এই মহিলাকেই ভাইয়ের কবল থেকে উদ্ধার করা হয়। ছবি সৌজন্য: দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়ালের টুইটার অ্যাকাউন্ট।
খোলা ছাদ, চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আবর্জনা। কটূ গন্ধে ম-ম করছে। আর সেখানেই নিজের মল-মূত্রের মধ্যে জবুথবু হয়ে পড়ে রয়েছেন অস্থিচর্মসার এক বৃদ্ধা। কয়েকশো মাছি ভনভন করছে তাঁর চারপাশে। উদ্ধার করতে গিয়ে শিউরে ওঠেন মহিলা কমিশনের সদস্যরা।
বয়স মেরেকেটে ৫০ হবে। কিন্তু দীর্ঘ দিন অনাহার, অনাদর আর অবহেলায় তাঁর বয়সটা একলাফে যেন ৯০ হয়ে গিয়েছে। দিল্লির রোহিণী এলাকার একটি বাড়ি থেকে মহিলা কমিশনের সদস্যরা ওই মহিলাকে উদ্ধার করেন।
দাদার হাত থেকে দিদিকে উদ্ধার করার সাহায্য চেয়ে কমিশনের কাছে ফোনটা করেছিলেন আর এক ভাই। রোহিণীতে নিজের বাড়িতে দিদিকে আটকে রেখে অত্যাচার চালাচ্ছেন দাদা, এই অভিযোগ জানিয়ে কমিশনের ফোন করেন তিনি। সেই ফোন পেয়েই ওই বাড়িতে হানা দেন মহিলা কমিশনের সদস্যরা। অভিযোগ, বাড়ির মালিক কিছুতেই গেট খুলতে চাইছিলেন না। বাধ্য হয়েই তখন পুলিশকে ডাকতে হয় বলেই জানিয়েছেন কমিশনের এক সদস্য।পুলিশ এসে লাগোয়া বাড়ির ছাদ থেকে ওই ব্যক্তির বাড়িতে ঢোকে। যেখানে মহিলা পড়ে ছিলেন, সেখানকার অবস্থা দেখে পুলিশও আঁতকে ওঠে। পুলিশ জানিয়েছে, মহিলাকে যখন উদ্ধার করা হয় তিনি কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না। কাউকে চিনতেও পারছিলেন না। আপাতত তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছে।
আরও পড়ুন: বিজেপিই করতে হবে, জোর করে না সঙ্ঘ: মোহন ভাগবত
অভিযোগ, গত দু’বছর ধরে মহিলাকে নিজের বাড়িতে আটকে রেখেছেন তাঁর ভাই। দিনের পর দিন অত্যাচার চলত তাঁর উপর। মারধর তো ছিলই, সঙ্গে খেতে না দেওয়া এবং অপরিচ্ছন্ন জায়গায় ফেলে রাখা— গত দু’বছর ধরে এটাই ছিল রুটিন। চার দিনে এক দিন খেতে দেওয়া হত মহিলাকে। তা-ও আবার একটা রুটি। দিন দিন অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে বাড়তে এমন জায়গায় পৌঁছেছিল যে আর কিছু দিন এমন চললে পরিণতি হয়ত আরও ভয়ানক হতে পারত, এমনটাই মনে করছে মহিলা কমিশন।
আরও পড়ুন: মায়াবতীকে চাপ দিতে কংগ্রেসের অস্ত্র চন্দ্রশেখর
মহিলার ভাইয়ের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। তবে তাঁকে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়নি বলেই পুলিশ জানিয়েছে। দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়াল বলেন, “ঘটনাটা শুনে চমকে উঠেছি। এমনটাও কেউ করতে পারে! এতটা অমানবিক! মহিলার বয়স ৫০। কিন্তু শারীরিক পরিস্থিতি তাঁর বয়স এক ধাক্কায় আরও ৪০ বছর বাড়িয়ে দিয়েছে যেন।” তিনি রাজ্যবাসীর কাছে এই ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে ধরে আর্জি জানান, যদি কেউ এমন ঘটনা দেখতে বা শুনতে পান তা হলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ বা কমিশনকে জানান। তাতে বহু মহিলা ও নারীকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy