বিজ্ঞানের গবেষণায় মহিলাদের অংশগ্রহণ কম বলে লখনউয়ের বিজ্ঞানমেলায় আক্ষেপ করেছেন খোদ রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। সেই মেলাতেই সমাজের মানসিকতা এবং কেন্দ্রীয় সরকারের প্রচারের বিরুদ্ধে সরব হলেন মহিলা বিজ্ঞানীদের একাংশ।
শনিবার লখনউয়ের ‘ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স ফেস্টিভ্যাল’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে রাষ্ট্রপতির আক্ষেপের পরের দিন রবিবার মহিলা বিজ্ঞানী সম্মেলনে আসা লখনউয়ের বাসিন্দা হাসিমা আবিদি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারই তো বিজ্ঞাপন দিয়ে বলছে, ‘বেটি বাঁচাও। নইলে রোটি পাবে না।’ সরকারই তো ঠিক করে দিচ্ছে, মেয়েদের কাজ রুটি তৈরি করা! সমাজের মতো সরকারের এই প্রচারও মেয়েদের আরও বেশি করে রান্নাঘরের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’’ তিনি জানান, বিভিন্ন রোগ নিয়ে গবেষণা করছেন তিনি। কিন্তু এ দেশে গবেষণার সুযোগ না-পেয়ে তাঁকে সেই কাজটা করতে হচ্ছে লন্ডনে।
রাষ্ট্রপতি দাবি করেছিলেন, অনেক বিজ্ঞানী দেশে ফিরছেন। সেখানে হাসিমার বিপরীত উদাহরণ যে খুবই অস্বস্তিকর, তা মানছে রাজনৈতিক মহল। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্ৰী হর্ষ বর্ধনকে প্ৰশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘গবেষণাগারগুলিতে গিয়ে দেখুন, চেহারা পাল্টে গিয়েছে। সেখানে এখন অধিকাংশই মহিলা।’’
হর্ষ বর্ধন যা-ই বলুন, মহিলা বিজ্ঞানীদের অভিজ্ঞতা অন্য রকম। অনেক মহিলা গবেষক এর জন্য সামাজিক পরিস্থিতিকে দায়ী করছেন। কানপুর থেকে আসা তেজস্বিনী শুক্ল জানান, স্কুল-কলেজ বা সমাজ, কোনও জায়গা থেকেই তাঁরা উৎসাহ পান না। সমাজের সঙ্গে লড়াই করে বিজ্ঞানে মনোনিবেশ করা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। বিজ্ঞানমেলার পাশাপাশি স্কুল ও কলেজের সর্বস্তরে সচেতনতা দরকার। সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন বেলেঘাটার মোনালিসা। বিহারে বিয়ে হয়েছে তাঁর। তিনি জানান, এই বিজ্ঞানমেলায় তাঁর আসার ব্যাপারে শ্বশুরবাড়ির আপত্তি ছিল। বাঁকুড়া থেকে আসা গবেষক মনীষা মণ্ডল বললেন, ‘‘গবেষণা পরের ব্যাপার। আমরা আমাদের নিরাপত্তা নিয়েই সব সময় চিন্তায় থাকি। রাত ৯টার পরে বেরোতে ভয় করে। এই পরিস্থিতিতে কিছু সৃষ্টিতে মন দেব কী ভাবে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy