গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
ভারতের দাবি মতো ভুয়ো খবরের উৎস জানানো সম্ভব নয়। তা হলে হোয়াটসঅ্যাপের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তথ্যসুরক্ষার মূল নীতিটিই প্রশ্নের মুখে পড়বে। পাশাপাশি, লঙ্ঘিত হবে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য গোপন রাখার বিষয়টিও। দেশের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রককে এই কথা জানিয়ে দিল হোয়াটসঅ্যাপ।
গত কয়েক মাসে হোয়াটসঅ্যাপে গুজব ও ভুয়ো খবর ছড়ানোর জেরে মেঘালয়ের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে দক্ষিণের কর্নাটক— দেশজুড়ে অন্তত ২০ জন প্রাণ হারিয়েছেন গণপিটুনিতে। মোবাইল অ্যাপটির বিপজ্জনক ভূমিকার বিরুদ্ধে প্রবল সমালোচনাও শুরু হয়েছে দেশে। এ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দেশের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক বেশ কয়েক বার চিঠি পাঠায় হোয়াটসঅ্যাপকে। এই সপ্তাহের শুরুতেই ভারতে এসেছিলেন হোয়াটসঅ্যাপের প্রধান ক্রিস ড্যানিয়েলস। তাঁকেও ভুয়ো খবর নিয়ে উদ্বেগের বিষয়টি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। এমনও বলা হয়েছিল, যেহেতু হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেই ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে, তাই এ সবে মদত জোগানো হচ্ছে বলে হোয়াটসঅ্যাপকেই দায়ী ধরে নেওয়া হবে।
কিন্তু ভারতের দাবি মেনে নিলে হোয়াটসঅ্যাপের ব্যবসার মূল নীতিটিই প্রশ্নের মুখে পড়বে। তাই এই দাবির কোনও প্রযুক্তিগত সমাধান এই মুহুর্তে দিতে পারবে না তারা। তবে ভারতের অন্যান্য কিছু দাবি মেনে নিয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ। ভারতে হোয়াটসঅ্যাপের কোনও অফিস নেই বলে নিজেদের অসুবিধের কথা জানিয়েছিল তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক। সেই দাবি মেনে নিয়ে একটি অফিস করার কথা জানিয়েছে তারা। এ ছাড়া কোনও নির্দিষ্ট মুহূর্তে সর্বোচ্চ কত জনকে একটি মেসেজ ফরওয়ার্ড করা যাবে, সেই সংখ্যাও কমানো হয়েছে। কোনও মেসেজ ফরওয়ার্ডেড হয়ে আসছে কি না, তা ব্যবহারকারীরা যাতে বুঝতে পারেন সেই ব্যবস্থাও ইতিমধ্যে করে ফেলেছে তারা। একই সঙ্গে ভুয়ো খবর আটকাতে জন সচেতনতা বাড়ানোর কাজে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ।
আরও পড়ুন: হাতেনাতে ধরা পড়েছে সাম্প্রদায়িক ছক
আরও পড়ুন: সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁদ, সহবাসের পর ভিডিয়ো করে ব্ল্যাকমেল, নির্যাতন সোনারপুরে
ফেসবুকের মালিকানায় থাকা হোয়াটসঅ্যাপের সব থেকে বড় বাজার ভারতই। সারা পৃথিবীতে হোয়াটসঅ্যাপের ১৫০ কোটি ব্যবহারকারীর মধ্যে ২০ কোটিই ভারতে থাকেন। সামনেই ভারতের লোকসভা নির্বাচন। হোয়াটসঅ্যাপের বিশাল মঞ্চকে ব্যবহার করে অনেকেই এই নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চালাবে, এই সম্ভাবনা প্রবল। সে ক্ষেত্রে, অবধারিত ভাবে ভুয়ো খবরের দাপট ও তাকে ঘিরে অশান্তি বাড়বে। খুব তাড়াতাড়ি জনসচেতনতা বাড়িয়ে সেই বিভ্রান্তি ও হিংসা কতটা কমানো সম্ভব, তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই।
রাজনীতি, অর্থনীতি, ক্রাইম - দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy