গাজিয়াবাদে নিজের বাড়ির সামনে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি কুমার বিশ্বাস। ছবি: পিটিআই।
ফাটল ক্রমশ চওড়া হচ্ছে আম আদমি পার্টিতে (আপ)। দলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য কুমার বিশ্বাসের সঙ্গে অরবিন্দ কেজরীবাল-মণীশ সিসৌদিয়াদের দূরত্ব ক্রমশ বাড়ছে। মঙ্গলবার রাজধানীর রাজনীতিতে দিনভর শিরোনামে থেকেছে আপের অভ্যন্তরীণ কোন্দল। কুমার বিশ্বাসকে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে বারণ করেছেন দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া। সে নির্দেশ নস্যাৎ করে কুমারের ঘোষণা, যখনই প্রয়োজন মনে করবেন, মুখ খুলবেন।
আপের অন্দরমহলে যে এখন টালমাটাল অবস্থা, গত কয়েক দিন ধরেই তা ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছিল। কেজরীবাল ঘনিষ্ঠ বিধায়ক আমানতুল্লা খান সম্প্রতি কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। ওখলার আপ বিধায়ক আমানতুল্লার দাবি, কুমার বিশ্বাস বিজেপি-আরএসএস-এর এজেন্ট। বিজেপি-র সঙ্গে কুমার বিশ্বাসের দহরম মহরম বেড়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন আমানতুল্লা। তার পরই বিস্ফোরণ ঘটে গিয়েছে আপের অন্দরমহলে। কুমার বিশ্বাস বলেছেন, ‘‘আমানতুল্লা যদি অরবিন্দ বা মণীশের বিরুদ্ধে এমন কোনও মন্তব্য করতেন, তা হলে ১০ মিনিটের মধ্যে তাঁকে দল থেকে বার করে দেওয়া হত।’’ এই মন্তব্য আসলে আমানতুল্লার নয়, এর পিছনে আরও বড় মাথা রয়েছেন— এমন মন্তব্যও করেছেন কুমার বিশ্বাস।
দলের সর্বোচ্চ কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছেন মণীশ সিসৌদিয়া। ছবি: পিটিআই।
অরবিন্দ কেজরীবাল এখনও কুমার বিশ্বাসকে নিয়ে মুখ খোলেননি। তবে মণীশ সিসৌদিয়া মঙ্গলবার কুমারকে আক্রমণ করেছেন। দলীয় বিষয় সম্পর্কে প্রকাশ্যে মন্তব্য করে কুমার বিশ্বাস কার উপকার করছেন? প্রশ্ন তুলেছেন মণীশ। আমানতুল্লা খান সম্পর্কে কিছু বলার থাকলে কুমার তা দলের রাজনীতি বিষয়ক কমিটির বৈঠকে বলতে পারতেন, মত সিসৌদিয়ার। বৈঠকে যোগ না দিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলে কুমার ঠিক করেননি বলে দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রীর মত।
আম আদমি পার্টিতে কুমার বিশ্বাস ক্ষমতার সমান্তরাল কেন্দ্র হয়ে উঠেছেন বলে দিল্লিতে এখন জোর জল্পনা। দলের অনেক বিধায়কই এখন অরবিন্দ কেজরীবালের নেতৃত্ব নিয়ে অসন্তুষ্ট বলে গুঞ্জন। কুমার বিশ্বাসকে ঘিরেই এই কেজরীবাল বিরোধী বিধায়করা একত্রিত হচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে। কুমারের ঘনিষ্ঠ বৃত্তের দাবি, দলে কুমারের প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়া মেনে নিতে পারছেন না কেজরীবাল। মুখে তিনি কুমারকে নিজের ‘ভাই’ বলে সম্বোধন করলেও, আমানতুল্লাকে দিয়ে কুমারের বিরুদ্ধে মুখ খুলিয়েছেন কেজরীবালই। দাবি রাজধানীর রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। তবে আমানতুল্লা মুখ খোলায় হিতে বিপরীত হয়েছে। বেশ কয়েক জন বিধায়ক প্রকাশ্যেই এ বার কুমারের হয়ে সওয়াল করতে শুরু করেছেন। ফলে দিল্লির পুর নির্বাচনে সদ্য ধরাশায়ী হওয়া আপের অবস্থা আরও সঙ্কটজনক হয়ে উঠছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy