Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ত্রাণের টাকায় চপার উড়িয়ে প্যাঁচে বিজয়ন

সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য হিসাবে রাজ্যের নানা জেলায় সম্মেলনে এখন হাজির হতে হচ্ছে বিজয়নকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৫৬
Share: Save:

ভয়াল ঘূর্ণিঝড়ে কাহিল মৎস্যজীবীদের জন্য কেন্দ্র কেন সাহায্য করছে না, সেই প্রশ্নে সরব ছিল তাঁর সরকার। এ বার বিপর্যয় মোকাবিলার তহবিল থেকে তাঁর চপার ভ্রমণের বিল মেটাতে গিয়ে ঝড়ের মুখে পড়লেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন!

সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য হিসাবে রাজ্যের নানা জেলায় সম্মেলনে এখন হাজির হতে হচ্ছে বিজয়নকে। ত্রিশূর জেলা সম্মেলনে যখন তিনি প্রতিনিধিদের বক্তৃতা শুনতে ঢুকছেন, সেই সময়েই খবর আসে ‘অক্ষি’ ঘুর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে আলোচনার জন্য কেন্দ্রীয় দল এসেছে তিরুঅনন্তপুরমে। এবং তারা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই কথা বলতে চাইছে। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে সে দিন বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে ভাড়া নেওয়া হয় চপার। ত্রিশূর থেকে রাজ্যের রাজধানী শহরে এসে ঘণ্টাখানেক কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক সেরে আবার চপারেই ত্রিশূর ফিরে যান মুখ্যমন্ত্রী। গোল বাধে সেই উ়ড়ানের বিল মেটাতে গিয়েই।

মুখ্যমন্ত্রীর ২৬ ডিসেম্বরের ওই উড়ানের জন্য প্রায় ৮ লক্ষ টাকার বিল স্বরাষ্ট্র দফতর পাঠিয়েছিল রাজস্ব দফতরের কাছে। তার ভিত্তিতে নির্দেশিকা জারি হয়েছিল, বিপর্যয়ের ত্রাণ তহবিল থেকে বিল মিটিয়ে দিতে হবে। এমন নির্দেশের খবর বাইরে বেরোতেই শুরু হয় হইচই। মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেন বিরোধী কংগ্রেস ও বিজেপি নেতারা। চাপের মুখে মুখ্যমন্ত্রীই আবার নির্দেশ দিয়েছেন, ওই নির্দেশিকা বাতিল করতে হবে। বিজয়নের মুখ রক্ষায় সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব ঠিক করেছেন, বিল দলই মিটিয়ে দেবে।

বিতর্ক সামাল দেওয়ার জন্য পুরনো নির্দেশ বাতিল হলেও প্রায় বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো প্রবল কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নকে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা রমেশ চেন্নিথালা ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এম এম হাসানের বক্তব্য, ‘‘এ তো যা হয়েছে, ভিখিরির ঝুলি থেকে চাল চুরি করার সামিল! বিপর্যয়ের ত্রাণ তহবিলের টাকায় মুখ্যমন্ত্রী হেলিকপ্টার চড়বেন? সাধারণ মানুষের দানে ত্রাণ তহবিল তৈরি হয় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সাহায্যের জন্য।’’ বঙ্গ বিজেপি-র নেতা শিশির বাজোরিয়াও মন্তব্য করেছেন, ‘‘কমরেড পিনারাই প্রকৃত কমিউনিস্ট! তাই বিপর্যয়ের তহবিলে চপারে চেপেছেন।’’

মুখ্যমন্ত্রীর দফতর অবশ্য যুক্তি দিয়েছে, বিলের বিষয়টি একেবারে আমলাতান্ত্রিক বিপর্যয়! মুখ্যমন্ত্রীর অজ্ঞাতেই এমন নির্দেশ জারি করে ফেলেছিলেন রাজস্ব দফতরের আধিকারিকেরা। ওই দফতর রয়েছে বাম শরিক সিপিআইয়ের হাতে। রাজস্বমন্ত্রী ই চন্দ্রশেখরন জানিয়েছেন, তাঁর দফতর বিষয়টির তদন্ত করবে। পাশাপাশিই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এবং সমবায়মন্ত্রী কে সুরেন্দ্রন বলেছেন, ‘‘দলের যথেষ্ট তহবিল আছে। আমরাই চপারের বিল মিটিয়ে দেব।’’

চপারের ঝাপ্টা আসলে লাগল সিপিএমের গায়েই!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE