Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Science News

ব্রহ্মাণ্ডের বলগুলিকে বেঁধে রাখার ‘মন্ত্র’ই পেল মিলনার, জাকারবার্গের স্পেশাল ব্রেকথ্রু প্রাইজ

আজ থেকে প্রায় ১৪০০ কোটি বছর আগে বিগ ব্যাং বা মহা-বিস্ফোরণের পরেই তৈরি হওয়া ওই চারটি বল বা ফোর্সকে ধরে রাখার জন্যও ছিল বিশেষ এক ধরনের অত্যন্ত শক্তিশালী মহাকর্ষ বল বা সুপার গ্রাভিটেশনাল ফোর্স। ৪৩ বছর আগে দেওয়া সেই গাণিতিক তত্ত্বটি এ বার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল।

ব্রেকথ্রু পুরস্কারের ট্রফি। - ফাইল ছবি।

ব্রেকথ্রু পুরস্কারের ট্রফি। - ফাইল ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৯ ১৮:৩৭
Share: Save:

উৎস থেকে বেরনোর পর নদী যেমন তার গতিপথে ভেঙে যায়, ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন শাখা নদীতে, ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির পর কোনও একটা সময়ে ঠিক সেই ভাবেই আলাদা হয়ে গিয়েছিল মূল চারটি বল (ফোর্স)।

আজ থেকে প্রায় ১৪০০ কোটি বছর আগে বিগ ব্যাং বা মহা-বিস্ফোরণের পরেই তৈরি হওয়া ওই চারটি বল বা ফোর্সকে ধরে রাখার জন্যও ছিল বিশেষ এক ধরনের অত্যন্ত শক্তিশালী মহাকর্ষ বল বা সুপার গ্রাভিটেশনাল ফোর্স। ৪৩ বছর আগে দেওয়া সেই গাণিতিক তত্ত্বটি এ বার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল। ওই অবদানের জন্য এ বছর মৌলিক পদার্থবিজ্ঞানে স্পেশাল ব্রেকথ্রু প্রাইজ পেলেন তিন বিজ্ঞানী। সের্গিও ফেরারা, ড্যান ফ্রিডম্যান ও পিটার ভন নিউভেনহুইঝেন। তাঁরা এই তত্ত্বটি দিয়েছিলেন ১৯৭৬ সালে।

৩০ লক্ষ মার্কিন ডলার মূল্যের ওই পুরস্কারটি ভাগাভাগি করে তিন জনকে দেওয়া হবে। স্পেশাল ব্রেকথ্রু প্রাইজের প্রবর্তন করেন ধনকুবের ইউরি মিলনার। পরে এই পুরস্কারের আর্থিক পৃষ্ঠপোষক হল আরও কয়েক জন ধনকুবের। যাঁদের অন্যতম- মার্ক জাকারবার্গ, সের্গেই ব্রিন, ও অ্যান উজিকি। পদার্থবিজ্ঞান ছাড়াও এই পুরস্কার দেওয়া হয় গণিত ও জীববিজ্ঞানে।

আরও পড়ুন- ২০ অগস্ট পর্যন্ত কী হয় কী হয় উদ্বেগে ইসরো! চরম উত্তেজনা কন্ট্রোল রুমে!

আরও পড়ুন- চাঁদে মাটির নীচে হবে বাঙ্কার, জল তুলে তৈরি হবে শ্বাসের বাতাস!​

তিন পুরস্কার জয়ী। ড্যান ফ্রিডম্যান (বাঁ দিকে), সের্গিও ফেরারা (মাঝখানে) ও পিটার ভন নিউভেনহুইঝেন

বিগ ব্যাংয়ের পর মোট চার ধরনের বলের সৃষ্টি হয়েছিল ব্রহ্মাণ্ডে। দুর্বল বল বা উইক ফোর্স, শক্তিশালী বল স্ট্রং ফোর্স, ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক ফোর্স বা তড়িৎ-চুম্বকীয় বল এবং গ্র্যাভিটেশনাল ফোর্স বা মহাকর্ষ বল। এদের মধ্যে তিনটি বলকে একত্রিত করা সম্ভব হয়েছিল গত শতাব্দীর সাতের দশকে। সেই বলগুলি হল, দুর্বল বল, শক্তিশালী বল আর তড়িৎ-চুম্বকীয় বল। কিন্তু তার কিছু পরেই এই ধারণা তৈরি হয় বিজ্ঞানীমহলে যে, ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির পর কোনও একটা সময়ে বাকি তিনটি বলের সঙ্গে একত্রিত ছিল মহাকর্ষ বলও। কোনও নদী যেমন উৎস থেকে বেরনোর পর পথে বিভিন্ন শাখানদীতে ভেঙে যায়, ছড়িয়ে পড়ে, ঠিক তেমনই ওই চারটি বলও পরে একে অন্যের থেকে আলাদা হয়ে যায়। কিন্তু নদীর উৎসমুখের মতো সেই চারটি বলও যখন ব্রহ্মাণ্ড-সৃষ্টির কিছু পরে একত্রিত ছিল, তখন তাদের এক সঙ্গে ধরে রেখেছিল অত্যন্ত শক্তিশালী একটি মহাকর্ষ বল। তারই নাম- সুপার গ্র্যাভিটি। যার জন্ম হয়েছিল বিশেষ এক ধরনের একটি কণার জন্য। গ্রাভিটন।

প্রযুক্তির অভাবে এই গাণিতিক তত্ত্বটি প্রমাণ করা যায়নি এখনও পর্যন্ত। কিন্তু তা সত্বেও পদার্থবিজ্ঞানের আগামী দিনের গবেষণায় এই গাণিতিক তত্ত্বের ব্যবহার যে প্রায় অবশ্যম্ভাবী, সম্ভবত সেই বার্তা দিতেই এ বার এই বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হল তত্ত্বটিকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE