অম্বানীর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ৭৫০ কোটি টাকায় এই মার্কিন দূতাবাস কিনে নেন পুনাওয়ালারা

প্রথমে ঘোড়ার রক্তের সিরাম জোগান দিতেন বিভিন্ন টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থাকে। সেখান থেকেই প্রতিষেধকের ব্যবসায় পা রাখার ভাবনা। ১৯৬৭ সালে প্রথম তৈরি করলেন টিটেনাসের টিকা। তার পরে একে একে প্রতিষেধক যক্ষ্মা, হেপাটাইটিস, পোলিয়ো-সহ বিভিন্ন অসুখের। বাকিটা ইতিহাস।

সাইরাসের কেনা এই বাড়ি এই মুহূর্তে ভারতের সবচেয়ে বেশি দামে কেনা বাড়ি হিসাবে গণ্য করা হয়। ২ একর জমির উপর তৈরি ৫০ হাজার বর্গফুটের এই বিশালাকার প্রাসাদটি মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি এলাকায় ভুলাভাই দেশাই রোডে অবস্থিত।

এক সময়ে মার্কিন দূতাবাস থাকার কারণে এই প্রাসাদের বিষয়ে বিশেষ কিছু জানাতে নারাজ সাইরাসের বড় ছেলে আদার। তিনি জানান, তাঁরা এই বাড়িটিকে নিজেদের বাসস্থান হিসাবেই ব্যবহার করবেন। এই বাড়িটি গ্রেড-৩ হেরিটেজের তকমা পেয়েছে বহু বছর আগেই।

১৯৩৩ সালে এই রাজপ্রাসাদটি তৈরি করেন ব্রিটিশ স্থপতি ক্লড ব্যাটলি। প্রাসাদটি ওয়াঙ্কানারের তৎকালীন রাজা মহারাণা রাজ শ্রী অমর সিংহজির আমলে তৈরি হয় এবং দেশভাগের সময় তিনি ভারত সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে ওয়াঙ্কানারকে আলাদা প্রদেশ হিসাবে দাবি ছেড়ে গুজরাতের অন্তর্ভূক্ত হন। তাঁর মৃত্যুর পর রাজা হন তাঁর ছেলে প্রতাপ সিংহজি ঝালা ।

প্রতাপ সিংহজি ঝালা দেনা ও করের দায়ে ডুবে বাধ্য হয়ে মার্কিন সরকারের কাছে ৯৯৯ বছরের জন্য এই প্রাসাদকে লিজ দেন। বিগত কয়েক দশক ধরে এই জমির ক্রমবর্ধমান দাম দেখে রাজ পরিবারের আফশোস করা ছাড়া কোনও উপায় নেই। প্রতাপ সিংহের ছেলে দিগ্বিজয় সিংহ ঝালা বর্তমানে ওয়াঙ্কানারের রণজিৎ বিলাস প্যালেসে থাকেন।

রাজপ্রাসাদ ও তার থেকে পরিবর্তিত হয়ে এককালীন মার্কিন দূতাবাসটি সাইরাস পুনাওয়ালা কিনে নিলেও তার দখল নেওয়া সহজ ছিল না। কারণ ২০১৫ সালে পুনাওয়ালারা বাড়িটি কেনার পরই প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফ থেকে দাবি করা হয় যে এই জমিটি তাদের, তাই সাইরাস যেন এই জমিটি ছেড়ে দেন। সাইরাসও ছাড়াও পাত্র ছিলেন না।

আইনি জটের পাশাপাশি ওই বাড়ি হাতে পেতে প্রবল পরাক্রমী মুকেশ অম্বানীদের সঙ্গেও নাকি পাঞ্জা কষতে হয়েছিল তাঁদের।

এই বাড়িটি ছাড়াও পুণেয় তাঁদের ফার্ম হাউস রয়েছে। সেটিও আক্ষরিক অর্থে প্রাসাদ। কমলা রঙের ইটালিয়ান মার্বেলের মেঝে। দেওয়ালে ভ্যান গঘ থেকে শুরু করে বিভিন্ন কিংবদন্তি শিল্পীর দুর্মূল্য ছবি। বাড়িতে লাগানো অধিকাংশ তাকলাগানো ঝাড়বাতি রাজা-মহারাজার কাছে কেনা।

বড় ছেলে আদারের গাড়িশাল রোলস রয়েস, ফেরারি, মার্সিডিজ়, বেন্টলি, ল্যাম্বরঘিনি, হামারের মতো মহার্ঘ ব্র্যান্ডের আধুনিকতম মডেলে ঠাসা। সঙ্গে ‘ভিন্টেজ’ গাড়ির চোখ কপালে তোলা সম্ভার। আর ঘোড়াশালে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে বহু রেসের ট্রফি জেতা অগুনতি ঘোড়া।