Dance was spreading like epidemic leads to deaths dgtl
dancing plague
ছোঁয়াচে রোগের মতো ছড়িয়ে পড়েছিল নাচ, আর নাচতে নাচতেই মৃত্যু একের পর এক
নাচের মড়ক দেখা গিয়েছিল এই শহরে
সংবাদ সংস্থা
প্যারিসশেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৮ ১৭:১২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
উদ্দাম নাচ শুরু হঠাৎ করেই। আর তার পর বাকিরাও যোগ দিলেন সেই নাচে। তার পর আস্তে আস্তে ঢলে পড়লেন মৃত্যুর কোলে। এ যেন নাচের মড়ক। তবে কোনও গল্প নয়। ইতিহাসেও ঘটেছিল এমনটাই।
০২১৫
১৫১৮ সাল। ৬০০ বছর আগে বর্তমান ফ্রান্সের স্ট্রসবার্গে (যদিও সেই সময় এটি একটি স্বাধীন শহর ছিল রোম সাম্রাজ্যের) এই ‘ডান্স-প্লেগ’-এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল অসংখ্য মানুষের।
০৩১৫
ইতিহাসের পাতার এই ঘটনা নিয়েই রয়েছে নানা রকম তত্ত্ব। ইতিহাসবিদরাও দিয়েছেন, ভিন্ন ভিন্ন মত।
০৪১৫
জুলাই মাসের গরমে রাস্তায় একদিন ত্রোফিয়া বা ত্রোউফিয়া নামের একজন মহিলা নাচতে শুরু করলেন। সুস্থ মানুষ নাচতে শুরু করার কিছুক্ষণ পরেই থেমে যাবার কথা। কিন্তু এই মহিলার ক্ষেত্রে তা হয়নি।তিনি নাচতে শুরু করলেন। সারা দিন পেরিয়ে গিয়েছিল তাঁর নাচ আর থামে না।
০৫১৫
সপ্তাহখানেক পরে দেখা যায়, তাঁর সঙ্গে নাচছেন আরও অসংখ্য মানুষ। কোনও ভাবেই বন্ধ হচ্ছে না তাদের সেই দুর্দমনীয় নাচ।
০৬১৫
অজ্ঞান হয়ে গিয়েছেন কেউ কেউ। বাকিরা ফের নাচতে শুরু করেছেন।শহরের শাসকগোষ্ঠীর ধারণা হল, এ ভাবে অবিরত বাধাহীন ভাবে নাচতে দিলে নিশ্চয়ই ক্লান্ত হয়ে নাচের ঝোঁক থেমে যাবে। বন্ধ হবে এ উন্মাদ নৃত্য। তাই তাঁরা শহরের টাউনহলে সেসব মানুষের নাচার ব্যবস্থা করে দিলেন।
০৭১৫
শহরের নামকরা গায়ক, বাদ্যযন্ত্রী, পেশাগত নাচের শিক্ষকদেরও আনা হল নাচের তাল দেখিয়ে দেওয়ার জন্য।
০৮১৫
শাসকদের নাচ বন্ধ করার এ পরিকল্পনার ফল হলো হিতে বিপরীত। এতে কমল না কারও নাচের ঝোঁক। দু-একদিনের মধ্যেই এই নাচিয়েদের মধ্য যারা দুর্বলচিত্তের মানুষ তাঁরা হার্ট ফেলিওর, সেরেব্রাল স্ট্রোক বা অবসাদের কারণে মারা যেতে থাকেন।
০৯১৫
কথিত আছে কয়েকশ জন মারা যান, যদিও সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, মারা গিয়েছিলেন মাত্র ১২ জন।
১০১৫
শোনা যায়, বহু দিন ধরে অন্ধকার ও বদ্ধ ঘরে জল আর পাঁউরুটি খাইয়ে রাখার পর তার পর ছেড়ে দেওয়া হয় কিছু ব্যক্তিকে। আর তার পরই এই নাচের ঝোঁক দেখা যায়।
১১১৫
কেউ বলেছেন বিষাক্ত টারান্টুলা মাকড়শার কামড়ের ফলেই এই জাতীয় অদ্ভুত আচরণ করেছিলেন ওই সময়ের একাধিক মানুষ। তবে এই তত্ত্বও খারিজ করে দেওয়া হয়।
১২১৫
১৫২৬ সালে প্রথম বার প্যারাসেলসাস নামে এক জন অ্যালকেমিস্ট বলেন, ত্রোফিয়া খুব সম্ভবত স্বামীর বাধা না মেনেই নাচ করতে শুরু করেছিলেন। পরে অন্যরাও যোগ দেন তাতে। মূলত, স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক যাঁদের ভাল ছিল না। তাঁরাই এই নাচে যোগ দিয়েছিলেন, এমনটাই উল্লেখ করেছিলেন তিনি।
১৩১৫
এটিই ইউরোপে ছড়িয়ে পড়া প্রথম এবং একমাত্র নাচের মহামারী নয়। ১৫১৮ সালের পূর্বে ইউরোপের বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ১০ বার এ মহামারীর দেখা পাওয়া গিয়েছিল।১৩৭৪ সালের দিকে এ মহামারী দেখা গিয়েছিল বর্তমান বেলজিয়াম অঞ্চলে, উত্তর-পূর্ব ফ্রান্সে এবং লুক্সেমবার্গে।
১৪১৫
জার্মানিতে এ ধরনের মহামারী দেখা গিয়েছিল, একে বলা হচ্ছিল সেন্ট জন্স ডান্স। আবার অন্য এক দল গবেষক বলেন, এটি আসলে সিডেনহ্যাম কোরিয়া নামে এক ধরনের রোগ। মূলত শিশুদের হয়। তবে কোনও ক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্কদেরেও।
১৫১৫
সম্ভবত কোন রোগাক্রান্ত শাকসবজি বা কোন মাদক দ্রব্য এই নাচিয়েরা খেয়েছিলেন। এর প্রতিক্রিয়ায়ই তাদের এই উন্মাদ নাচের নেশা উঠেছিল।