তখন সবে সকালের আলো ফুটতে শুরু করেছে। রোজকার মতোই প্রাতর্ভ্রমণ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন ৬৭ বছরের বৃদ্ধ অশ্বিনী আনন্দ। সঙ্গী ছিলেন তাঁর এক পড়শি। ধীরে ধীরে হেঁটে বাড়ির দরজার সামনে প্রায় পৌঁছে গিয়েছিলেন টিশার্ট-শর্টস-স্নিকার পরিহিত অশ্বিনী। হঠাৎই মূর্তিমান বিভীষিকার মতো সামনে থেকে তেড়ে এল একটা গাড়ি। কিছু বোঝার আগেই অশ্বিনীর গায়ে একটা সজোরে ধাক্কা। আক্ষরিক অর্থেই শূন্যে উড়ে গিয়ে প্রায় দশ ফুট দূরে রাস্তায় দাঁড়ানো একটি গাড়ির মাথায় ছিটকে পড়লেন অশ্বিনী। তত ক্ষণে পাশ দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছে ওই গাড়িটি। সোমবার সকাল পশ্চিম দিল্লির জনকপুরী এলাকার এই ঘটনার গোটা ছবিটাই ধরা পড়েছে অশ্বিনী আনন্দের বাড়ির সামনে থাকা সিসিটিভি-র ফুটেজে। এলাকায় টহলদারি এক পুলিশভ্যানের নজর এড়ায়নি ঘটনাটি। সঙ্গে সঙ্গে ওই গাড়িকে তাড়া করা শুরু করে পুলিশ। কিছু দূর গিয়ে একেবারে হাতেনাতে ধরে ফেলে গাড়ির চালককেও। অশ্বিনীকে মারার আগে তার গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয় আরও এক পথচারীর।
আরও পড়ুন
প্রথা মানতে গিয়ে আট বছরের ছেলেকে আগুনে ফেলে দিল বাবা!
পুলিশ জানিয়েছে, অশ্বিনী আনন্দকে ধাক্কা মারার আগে আরও দু’জনকে মেরে শুইয়ে দিয়েছে ওই হোন্ডা-চালক বছর একুশের ঋষভ। দিল্লির একটি নামকরা সরকারি কলেজের বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ছাত্র সে। হোন্ডা গাড়িটি ঋষভের বাবার নামে রেজিস্টার করা। পুলিশের দাবি, রাতভর পার্টি করে চূড়ান্ত মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিল সে। ঘটনার সময় তার গাড়ির গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে খবর, ঋষভের গাড়িটি প্রচণ্ড গতিতে এসে প্রথমে সজোরে ধাক্কা মারে কমলেশ্বর প্রসাদের গায়ে। প্রাতর্ভ্রমণ সেরে তখন বাড়ি ফিরছিলেন ৪২ বছরের সরকারি কর্মচারী কমলেশ্বর। রাস্তাতেই ছিটকে যান তিনি। এর পরেও থামেনি ঋষভ। কিছু দূরেই রাস্তায় গাড়ি পরিষ্কার করছিলেন বছর চল্লিশের সন্তোষ। গাড়ির গতি না কমিয়ে এর পর তাঁকে ধাক্কা মারে ঋষভ। সন্তোষকে রাস্তায় পড়ে যেতে দেখে স্পিড আরও বাড়িয়ে দেয় সে। এ বার রাস্তার উল্টো দিকে ঢুকে পড়ে ধাক্কা মারে অশ্বিনী আনন্দকে।
গাড়ি-সহ ঋষভকে আটক করে প্রথমে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তার গাড়ির ভেতর থেকে কয়েকটি মদের বোতলও উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সময় ঋষভ এতটাই মদ্যপ অবস্থায় ছিল যে, ঠিকমতো দাঁড়াতেও পারছিল না সে। এই ঘটনায় গুরুতর জখম সন্তোষকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁর বয়ান রেকর্ড করার চেষ্টা করছে পুলিশ। তবে এখনও কথা বলার মতো অবস্থায় নেই সন্তোষ।
পুলিশ জানিয়েছে, ঋষভের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত কাল আদালতে তোলা হলে তার ১৪ দিনের জেল হেফাজত হয়।
নীচের ভি়ডিওতে দেখে নিন সেই দুর্ঘটনার ছবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy