বিজয় মাল্য। ছবি: রয়টার্স।
লন্ডনে দু’বছর নীরব থাকার পরে প্রথম বার প্রকাশ্যে মুখ খুলেই নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে পাল্টা কাঠগড়ায় তুললেন বিজয় মাল্য। অভিযোগ করলেন, দেনা শোধ করার সুযোগ না দিয়ে শাসকরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাঁকে জনরোষের নিশানা বানাচ্ছে। বিদেশ প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর এর প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘‘ব্যাঙ্কের ঋণ শোধ করতে চাইলে মাল্য অনেক বছর আগেই তা করতে পারতেন।’’
ঋণ প্রসঙ্গে মাল্য জানান, দু’বছর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে চিঠি দিয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, ঋণ শোধ করার সব রকম চেষ্টা করছেন। তবে বকেয়ার অঙ্ক ৯০০০ কোটি টাকার চেয়ে ঢের কম। ২০১৬-র ১৫ এপ্রিল লেখা চিঠি দু’টির বয়ান প্রকাশ করে মাল্য জানান, আজ পর্যন্ত কোনও জবাব মেলেনি। উল্টে ‘ইচ্ছাকৃত ভাবে দেনা শোধ না করার অভিযোগ’ চাপানো হয়েছে। মাল্যর ক্ষোভ, ‘‘ভারতে ব্যাঙ্ক জালিয়াতির পোস্টার বয় বানানো হচ্ছে আমাকে!’’ বিষয়টি বোঝাতে উপমাও দেন ‘লিকার ব্যারন’ তথা বন্ধ হয়ে যাওয়া বিমানসংস্থা কিং ফিশারের প্রাক্তন মালিক। বাজ পড়লে উঁচু বাড়ির মাথায় বসানো লোহার শলাকা দিয়ে সব বিদ্যুৎ মাটিতে চলে যায়, বাড়ি থাকে অক্ষত। মাল্যর দাবি, জনরোষ থেকে বাঁচতে সরকার ওই শলাকার মতো ব্যবহার করছে তাঁকে।
এক দিকে ব্রিটেন থেকে ভারতে তাঁর প্রত্যর্পণ ঠেকাতে আইনি যুদ্ধ চালাচ্ছেন মাল্য। তার উপরে ভারতীয় তদন্ত সংস্থাগুলি সমানে তাঁর পিছনে লেগে রয়েছে। তাঁর দাবি, সরকার ও ঋণদাতা ব্যাঙ্কগুলির চাপে সিবিআই ও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট তাঁর বিরুদ্ধে এমন সব অভিযোগ এনেছে, যেগুলি নির্জলা মিথ্যা। ইডি বেআইনি আর্থিক লেনদেন রোধ আইনে তাঁর ও তাঁর পরিবারের মালিকানাধীন বা নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থাগুলির যত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে, তার চলতি বাজার দর প্রায় ১৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। সেই সম্পত্তি বেচেও ঋণ শোধ করতে দেওয়া হচ্ছে না। মাল্যর কথায়, ‘‘সংবাদমাধ্যম ও রাজনৈতিক নেতারা এমন বলছেন যে, আমি যেন ৯০০০ কোটি টাকা চুরি করে পালিয়েছি।’’ সিবিআই তাঁকে ফৌজদারি অভিযোগে গাঁথতে বদ্ধপরিকর— এ কথা উল্লেখ করে মাল্য বলেন, ‘‘আমি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির ঋণ শোধ করে দিই— সরকার কি আদৌ সেটা চায়? এটাই এখন মূল প্রশ্ন।’’
আরও পড়ুন: ব্যাঙ্ক-দুর্নীতি রুখতে আইন বদলের প্রস্তাব
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy