Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
BJP

বাংলায় সঙ্কটের সুযোগ নিতে মরিয়া বিজেপি

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মঙ্গলবারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করে আমপানের মোকাবিলায় সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২০ ০৪:৪৭
Share: Save:

পশ্চিমবঙ্গে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি নেতৃত্ব কোনও সুযোগই ছাড়তে নারাজ।

প্রথমে করোনা-আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ। তার পরে পরিযায়ী শ্রমিকদের সবাইকে একসঙ্গে রাজ্যে ফেরানো নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বিরোধ। এর পর তেলেনিপাড়া, টিকিয়াপাড়া, হরিশ্চন্দ্রপুরের গন্ডগোল। আমপান সামালানো নিয়ে গাফিলতি হলেও তৃণমূলের দিকে আঙুল তোলার সুযোগ রয়েছে বলে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মনে করছেন।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মঙ্গলবারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করে আমপানের মোকাবিলায় সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। তা হলে আমপান মোকাবিলায় গাফিলতি হলে শুধু রাজ্যের দিকে আঙুল উঠবে কেন? বিজেপির দিল্লির নেতাদের যুক্তি, ‘‘কেন্দ্র দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী বা আর্থিক সাহায্য দিলেও ঘূর্ণিঝড় সামলানো ও মানুষকে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার প্রাথমিক দায়িত্ব রাজ্যের উপরেই বর্তায়। ফলে সেখানে গাফিলতি হলে বা ত্রাণ বিলিতে দুর্নীতি হলে বিজেপির রাজ্য নেতারা মমতার সরকারের দিকে আঙুল তুলবেনই।’’ তৃণমূল সূত্রের খবর, মমতা বিজেপির এই রাজনীতি আঁচ করতে পারছেন বলেই গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে অমিত শাহের দিকে করোনা মোকাবিলার নামে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছিলেন। মমতা নিজেও এখন স্বীকার করছেন, করোনা, পরিযায়ী শ্রমিক এবং আমপান— তাঁর সামনে এখন তিন কঠিন চ্যালেঞ্জ।

বিজেপি শিবির মনে করছে, ট্রেনে করে শ্রমিকরা বাংলায় ফেরার পরে করোনা-সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার আমপানের সময়েও ত্রাণশিবিরে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখা যাবে না। ফলে সেখান থেকেও সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। দু’য়ে মিলে করোনা নিয়ে মমতার সরকারের দিকে ফের আঙুল তোলার সুযোগ আসবে বলে মনে করছেন তাঁরা। সিএএ-এনআরসি আন্দোলনে যে ধাক্কা গেরুয়া শিবির খেয়েছিল, করোনা এবং আমপানের হাত ধরেই তা ফিরে পাওয়া যাবে বলে তাঁদের ধারণা। মঙ্গলবার রাতে কলকাতার পুলিশ ট্রেনিং স্কুলের বিক্ষোভ নিয়েও তাই আজ অমিত মালব্যর মতো কেন্দ্রীয় নেতা টুইট করতে ছাড়েননি।

বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব স্বীকার করছেন, আপাতত এটাই তাঁদের কৌশল। তাঁদের এক নেতার কথায়, “লোকসভা ভোটের পরে সিএএ-এনআরসি নিয়ে তৃণমূল হারানো জমি অনেকটা ফিরে পেয়েছিল। কিন্তু চলতি সঙ্কটে রাজ্য সরকার করোনা-আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ধামাচাপা দিতে চাইছে বলে মানুষের মধ্যে বার্তা দেওয়া গিয়েছে। মমতা বাংলার শ্রমিকদের ফেরাতে চাইছেন না বলেও বার্তা গিয়েছে।’’ ইতিমধ্যে মঙ্গলবারই অমিত শাহকে চিঠি লিখে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ তেলেনিপাড়া, টিকিয়াপাড়া, হরিশ্চন্দ্রপুরের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি তুলেছেন। তৃণমূলের অভিযোগ, এই প্রত্যেকটি ঘটনা থেকেই বিজেপি মেরুকরণের ফায়দা তুলতে চাইছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE