শ্বাসকষ্ট-সহ বেশ কিছু সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে এসেছিলেন দিল্লির ২৮ বছরের এক তরুণী। পরীক্ষায় ধরা পড়ল, তিনি ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত। চতুর্থ পর্যায়ের ক্যানসার খুব তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়েছে ফুসফুসের অলিতে গলিতে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ওই তরুণী ধূমপান করেন না। এত কম বয়সে ফুসফুসে ক্যানসারের কারণ হিসেবে তাই দিল্লির বায়ুদূষণকেই দায়ী করছেন তাঁরা।
দিল্লির গঙ্গারাম হাসপাতালে তরুণী এখন চিকিৎসাধীন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অরবিন্দ কুমার বলেছেন, ‘‘আমার মনে হয়, রাজধানীর অন্তহীন দূষণই ক্যানসারের কারণ।’’ আক্রান্ত তরুণী নিজে বা তাঁর বাড়িতে কেউ ধূমপান করেন না। তবে চিকিৎসকের মতে, সিগারেটের ধোঁয়ায় যে বিষ থাকে, দিল্লির দূষিত বায়ুতে তার বহু উপাদানই উপস্থিত। ফলে যাঁরা ধূমপান করেন না, তাঁদের ক্ষতির পরিমাণও কোনও অংশে কম নয়। তিনি জানিয়েছেন, দিল্লিতে এই ধরনের ঘটনা বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। প্রতি মাসে গড়ে দুই থেকে তিন জন অ-ধূমপায়ী ক্যানসার রোগী তাঁর কাছে আসেন। তবে এত কম বয়সের অ-ধূমপায়ী রোগী এই প্রথম দেখছেন। ওই তরুণী যে এলাকায় থাকেন, সেখানে দূষণের মাত্রা লাগামছাড়া। তবে চিকিৎসকের বক্তব্য, হাওয়ার গতি সর্বত্র। তাই শহরের যে কোনও প্রান্তেই ছড়িয়ে পড়ছে ওই দূষণ।
বেশ কয়েক বছর ধরেই দিল্লির হাওয়ায় দূষিত পদার্থের পরিমাণ মাত্রা ছাড়িয়েছে। বিশেষ করে শীতকালে বায়ুদূষণের মাত্রা এমন পর্যায়ে পৌঁছয়, যে শিশু থেকে বৃদ্ধ, শ্বাসকষ্টে ভোগেন অনেকেই। ২০১৭
সালে চিকিৎসকদের একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, দূষণের কারণে প্রতি বছর ভারতে গড়ে ১২ লক্ষ লোক মারা যান।
দিল্লির পরিবেশ গবেষণা সংস্থা ‘সেন্টার ফর সায়েন্স এন্ড এনভায়রনমেন্ট’- এর এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর (গবেষণা) অনুমিতা রায়চৌধুরী বলেছেন, ‘‘ডাক্তারদের সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, অ-ধূমপায়ীদের মধ্যেও ফুসফুসের ক্যানসার বাড়ছে। তার পিছনে বড় কারণ গাড়ির ধোঁয়া। দিল্লির মতো শহরে ডিজেলচালিত গাড়ির ধোঁয়া বেশি। ডিজেলের ধোঁয়াকে ক্যানসারের অন্যতম বড় কারণ হিসেবে ধরা হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy