বিজেপির ভিশন ডকুমেন্ট-কেই আজ প্রচারে পাল্টা-অস্ত্র করল কংগ্রেস। ইস্তাহারের নাম বদলে ভিশন ডকুমেন্ট তৈরি করেছে গেরুয়া বাহিনী। কাল তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয়। তাতে বহু বিষয় গুরুত্ব দিয়ে তুলে আনা হলেও সেখানে স্থান পায়নি উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্বের কথা।
এই ঘটনাকে অসমের বাঙালিদের সঙ্গে দ্বিচারিতা বলে অভিযোগ করলেন শিলচরের কংগ্রেস সাংসদ সুস্মিতা দেব। আজ পদযাত্রা, হল-সভা, সাংবাদিক সম্মেলন সব জায়গাতেই এ নিয়ে সরব ছিলেন তিনি। সুস্মিতার কথায়, শুধু উদ্বাস্তুদের কথা বাদ দিয়েছে তাই নয়, অসম চুক্তি অক্ষরে অক্ষরে পালিত হবে বলে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে। তবে কি অসমকে বাঙালিমুক্ত রাজ্য বানানোই মোদিবাহিনীর ভিশন?—প্রশ্ন সুস্মিতা দেবের।
বিজেপির ‘ভিশন ডকুমেন্ট’ কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন শিলচরের প্রাক্তন সাংসদ, কবীন্দ্র পুরকায়স্থ। এর পরেও কী করে এমনটা হল, বিস্মিত শিলচরের সাংসদ। এ ব্যাপারে কবীন্দ্রবাবুর যুক্তি, ‘‘ভিশন মানে আগামী দিনে কী কী করার লক্ষ্য আমাদের। যে কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে, তা ভিশনের মধ্যে পড়ে না। নাগরিকত্ব নিয়ে কেন্দ্র বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, বিল আনার ব্যাপারে কথাবার্তা চলছে। তাই তা এই ডকুমেন্টে স্থান পায়নি।’’ এর পরেও অবশ্য কবীন্দ্রবাবু পৃথকভাবে শরণার্থীদের নাগরিকত্বের প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে নোট পাঠিয়েছিলেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘‘ডকুমেন্টের খসড়ার সঙ্গে ওই নোটও পাঠাই। ফলে এই ইস্যুতে আমরা মোটেও উদাসীন নই।’’
কাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বরাক সফরে আসছেন। তার আগের সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের ডেকে সাংসদ সুস্মিতা দেব ভিশন ডকুমেন্ট ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে একগুচ্ছ প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন। লোকসভা নির্বাচনের আগে শিলচরে এসে নরেন্দ্র মোদী যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি আজ তা টেনে আনেন। বলেন, ‘‘ডিটেনশন ক্যাম্প গুঁড়িয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। তা হয়নি। বদলে এখন প্রতিদিন বন্দি বাড়ছে।’’ ডিটেনশন ক্যাম্পে গত সপ্তাহে ৭৫ বছর বয়সী দুলু শব্দকরের মৃত্যুর কথাও শোনান তিনি।
ইস্ট-ওয়েস্ট করিডরের কাজ ২১ মাসে ২১ ইঞ্চি এগিয়েছে কিনা, কেন বালাছড়া-হারাঙ্গাজাও ৩১ কিলোমিটার অংশের জটিলতা আজও কাটেনি, আয়ুষ প্রকল্পে শালচাপড়ায় ইউনানি কলেজ স্থাপনের প্রকল্পে কেন অনুমোদন মিলল না, সে সব প্রশ্নও তিনি তুলেছেন। সিমেন্ট ফ্যাক্টরি বাতিল করা, কাছাড় কাগজ কলের পুনরুজ্জীবন নিয়ে উদাসীনতা, শিলচর নেট্রিপ-এ স্থায়ী অধিকর্তা নিযুক্তি না দেওয়ার কারণও জানতে চান সুস্মিতা।
বাঙালি আবেগ উসকে সাংসদ স্মরণ করিয়ে দেন, ‘‘এ বার ১৯ মে তারিখেই ভোট গণনা। ১৯৬১ সালের এমন দিনেই বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় বরাকের ১১জন তরুণ-তরুণী প্রাণ দিয়েছিলেন।’’ সাংবাদিক সম্মেলনে জেলা কংগ্রেস সভাপতি কর্ণেন্দু ভট্টাচার্য, প্রদেশ কংগ্রেস মুখপাত্র দীপন দেওয়ানজিও উপস্থিত ছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy