Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

তৃষ্ণার্ত চেন্নাইকে জল দিচ্ছে কেরল

চেন্নাইয়ে তারকা হোটেল থেকে রাস্তার পাইস হোটেল পর্যন্ত সর্বত্রই জল যথাসম্ভব কম খরচ করার মিনতি। চেন্নাইয়ে মূলত যে-চারটি লেক থেকে রোজকার ব্যবহারের জল শহরের কোণে কোণে পৌঁছয়, সেগুলো প্রায় শুকিয়ে গিয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মধুমিতা দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৯ ০১:৩২
Share: Save:

মহানগরী চেন্নাইয়ের যে-দিকেই যান, চোখে পড়বে জলকষ্টের ছবি। অথচ মুখ্যমন্ত্রী ইকে পালানিস্বামী প্রথমে সেটা মানতেই চাননি। তবে চাপের মুখে পড়ে এখন তিনিও স্বীকার করছেন, তীব্র জলকষ্টে ভুগছে চেন্নাই। কেরল থেকে নিয়মিত জলের ট্রেন চালানোর ব্যবস্থাও করেছেন।

চেন্নাইয়ে তারকা হোটেল থেকে রাস্তার পাইস হোটেল পর্যন্ত সর্বত্রই জল যথাসম্ভব কম খরচ করার মিনতি। চেন্নাইয়ে মূলত যে-চারটি লেক থেকে রোজকার ব্যবহারের জল শহরের কোণে কোণে পৌঁছয়, সেগুলো প্রায় শুকিয়ে গিয়েছে। ২০১৯ সালে সেখানে প্রথম বৃষ্টি হল গত বৃহস্পতিবার। তা-ও ছিটেফোঁটা। পাইপের যে-জল সরবরাহ করা হয়, তার ১০ শতাংশও পাওয়া যাচ্ছে না। ১৯৮২ থেকে চেন্নাইয়ে রয়েছেন প্রকল্প ভট্টাচার্য। তিনি জানালেন, এর আগে কখনও এ-রকম জলসঙ্কট দেখেননি। জল কিনতে হচ্ছে। এক ট্যাঙ্কার জল ৩০ হাজার টাকা দিয়ে কেনে তাঁদের আবাসনের ৭০টি পরিবার। চলে মাত্র দু’দিন। জয়ললিতার আমলে ‘রেন ওয়াটার হারভেস্টিং’ বা বৃষ্টির জল সংরক্ষণের প্রকল্প শুরু হয়েছিল। তার জন্য জলাধারের ব্যবস্থাও করা হয়। ‘‘কিন্তু বৃষ্টিই তো হচ্ছে না। কোথা থেকে আসবে বৃষ্টির জল? অনেক জায়গাতেই গভীর নলকূপ ব্যবহার করা হয়। তাতেও আর জল উঠছে না,’’ বললেন প্রকল্পবাবু।

অথচ চেন্নাই এবং আশপাশের এলাকায় ছিল প্রচুর জলাশয়। কিন্তু নগরসভ্যতার আগ্রাসনের গুনাগার দিচ্ছে চেন্নাই। অপরিকল্পিত ভাবে প্রচুর বাড়িঘর তৈরি হয়ে যাওয়ায় জলাভূমি উধাও হয়ে গিয়েছে।কেন্দ্রীয় সরকারের বিচারে দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আইআইটি মাদ্রাস ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা গেল, জলসঙ্কটের ছবিটা একই।

জলাভাবের দরুন অনেক ছাত্রকেই বাড়ি চলে যেতে বলা হয়েছে। পরের পর হস্টেল শূন্য। যাঁরা গবেষণা এবং জরুরি কাজে যুক্ত, রয়েছেন শুধু তাঁরাই। এই আইআইটির পিএইচ ডি স্কলার চন্দন বসু জানান, জলের অভাবে এ বার এই গরমে সুইমিং পুলেও জল সরবরাহ করা হয়নি। শুকনো পড়ে আছে পুল। ‘‘আমরা যারা হস্টেলে আছি, তাদেরও অনেক বুঝেশুনে জল খরচ করতে হচ্ছে। কেননা জলের সরবরাহ নিয়মিত নয়,’’ বললেন চন্দন।

চেন্নাইয়ে রয়েছে বহু তথ্যপ্রযুক্তি অফিস। সেই সব সংস্থার বেশির ভাগ কর্মীকেই আসতে বারণ করা হয়েছে। তাঁরা বাড়ি থেকে কাজ করছেন। ডিএমকে নেতা এমকে স্টালিন এই রাজ্য সরকারের বিরোধিতা করার এই সুযোগ ছাড়ছেন না। জলের সঙ্কট নিয়ে তামিলনাড়ু জুড়ে আন্দোলনে নেমে পড়েছে তাঁর দল। প্রায় প্রতিদিনই হাঁড়ি-কলসি নিয়ে রাস্তায় নামছেন ডিএমকে-র কর্মী-সমর্থকেরা।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tamil Nadu Kerala Chennai Water crisis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE