সংসদের অধিবেশনের আগে ব্যপম কাণ্ডে নতুন মোড়ে ফের বিপাকে পড়ল নরেন্দ্র মোদী সরকার।
ব্যপম দুর্নীতিতে নাম জড়াল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের। একইসঙ্গে বিজেপি-র দুই নেতা প্রভাত ঝা, অনিল দাভে-সহ আরএসএসের সুরেশ সোনির নামেও উঠল অভিযোগ। এরই মধ্যে রাজ্যপালকে সরানো নিয়ে এখনও হিমশিম খেতে হচ্ছে সরকারকে। আজই সিবিআই তিনটি মামলা দায়ের করেছে। নম্রতা দামোর-সহ পাঁচটি সন্দেহজনক মৃত্যুর নথিও চাওয়া হয়েছে রাজ্য পুলিশের থেকে। চাপের মুখে থাকা মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান আজ দিল্লিতে এসে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গে। নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিতে দলের আর এক অভিযুক্ত নেত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়াও প্রথম বার মুখোমুখি হন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে।
কংগ্রেস আজ অভিযোগ করে, ব্যপম কাণ্ডের ‘কিংপিন’ খনি মাফিয়া সুধীর শর্মার বাড়িতে ২০১১ সালে আয়কর হানায় তাঁর হার্ড ডিস্ক থেকে জানা গিয়েছে, বিজেপি-র অনেক নেতাকে তিনি সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন। ধর্মেন্দ্র প্রধানের বিমানের টিকিট কেটে দিয়েছেন এই ব্যক্তি। বিজেপি এবং আরএসএসের অন্য নেতারাও নিয়মিত সুবিধা নিয়েছেন। অবিলম্বে মোদী সরকারের মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান ও শিবরাজ সিংহের পদত্যাগ দাবি করেছে কংগ্রেস। বিজেপি নেতৃত্ব বুঝতে পারছেন, সংসদের অধিবেশনের আগে এই নতুন অভিযোগ নতুন করে বিপাকে ফেলবে সরকারকে। কারণ, উত্তরোত্তর যে ভাবে ব্যপম কাণ্ড দানা বাঁধছে, তাতে সংসদে হট্টগোল থামানো কঠিন হয়ে পড়বে। আটকে যাবে সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ বিলগুলি।
ধর্মেন্দ্র প্রধান অবশ্য তড়িঘড়ি সাফাই দিয়ে বলেছেন, তাঁর টিকিট দলই কেটেছে। সুধীর শর্মার সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ নেই। তবে এ কথাও সত্য যখন ধর্মেন্দ্রর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, সেই সময় তিনি কেন্দ্রের মন্ত্রী ছিলেন না। ব্যপম কাণ্ড নিয়ে সংসদে দলের কৌশল কী হবে, তা নিয়ে গতকাল রাতেই প্রধানমন্ত্রী দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে ডাকেন। সেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ও দলের সভাপতি অমিত শাহও উপস্থিত ছিলেন। মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল রাম নরেশ যাদবের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর সরকার কী অবস্থান নেবে, তা নিয়েও সবিস্তার আলোচনা হয়। ঠিক ছিল, প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরেই এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
কিন্তু বিজেপি সূত্রের মতে, সেই বৈঠকে রাজনাথ সিংহ রাজ্যপালকে এখনই না সরানোর ব্যাপারে জোর দিয়েছেন। অরুণ জেটলিরা রাজ্যপালের অপসারণের পক্ষে হলেও রাজনাথ মনে করেন, এক বার রাজ্যপালকে সরিয়ে দিলে আক্রমণের নিশানায় সরাসরি চলে আসবেন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান। রাজ্যপাল মুখ খুললেও দলের বিপদ বাড়তে পারে। এই অবস্থায় রাজ্যপালকে বোঝানো হচ্ছে, যাতে তিনি স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ান। কিন্তু সরকারের এক সূত্রের মতে, সিবিআই তদন্ত শুরু করলে রাজ্যপালের পদে থাকার কোনও নৈতিক অধিকার নেই। অতীতে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন, গোয়ার রাজ্যপাল বি ভি ওয়াংচুকেও এ ভাবে সরে যেতে বলা হয়েছিল, যখন তাঁদের বিরুদ্ধে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছিল। ফলে রাজ্যপালের বিদায় নিশ্চিত। এখন কোন সময়ে কী ভাবে সেটি করা হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy