন্য আমি ব্রিটেনের চ্যান্সেলরকে চিঠি লিখেছিলাম। সুষমা স্বরাজ তা নিয়ে আমাকে কটাক্ষ করেছিলেন। এ বার কি উনি লন্ডনের রাস্তা থেকে ছোঁ মেরে নীরবকে তুলে নিয়ে আসবেন?’’ শুধু কংগ্রেস নেতারা নন, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালও টুইটারে লিখেছেন, ‘‘নীরব মোদী ও বিজয় মাল্যকে পালাতে দেওয়াটা কি মোদীজির দেশপ্রেমের নমুনা?’’ সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির টুইট, ‘‘তথাকথিত চৌকিদার রয়েছেন শুধু তাঁর বন্ধুদের লুট করে পালাতে সাহায্য করার জন্য। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। মোদীর সঙ্গে এই মোদীও দাভোসের নিমন্ত্রণ পেয়েছিলেন।’’ কংগ্রেসের অভিযোগ, নীরব ও তাঁর মামা মেহুল চোক্সীর দুর্নীতির কথা জানতেন নরেন্দ্র মোদী। নীরব যেমন মোদীর সঙ্গে ছবি তুলেছেন, তেমনই মেহুলকে ‘আমাদের মেহুলভাই’ বলে সম্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। অরুণ জেটলির মেয়ে-জামাইয়ের সঙ্গেও মেহুলের সংস্থার পেশাদারি লেনদেন ছিল।
বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, রাহুল গাঁধীও তো নীরব মোদীর অলঙ্কারের প্রদর্শনীতে গিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, ইউপিএ আমলে ২০১১-তে ব্যাঙ্ক প্রতারণা শুরু করেছিলেন নীরব। মোদী সরকারের আমলে তা চিহ্নিত হয়। নীরবকে ইতিমধ্যেই ‘পলাতক’ ঘোষণা করা হয়েছে, তাঁর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়েছে। ইউপিএ-আমলের অন্য অপরাধীদের যেমন দেশে ফিরিয়ে এনে হাজতে পোরা হয়েছে, বাকিদেরও তা করা হবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের অভিযোগ, ‘‘নীরব, মেহুল, বিজয় মাল্যকে ব্যাঙ্ক প্রতারণায় কংগ্রেস সাহায্য করেছিল। লন্ডনে নীরবকে আরামে থাকতে দেখে তাই কংগ্রেসের নেতারা খুশি হয়েছেন। মোদী সরকার সব পলাতককে ফিরিয়ে আনবে।’’
আরও পড়ুন: ‘নীমো’কে নিল না লন্ডন ক্যাব
প্রশ্ন হল, কবে ও কী ভাবে? বিদেশ মন্ত্রক আজ মেনেই নিয়েছে, নীরবকে লন্ডনে দেখা গিয়েছে মানেই তাঁকে পত্রপাঠ ফিরিয়ে আনা যাবে না। তাৎপর্যপূর্ণ হল, মাল্যও আপাতত লন্ডনে। ললিত মোদীও নিয়মিত টুইট করছেন লন্ডন থেকে। অন্যান্য দেশেও যাচ্ছেন। ব্রিটিশ সরকার মাল্যর প্রত্যর্পণের নির্দেশ দিলেও তাকে চ্যালেঞ্জ জানানোর জন্য কোর্টের অনুমতি চেয়েছেন কিংফিশার প্রধান। ফলে আইনি জট এখনও রয়েছে। এ দিকে, মেহুল ভারতীয় পাসপোর্ট জমা দিয়ে অ্যান্টিগার নাগরিকত্ব নিয়েছেন। অ্যান্টিগার সঙ্গে ভারতের প্রত্যর্পণ চুক্তি নেই।
ফলে বিজেপি ‘বাকিদের’ ফেরানোর কথা বললেও তা বাস্তবায়িত হওয়ার কোনও ইঙ্গিত অদূর ভবিষ্যতে নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy