Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Rahul Gandhi

৫০ ঋণখেলাপি, রাহুলের প্রশ্নে নির্মলা নিরুত্তর

প্রশ্ন করতে উঠে রাহুল বলেন, ‘‘কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে অর্থনীতি যাচ্ছে। ব্যাঙ্ক মুখ থুবড়ে পড়ছে। আরও পড়বে।”

রাহুল গাঁধী ও নির্মলা সীতারামন।

রাহুল গাঁধী ও নির্মলা সীতারামন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২০ ০৬:৩৮
Share: Save:

লোকসভার প্রথম এক ঘণ্টায় যাতে সব থেকে বেশি প্রশ্ন নেওয়া যায়, তার জন্য রোজ গুঁতো দেন সাংসদদের। শুধু প্রশ্নকর্তা সাংসদই নন, মন্ত্রীদেরও সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখতে বলেন স্পিকার ওম বিড়লা।

দেশের প্রথম ৫০ জন ঋণখেলাপি কে কে, আজ রাহুল গাঁধীর এই প্রশ্নটি ছিল পাঁচ নম্বরে। কিন্তু সে প্রশ্নের সময় আসতে আসতেই কেটে গেল প্রায় ৫০ মিনিট। নিয়ম হল, সংসদে প্রশ্ন এলে সাংসদ তা উল্লেখ করেন, মন্ত্রী বলেন জবাব লিখিত দেওয়া আছে। তার পরে সেই প্রশ্নকর্তা দু’টি প্রশ্ন করার সুযোগ পান। রাহুল আজ প্রথম প্রশ্ন করলেন, তার উত্তর দিতে দিতেই দুপুর বারোটা বেজে গেল। ফলে দ্বিতীয় প্রশ্ন আর করার সুযোগ পেলেন না তিনি। উল্টে ইয়েস ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠাতা রানা কপূরকে ছবি বিক্রি করা নিয়ে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার বিরুদ্ধে অভিযোগও সংসদের রেকর্ডে নিয়ে এল সরকার।

প্রশ্ন করতে উঠে রাহুল বলেন, ‘‘কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে অর্থনীতি যাচ্ছে। ব্যাঙ্ক মুখ থুবড়ে পড়ছে। আরও পড়বে। এর কারণ বেকারত্ব, আর ব্যাঙ্ক থেকে চুরি করছেন অনেক লোক। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারতের ব্যাঙ্ক থেকে যাঁরা চুরি করছেন, ধরে ফেরত আনবেন। ৫০ জনের নাম চেয়েছি, অথচ জবাব আসেনি।’’ এটুকু বলার মধ্যে স্পিকার অবশ্য দু’বার বাধা দিয়ে সরাসরি প্রশ্ন করতে বলেন। রাহুল বলেন, ‘‘একটু ক্ষেত্র তো গোছাতে দিন।’’ স্পিকার তাতে বাধা দেন।

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বদলে রাহুলের উত্তর দিতে উঠলেন প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। আপত্তি তুললেন রাহুল। বসেছিলেন নির্মলা। তা সত্ত্বেও কেন তিনি বলবেন না? অনুরাগ শোনালেন ইউপিএ জমানার কথা। অভিযোগ তুললেন, সেই সময়ে অগ্রিম অর্থ দেওয়ার খেসারতই দিতে হচ্ছে ব্যাঙ্কগুলিকে। আর এখন সেটি সামলাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী। আর ৫০ নাম জানানোয় কোনও আপত্তি নেই সরকারের, সেটিও বললেন। জানালেন, একটি ওয়েবসাইটেই সেটা আছে। ২৫ লক্ষ টাকার বেশি যাঁরা ঋণখেলাপি করেছেন। অনুরাগ বললেন, রাজনীতি করছেন না বলেই প্রিয়ঙ্কার ছবি বিক্রির কথা, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে ইয়েস ব্যাঙ্ক কর্তার ছবির কথা বলছেন না। ‘বলব না’ বলেও অবশ্য বলেই দিলেন।

কিন্তু সংসদে করা প্রশ্নের উত্তর কেন ওয়েবসাইট থেকে দেখতে হবে? কেনই বা রাহুলকে দ্বিতীয় প্রশ্ন করার সুয়োগ দেওয়া হবে না? রাহুলের নেতৃত্বে কংগ্রেস সাংসদরা হাঙ্গামা করে বেরোলেন সংসদ থেকে। বাইরে বেরিয়ে বললেন, ‘‘আমি ৫০০ ঋণখেলাপির নাম জিজ্ঞাসা করেছি। এই ‘চোর’দের নাম সরকার লুকোচ্ছে কেন? কিসের ভয়ে? আমি ব্যথিত যে আমাকে দ্বিতীয় প্রশ্ন করতে দেওয়া হল না!’’ সংসদের বাইরে জবাব দিতে এলেন অনুরাগই। বললেন, ‘‘সংসদের ভিতরে ৫০ নাম, বেরিয়েই ৫০০ নাম হয়ে গেল? যাঁরা নিজেদের ‘নামদার’ ভাবেন, তাঁরা কতটা অবুঝ হলে এটি হয়!’’ বাইরে এসে পাঁচশো নাম অন্তত পাঁচ বার উচ্চারণ করেছেন রাহুল। তার পর সরকারের আক্রমণে অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বললেন, ‘‘এর আগেও এই প্রশ্ন করা হয়েছে সংসদে। কিন্তু একটি গুরুতর বিষয়ে রাহুলকে নিয়ে এত উপহাস কেন? কেন প্রতিমন্ত্রীকে দিয়ে উত্তর দিইয়ে বিষয়টি হালকা করা হল? সংসদেরও মানহানি, সাংসদের অধিকারও কেড়ে নেওয়া হল!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rahul Gandhi Nirmala Sitharaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE