Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

তাজ দেখেননি হকিং, র‌্যাম্প-বাধা এখনও!

পরবর্তী কালে আদালতে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এএসআই জানায়, তাদের অধীনে থাকা দর্শনীয় স্থানে প্রতিবন্ধী মানুষদের যাতায়াতের উপযোগী ব্যবস্থা গড়া হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৮ ০৩:৫৪
Share: Save:

আইন থাকলেও তা নিয়ে মাথা ঘামায় কে? তাই দূর থেকেই তাজমহল দেখে ফিরে গিয়েছিলেন স্টিফেন হকিং।

২০০১ সালে হকিংয়ের ভারত সফরের সময় তাজমহলে র‌্যাম্প ছিল না। তবে তাঁর জন্যই প্রথম কাঠের র‌্যাম্প তৈরি হয় কুতুব মিনার, যন্তরমন্তরে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা যাঁদের রয়েছে, দর্শনীয় স্থানে তাঁদের সমানাধিকার রক্ষার প্রথম ধাপ।

‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর প্রোমোশন অব এমপ্লয়মেন্ট ফর ডিসএবলড পিপল’-এর প্রাক্তন সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার রামা চারি বুধবার ফোনে বলেন, ‘‘ভারত সফরে হুমায়ুনের সমাধি, কুতুব মিনার, লালকেল্লা দেখতে চেয়েছিলেন হকিং। এরপরেই পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের (এএসআই) সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে এএসআই জানায়, তিন-চার জন রক্ষী হকিংয়ের হুইলচেয়ার তুলে নিয়ে যেতে পারেন। রাজি হননি হকিং। যদিও এক রাতের মধ্যে কাঠের র‌্যাম্প তৈরি করা হয় কুতুব মিনার, যন্তরমন্তরে। হকিং ফিরে যেতেই অবশ্য তা খুলে ফেলা হয়েছিল।’’ পরবর্তী কালে আদালতে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এএসআই জানায়, তাদের অধীনে থাকা দর্শনীয় স্থানে প্রতিবন্ধী মানুষদের যাতায়াতের উপযোগী ব্যবস্থা গড়া হবে।

কিন্তু বাস্তব? কতটা সহজে সেই নাগরিকেরা সব জায়গায় পৌঁছতে পারেন? অন্তত বঙ্গে তাঁদের অভিজ্ঞতা বলে, দর্শনীয় স্থান তো দূর অস্ত্। পৌঁছনো যায় না বিধানসভা কিংবা নবান্নের মতো সরকারি ভবনেও। দৈনন্দিন জীবনে ব্যাঙ্ক বা মেট্রো স্টেশনেও র‌্যাম্প না থাকায় সমস্যা হয়।

আরও পড়ুন: স্টিফেন হকিং এক বিস্ময় প্রতিভার নাম

অথচ ২০১৫ সালে কেন্দ্রীয় সরকার ‘অ্যাক্সেসিব্‌ল ইন্ডিয়া’ প্রকল্প চালু করে। সরকারি ভবনে প্রতিবন্ধীদের যাতাযাতের বাধা কাটাতে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরির কথাও ঘোষণা হয়। কলকাতা-সহ ২৫টি শহর সেই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু ‘পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনী’-র যুগ্ম সম্পাদক অনির্বাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তিন বছর পরেও বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখছি না। তাজমহলে এখনও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ভিতরে ঢোকার কোনও সহজ ব্যবস্থা নেই। পাশাপাশি বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে জুতো খোলা নিয়ে রয়েছে কড়া নির্দেশ। অনেক সময় প্রতিবন্ধীদের পায়ে বিশেষ জুতো থাকে। যা সহজে খোলা যায় না।’’

আরও পড়ুন : আইনস্টাইনের জন্মদিনেই চলে গেলেন হকিং

ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের অধিকর্তা (মনুমেন্ট) টি জে আলোন অবশ্য জানান, প্রতিবন্ধীদের তাজমহলে ঢোকা সহজ করতে ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। হুইলচেয়ারে করেও যাতে দর্শনীয় জায়গায় ঢোকা যায়, তার ব্যবস্থা বেশ কয়েক বছর ধরে করা হচ্ছে বলে জানান সর্বেক্ষণের প্রাক্তন মহানির্দেশক গৌতম সেনগুপ্তও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE