Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
National News

আবু সালেমের মৃত্যুদণ্ড হল না কেন?

পর্তুগালের জন্যই ’৯৩-এর মুম্বই হামলার অন্যতম প্রধান চক্রী আবু সালেমকে ফাঁসির দড়ি গলায় পড়তে হল না। আবুর জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি ধার্য হল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

আবু সালেম।- ফাইল চিত্র।

আবু সালেম।- ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৭:১৮
Share: Save:

পর্তুগাল বাঁচিয়ে দিল আবু সালেমকে।

পর্তুগালের জন্যই ’৯৩-এর মুম্বই হামলার অন্যতম প্রধান চক্রী আবু সালেমকে ফাঁসির দড়ি গলায় পড়তে হল না। আবুর জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি ধার্য হল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

২৪ বছর আগে মুম্বইয়ে হামলার ঘটনা ঘটিয়ে পর্তুগালে গিয়ে গা ঢাকা দিয়েছিল আবু সালেম। তার সঙ্গী হয়েছিল মণিকা বেদি। বিচারের জন্য দু’জনকেই তড়িঘড়ি ভারতে ফিরিয়ে আনার দরকার হয়ে পড়েছিল সিবিআইয়ের। কিন্তু পর্তুগালের আইনের জন্যই দু’জনকে ভারতে ফিরিয়ে আনতে বিস্তর ঘাম ঝরাতে হয়েছিল সিবিআইকে।

আরও পড়ুন- অস্বস্তি এড়াতে জঙ্গিদের রুখতেই হবে: বিরল স্বীকারোক্তি পাকিস্তানের

আরও পড়ুন- কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পাই না: নোটবন্দির পক্ষে জোর সওয়াল মোদীর

কী ভাবে শেষমেশ আজ থেকে ১২ বছর আগে আবু ও মণিকাকে ভারতে ফেরানো হয়েছিল, সংবাদ মাধ্যমকে তা সবিস্তার জানিয়েছেন সিবিআইয়ের অবসরপ্রাপ্ত ডিরেক্টর জেনারেল অফ ইনভেস্টিগেশন ওপি চাটওয়াল। ২০০৫ সালে চাটওয়ালই পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে গিয়ে আবু ও মণিকাকে ফিরিয়ে এনেছিলেন মুম্বইয়ে।

চাটওয়ালের কথায়, ‘‘আবুর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির যে সব ধারায় (৩০২, ১২৩ এবং টাডা আইনের ৩২ নম্বর ধারা) অভিযোগ ছিল, তাতে ভারতীয় আইনে ওর সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ার কথা মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু পর্তুগালে মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ। শুধু তাই নয়, যাবজ্জীবনের মেয়াদও ভারতের মতো নয় পর্তুগালে। পর্তুগালে যাবজ্জীবনের মেয়াদ সর্বাধিক ২৫ বছর। তার পর আসামিকে মুক্তি দিতেই হবে পর্তুগালে। তাই পর্তুগাল থেকে আবুকে ভারতে ফিরিয়ে আনতে বিস্তর ঘাম ঝরাতে হয়েছিল আমাদের।’’

ওই সময় পর্তুগালে যাওয়া সিবিআইয়ের ৮ সদস্যের তদন্তকারী দলের অন্যতম চাটওয়াল জানিয়েছেন, ওই সময় ভারত থেকে পালিয়ে পাকিস্তানের ভুয়ো পাসপোর্ট করিয়েছিল আবু আর তার সঙ্গী মণিকা। সেই ভুয়ো পাসপোর্টে আবুর নাম ছিল ‘আরসালান মহসিন আলি’ আর মণিকার নাম ছিল ‘সানা মালিক কামাল’। দু’জনকেই ভারতে ফিরিয়ে আনার জন্য ’৬২ সালের ভারতীয় প্রত্যর্পণ আইনে রদবদল ঘটাতে হয়েছিল। সেই আইনে ৩৪ (গ) অনুচ্ছেদটি জুড়তে হয়েছিল। সেই আইন বদলে পর্তুগাল সরকারকে আশ্বস্ত করতে হয়েছিল ভারতে ফিরিয়ে নিয়ে গেলেও দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর আবুকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যাবে না। তাই ওই ঘটনার পলাতক প্রধান অভিযুক্ত টাইগার মেননের ভাই ইয়াকুব মেননকে ২০১৫ সালে ফাঁসি দেওয়া আর অন্য অভিযুক্তদের যাবজ্জীবন দেওয়া হলেও আবুর বিষয়টি বহু দিন ঝুলে ছিল।

চাটওয়ালের কথায়, ‘‘আবুর জন্য আমরা সেই সময় গোটা বিশ্ব চষে বেরিয়েছিলাম। শেষমেশ ২০০২ সালে আমরা জানতে পারি আবু রয়েছে পর্তুগালে। কিন্তু মুম্বই হামলার পর আবু তার পরিচয় ও নাগরিকত্ব বদলে ফেলেছিল। তাই আমাদের আবুর ফিঙ্গারপ্রিন্টের প্রমাণ দাখিল করতে হয়েছিল পর্তুগাল সরকারের কাছে। তার পর ‘রেড কর্নার নোটিস’ জারি হয়েছিল আবুর বিরুদ্ধে।’’

মণিকার বিচার চলছে এখনও হায়দরাবাদে সিবিআইয়ের আদালতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE