অজয় মাকেন ও রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা।— ফাইল চিত্র।
দিন পাঁচেকের মধ্যেই রাহুল গাঁধী ছুটি কাটিয়ে ফিরে আসবেন বলে গত কালই জানিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা কমল নাথ। কিন্তু মজার ঘটনা হল, রাহুল ছুটিতে থাকলেও কংগ্রেসে অনবরত রদবদলের ঘটনা অব্যাহতই রয়েছে! এবং যার নেপথ্যে গাঁধী পরিবারের তরুণ প্রজন্মের দু’জনই রয়েছেন বলে এখন মনে করা হচ্ছে। এক জন রাহুল। অন্য জন তাঁর বোন প্রিয়ঙ্কা। তিনি এখনই সাংগঠনিক দায়িত্ব না নিলেও মেঘনাদের মতো আড়াল থেকে ভাইকে তাঁর টিম সাজাতে সাহায্য করছেন।
ক’দিন আগেই কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র অজয় মাকেনকে দিল্লির প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে নিয়োগ করা হয়। আজ আবার তাঁকে প্রধান মুখপাত্রের পদ থেকে সরিয়ে সেই পদে হরিয়ানার নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালাকে বসিয়েছেন রাহুল। বর্তমানে কংগ্রেস মুখপাত্রদের এক জন হলেন রণদীপ। কংগ্রেসের তরফে আজ জানানো হয়েছে, রণদীপকে আপাতত মিডিয়া বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হল।
গোটা ঘটনায় দু’টি বিষয় পরিষ্কার। এক, এই পদে আর কোনও প্রবীণ নেতাকে বসাতে চাইছেন না রাহুল। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, “ইউপিএ জমানার শেষ পাঁচ বছর কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্রের পদে থেকে দলের কার্যত সর্বনাশ করেছেন বর্ষীয়ান নেতা জনার্দন দ্বিবেদী। বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধীরা যখন আক্রমণ শানিয়ে গেছেন, তখন দ্বিবেদী কার্যত মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন!” জনার্দনকে সরিয়ে লোকসভা ভোটের আগে অজয় মাকেনকে সেই দায়িত্ব দেন রাহুল। মাকেন তুলনায় অনেক ক্ষিপ্র ও সক্রিয় ছিলেন। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাঁর যুক্তিও ভোঁতা বলে প্রশ্ন তুলছিলেন দলেরই একটা অংশ। আর দুই, দাদা-র টিম সাজাতে বোনের মতও প্রাধান্য পাচ্ছে। মাকেনের পাশাপাশি লোকসভা ভোটের আগে রণদীপকে কংগ্রেসের মিডিয়া টিমে আনা হয়েছিল। নম্র ও বিনয়ী হরিয়ানার এই বিধায়ককে আদতে দিল্লিতে তুলে আনেন প্রিয়ঙ্কা। লোকসভা ভোটের সময় প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে রণদীপ ১২, তুঘলক লেনে রাহুলের বাড়িতে বসে কংগ্রেসের কন্ট্রোল রুম সামলাতেন। হরিয়ানার প্রাক্তন কৃষিমন্ত্রীর ছেলে ছাড়াও রণদীপের আরও রাজনৈতিক পরিচয় রয়েছে। যুব কংগ্রেসের সভাপতি, হরিয়ানা প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতিও ছিলেন পেশায় এই আইনজীবী।
তবে কংগ্রেস সূত্র বলছে, মিডিয়া বিভাগের প্রধানের পদ পাকাপাকি ভাবে পাওয়ার জন্য এখনও চেষ্টা চালাচ্ছেন দলের বেশ কিছু নবীন ও প্রবীণ নেতা। রণদীপকে মিডিয়া বিভাগের প্রধানের পদটি আপাতত দেওয়া হলেও ওই পদের দিকে নজর রয়েছে প্রাক্তন দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম রমেশ এবং মণীশ তিওয়ারির। তা ছাড়া এ ব্যাপারে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আনন্দ শর্মার নাম নিয়েও জল্পনা রয়েছে। সম্ভবত এপ্রিল মাসে কংগ্রেসের মহা অধিবেশনের আগে সাংগঠনিক রদবদলের সময়ই মিডিয়া প্রধানের পদে পাকাপাকি ভাবে কাউকে নিয়োগ করা হবে। তবে দলের একটি সূত্র বলছে, শেষ পর্যন্ত এই পদে পাকাপাকি ভাবে থেকে যেতে পারেন প্রিয়ঙ্কার বেছে নেওয়া নেতাটিই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy