সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনায় অ্যাকাউন্ট খোলার যোগ্যতা—
১। শুধুমাত্র সেই সমস্ত অভিভাবকই সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনার আওতায় আসতে পারবেন যাঁদের কন্যা সন্তান রয়েছে
২। বিনিয়োগকারী অভিভাবককে ভারতের নাগরিক হতে হবে
৩। প্রকল্পের আওতায় অ্যাকাউন্ট খোলার সময়ে কন্যা সন্তানের বয়স ১০ বছরের কম হওয়া বাধ্যতামূলক
৪। কোনও কন্যা সন্তানের পিতা-মাতা সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা প্রকল্পের অধীনে সর্বোচ্চ দু’টি অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। যদি প্রথম বা দ্বিতীয় বার যমজ কন্যা সন্তানের জন্ম হয়, তা হলে এই প্রকল্পের আওতায় তিনটি অ্যাকাউন্ট খোলা যেতে পারে।
সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনায় অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতি—
১। দেশের যে কোনও প্রান্তের পোস্ট অফিস বা বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক মারফত সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনার আওতায় অ্যাকাউন্ট খোলা যেতে পারে
২। ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিস মারফত সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা ফর্ম পূরণ করে প্রথমে জমা দিতে হয়
৩। কন্যা সন্তানের জন্মের শংসাপত্র জমা দেওয়া আবশ্যিক
৪। বিনিয়োগকারীর (পিতামাতা বা আইনি অভিভাবক) সচিত্র পরিচয় পত্র যেমন প্যান কার্ড, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ইত্যাদি
৫। বিনিয়োগকারীর ঠিকানার প্রমাণপত্র
প্রতিটি পরিবারের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দু’টি কন্যা সন্তানের জন্য সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনার অ্যাকাউন্ট খোলা যায। এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করার পরিমাণ কোনও অর্থবর্ষে সর্বনিম্ন ২৫০ টাকা, সর্বাধিক দেড় লক্ষ টাকা।
অন্যান্য স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পের তুলনায় সুদের হারও বেশ খানিকটা বেশি এই প্রকল্পে। যা এই প্রকল্পে বিনিয়োগের অন্যতম একটি কারণ। ৭.৬ শতাংশ হারে সুদ পাওয়া যেতে পারে এই প্রকল্প থেকে। অ্যাকাউন্ট খোলার পরে মোট ১৫ বছর টাকা দিতে হয় সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনায়। ২১ বছর পরে গিয়ে সম্পূর্ণ মেয়াদ পূরণ হয়। ১৫ বছর পরে পরবর্তী ছ’বছর টাকা না দিলেও সুদ পেয়ে থাকেন বিনিয়োগকারী। মেয়াদ পূরণের পরে সুদ সমেত সেই টাকা বিনিয়োগকারীর অ্যাকাউন্টে চলে আসে। বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কন্যা সন্তানের বয়স এক বছর হলে সব থেকে বেশি লাভ পাওয়া যায়। কারণ সুদের হার সেই সময় থেকেই গণনা শুরু হয়ে যায়।
এই প্রকল্পে কড়ছাড়ের সুবিধাও রয়েছে। আয়কর আইনের ৮০সি ধারায় সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনার আওতায় করছাড়ের সুযোগও মেলে। এই ছাড়ের পরিমাণ দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত। পাশাপাশি সুদ বাবদ যে অর্থ পাওয়া যায় তার উপরেও কর দিতে হয় না।
মনে রাখবেন, সন্তানের ভবিষ্যতও কিন্তু আপনার ভবিষ্যত। তার চলার পথ যাতে প্রথম থেকেই সহজ-সরল হয়ে থাকে, তার দিকে নজর দিতে প্রথম থেকেই। এই ধরনের প্রকল্পে বিনিয়োগ শুধুমাত্র কর ছাড় বা ভাল রিটার্নের পথই সুনিশ্চিত করে না। সেই সঙ্গে কন্যা সন্তানের ভবিষ্যতও সুনিশ্চিত করে।