শান্তনু সেনগুপ্ত
কোভিডের জীবাণু ধরতে এ বার নয়া ‘জালের’ সন্ধান দিলেন এক দল ভারতীয় বিজ্ঞানী। দেশের প্রথম সারির একটি গবেষণাপত্রে প্রকাশিতও হয়েছে তাঁদের গবেষণা। সিএসআইআর-এর অধীনস্থ দিল্লির ইনস্টিটিউট অব জিনোমিক্স অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটিভ বায়োলজি (আইজিআইবি)-র বিজ্ঞানী শান্তনু সেনগুপ্তের নেতৃত্বে ওই গবেষণা দেখাচ্ছে, আড়াই মিনিটের মধ্যে নাকের রস বিশ্লেষণ করে কোভিড সংক্রমণ চিহ্নিত করা সম্ভব এবং তার সাফল্যের হার আরটি-পিসিআর যন্ত্রের তুলনায় বেশি। শান্তনুবাবু বলেন, ‘‘বিমানবন্দরের মতো জায়গায় এই যন্ত্র খুব কার্যকরী হতে পারে। কারণ সেখানে দ্রুত পরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে।’’
এই প্রক্রিয়াকে বলা হচ্ছে মাস স্পেকট্রোস্কোপি। কী ভাবে এই পরীক্ষা করা হচ্ছে তারও বিশদ ব্যাখ্যা দিয়েছেন শান্তনুবাবু। তিনি জানান, নাকের রসকে সরাসরি ‘ডিটারজেন্ট’-এ দেওয়া হচ্ছে। তার ফলে ভাইরাস মরে যাবে। যা পরীক্ষকদের ক্ষেত্রেও যথেষ্ট সুরক্ষাজনক। এর পরে রাসায়নিক ব্যবহার ও সেন্ট্রিফিউজ যন্ত্রের মাধ্যমে প্রোটিনকে আলাদা করে সেটিকে উৎসেচকের মাধ্যমে পেপটাইডে পরিণত করা হয়। এর পর নির্দিষ্ট পদ্ধতির মাধ্যমে মাস স্পেকট্রোমিটারের সাহায্যে সংক্রমণ রয়েছে কিনা, চিহ্নিত করা সম্ভব। এই সংক্রমণ চিহ্নিতকরণে আড়াই মিনিটের কম সময় লাগবে বলে তিনি জানান। এই গবেষণায় যুক্ত ছিলেন দিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির শিক্ষক অর্জুন রায় এবং শান্তনুবাবুর সহকারী, আইজিআইবি-র বিজ্ঞানী দেবাশিস দাশ।
শান্তনুবাবু জানান, ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল থেকে কিছু নমুনা পরীক্ষা করে দেখেছেন যে গোড়ার দিকে উপসর্গযুক্ত কিছু নাগরিকের নমুনা আরটি-পিসিআরে প্রথম দফায় নেগেটিভ এসেছিল। পরে তাঁদের পজ়িটিভ আসে। কিন্তু তাঁদের পরীক্ষায় প্রথম দফাতেই সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। শুধু তাই নয়, ভাইরাসের ৫৪ হাজার ‘স্ট্রেন’ ডাউনলোড করে তাঁরা পরীক্ষা করেছেন। তাঁর দাবি, ভাইরাসের মিউটেশন নেই এবং মিউটেশন হলেও তা ধরা সম্ভব।
আরও পড়ুন: মরচে পড়ছে চাঁদে, এই প্রথম জানাল চন্দ্রযান-১
কলকাতার বাসিন্দা শান্তনুবাবুর ছোটবেলা কেটেছে উত্তর ২৪ পরগনার ইছাপুরে। সেখানেই কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে দ্বাদশ শ্রেণি শেষ করে ভর্তি হন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকে রসায়নে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাশ করে কলকাতার ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল বায়োলজি থেকে পিএইচডি করেন। দিল্লিতে পোস্ট-ডক্টরাল করার পরে বিদেশ পাড়ি এবং সেখান থেকে ফিরে আইজিআইবি-তে যোগদান।
আরও পড়ুন: খোঁজ মিলল বিশালাকৃতি প্রাচীনতম কৃষ্ণগহ্বরের
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy