Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Police Encounters

১০০টির বেশি ‘এনকাউন্টার’ করা প্রদীপ শর্মার ত্রাসে কাঁপত মুম্বই আন্ডারওয়ার্ল্ড

ছাপোষা মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা প্রদীপ শর্মা এনকাউন্টার স্পেশালিস্ট হিসেবেই পরিচিত। কর্মজীবনে ১১৩ জন কুখ্যাত গ্যাংস্টার ও দুষ্কৃতীর মৃত্যু হয়েছে তাঁর হাতে।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২০ ১৬:২৩
Share: Save:
০১ ১৪
এক দিকে আকাশছোঁয়া বিল্ডিং, ঝাঁ চকচকে স্টুডিয়ো পাড়া, দু’চোখে স্বপ্ন নিয়ে হাজার হাজার মানুষের ভিড়, আর অন্য দিকে মাদক পাচার, খুনোখুনি, অন্ধকার জগতের হাতছানি। আরব সাগরের তীরে গড়ে ওঠা মায়ানগরী বরাবরই এই বৈপরীত্যের সাক্ষী।

এক দিকে আকাশছোঁয়া বিল্ডিং, ঝাঁ চকচকে স্টুডিয়ো পাড়া, দু’চোখে স্বপ্ন নিয়ে হাজার হাজার মানুষের ভিড়, আর অন্য দিকে মাদক পাচার, খুনোখুনি, অন্ধকার জগতের হাতছানি। আরব সাগরের তীরে গড়ে ওঠা মায়ানগরী বরাবরই এই বৈপরীত্যের সাক্ষী।

০২ ১৪
আলো-আঁধারির এই দুনিয়াই একসময় কঠোর হাতে শাসন করেছেন প্রদীপ শর্মা। মহারাষ্ট্র পুলিশে কর্মরত ছিলেন তিনি। কর্মজীবনে ১১৩ জন কুখ্যাত গ্যাংস্টার ও দুষ্কৃতীর মৃত্যু হয়েছে তাঁর হাতে। ছাপোষা মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা প্রদীপ শর্মা এনকাউন্টার স্পেশালিস্ট হিসেবেই পরিচিত।

আলো-আঁধারির এই দুনিয়াই একসময় কঠোর হাতে শাসন করেছেন প্রদীপ শর্মা। মহারাষ্ট্র পুলিশে কর্মরত ছিলেন তিনি। কর্মজীবনে ১১৩ জন কুখ্যাত গ্যাংস্টার ও দুষ্কৃতীর মৃত্যু হয়েছে তাঁর হাতে। ছাপোষা মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা প্রদীপ শর্মা এনকাউন্টার স্পেশালিস্ট হিসেবেই পরিচিত।

০৩ ১৪
১৯৬২ সালে উত্তরপ্রদেশের আগরায় জন্ম প্রদীপ শর্মার। বাবা ছিলেন ইংরেজির অধ্যাপক। মহারাষ্ট্রের ধুলে-র একটি কলেজে কর্মরত ছিলেন তিনি। সেই সূত্রে ছোটবেলায় মহারাষ্ট্রে চলে আসেন প্রদীপ। সেখানেই পড়াশোনা ও বেড়ে ওঠা তাঁর। তবে বিজ্ঞান শাখায় স্নাতকোত্তর করলেও, বাবার দেখানো পথে না গিয়ে পুলিশের চাকরিতে যোগ দেন তিনি।

১৯৬২ সালে উত্তরপ্রদেশের আগরায় জন্ম প্রদীপ শর্মার। বাবা ছিলেন ইংরেজির অধ্যাপক। মহারাষ্ট্রের ধুলে-র একটি কলেজে কর্মরত ছিলেন তিনি। সেই সূত্রে ছোটবেলায় মহারাষ্ট্রে চলে আসেন প্রদীপ। সেখানেই পড়াশোনা ও বেড়ে ওঠা তাঁর। তবে বিজ্ঞান শাখায় স্নাতকোত্তর করলেও, বাবার দেখানো পথে না গিয়ে পুলিশের চাকরিতে যোগ দেন তিনি।

০৪ ১৪
১৯৮৩ সালে মুম্বইয়ের মাহিম থানায় সাব ইনস্পেক্টর পদে নিযুক্ত হন প্রদীপ শর্মা। সেখানে মাত্র দু’বছর কাটানোর পরই অপরাধ দমন শাখায় পদোন্নতি হয় তাঁর। ১৯৯১ সালে জুহুর স্পেশাল ব্রাঞ্চে পাঠানো হয় তাঁকে।

১৯৮৩ সালে মুম্বইয়ের মাহিম থানায় সাব ইনস্পেক্টর পদে নিযুক্ত হন প্রদীপ শর্মা। সেখানে মাত্র দু’বছর কাটানোর পরই অপরাধ দমন শাখায় পদোন্নতি হয় তাঁর। ১৯৯১ সালে জুহুর স্পেশাল ব্রাঞ্চে পাঠানো হয় তাঁকে।

০৫ ১৪
খাতায় কলমে ১৯৯৩ সালেই প্রথম আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে পরিচিতি ঘটে প্রদীপের। সে বছর ৬ মে হিটম্যান সুভাষ মাকড়ওয়ালার এনকাউন্টার করেন তিনি। শোনা যায় একে-৫৬ থেকে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করছিল সুভাষ। ৯ এমএম কার্বাইন নিয়ে তার মোকাবিলা করেন প্রদীপ।

খাতায় কলমে ১৯৯৩ সালেই প্রথম আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে পরিচিতি ঘটে প্রদীপের। সে বছর ৬ মে হিটম্যান সুভাষ মাকড়ওয়ালার এনকাউন্টার করেন তিনি। শোনা যায় একে-৫৬ থেকে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করছিল সুভাষ। ৯ এমএম কার্বাইন নিয়ে তার মোকাবিলা করেন প্রদীপ।

০৬ ১৪
১৯৯৫ সালে অ্যাসিস্ট্যান্ট ইনস্পেক্টর পদে নিযুক্ত হওয়ার পর বান্দ্রা পুলিশের অপরাধ দমন শাখার মাদক-বিরোধী সেলের দায়িত্ব হাতে পান প্রদীপ শর্মা। সেই সময় আর এক দোর্দণ্ডপ্রতাপ পুলিশ অফিসার দয়া নায়েকের সংস্পর্শে আসেন তিনি। তাঁরা দু’জনে মিলে ভাঙাচোরা জিনিসপত্রের বড় ব্যবসায়ী মহম্মদ নবিকে অপহরণ করে মোটা টাকা আদায় করেন বলে অভিযোগ ওঠে। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

১৯৯৫ সালে অ্যাসিস্ট্যান্ট ইনস্পেক্টর পদে নিযুক্ত হওয়ার পর বান্দ্রা পুলিশের অপরাধ দমন শাখার মাদক-বিরোধী সেলের দায়িত্ব হাতে পান প্রদীপ শর্মা। সেই সময় আর এক দোর্দণ্ডপ্রতাপ পুলিশ অফিসার দয়া নায়েকের সংস্পর্শে আসেন তিনি। তাঁরা দু’জনে মিলে ভাঙাচোরা জিনিসপত্রের বড় ব্যবসায়ী মহম্মদ নবিকে অপহরণ করে মোটা টাকা আদায় করেন বলে অভিযোগ ওঠে। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

০৭ ১৪
এর পর একে একে বিনোদ মাটকর, পারভেজ সিদ্দিকি, রফিক ডাব্বাওয়ালার এনকাউন্টার করেন প্রদীপ শর্মা। সেই সুবাদে তাঁর নামের পাশে এনকাউন্টার স্পেশালিস্ট তকমা জুড়ে যায়। পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার তিন সন্দেহভাজন জঙ্গিরও এনকাউন্টার করেন তিনি। তোলাবাজির দায়ে দাউদ ইব্রাহিমের ভাই ইকবাল কাসকরকে গ্রেফতারও করেন প্রদীপ।

এর পর একে একে বিনোদ মাটকর, পারভেজ সিদ্দিকি, রফিক ডাব্বাওয়ালার এনকাউন্টার করেন প্রদীপ শর্মা। সেই সুবাদে তাঁর নামের পাশে এনকাউন্টার স্পেশালিস্ট তকমা জুড়ে যায়। পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার তিন সন্দেহভাজন জঙ্গিরও এনকাউন্টার করেন তিনি। তোলাবাজির দায়ে দাউদ ইব্রাহিমের ভাই ইকবাল কাসকরকে গ্রেফতারও করেন প্রদীপ।

০৮ ১৪
সেই সময় থেকেই একের পর এক বিতর্কে নাম জড়াতে থাকে প্রদীপ শর্মার। ২০০২ সালের ঘাটকোপার বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্তে নেমে দুবাইয়ে কর্মরত ২৭ বছরের খোয়াজা ইউনুস নামের এক ইঞ্জিনিয়ারকে গ্রেফতার করে মুম্বই পুলিশ। তাদের হেফাজতে থাকাকালীন ২০০৩ সালের জানুয়ারি মাসে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় তাঁর। পুলিশি অত্যাচারেই খোয়াজার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ ওঠে। তার জেরে প্রদীপ শর্মা-সহ আরও পাঁচ পুলিশকর্মীকে বদলি করা হয়। ২০০৭ সালে যদিও সেই অভিযোগ খারিজ করে সিআইডি।

সেই সময় থেকেই একের পর এক বিতর্কে নাম জড়াতে থাকে প্রদীপ শর্মার। ২০০২ সালের ঘাটকোপার বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্তে নেমে দুবাইয়ে কর্মরত ২৭ বছরের খোয়াজা ইউনুস নামের এক ইঞ্জিনিয়ারকে গ্রেফতার করে মুম্বই পুলিশ। তাদের হেফাজতে থাকাকালীন ২০০৩ সালের জানুয়ারি মাসে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় তাঁর। পুলিশি অত্যাচারেই খোয়াজার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ ওঠে। তার জেরে প্রদীপ শর্মা-সহ আরও পাঁচ পুলিশকর্মীকে বদলি করা হয়। ২০০৭ সালে যদিও সেই অভিযোগ খারিজ করে সিআইডি।

০৯ ১৪
খোয়াজা ইউনিসের মৃত্যু নিয়ে তদন্ত চলাকালীন অমরাবতীতে বদলি করা হয় প্রদীপ শর্মাকে। সেই সময় সাসপেন্ড থাকাকালীন ছোটা রাজনের সহযোগী রামনারায়ণ গুপ্ত ওরফে লখন ভাইয়াকে তুলে এনে একই দিনে এনকাউন্টার করার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে।

খোয়াজা ইউনিসের মৃত্যু নিয়ে তদন্ত চলাকালীন অমরাবতীতে বদলি করা হয় প্রদীপ শর্মাকে। সেই সময় সাসপেন্ড থাকাকালীন ছোটা রাজনের সহযোগী রামনারায়ণ গুপ্ত ওরফে লখন ভাইয়াকে তুলে এনে একই দিনে এনকাউন্টার করার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে।

১০ ১৪
২০০৮ সালে ধারাবীতে পোস্টিং হয় প্রদীপ শর্মার। কিন্তু দাউদ ইব্রাহিমের দলের সঙ্গে যোগসাজশ থাকার অভিযোগে তিন মাসের মধ্যে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়। ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে বিষয়টি নিয়ে মহারাষ্ট্র অ্যাডমিনিস্ট্রিটিভ ট্রাইবুনালে (ম্যাট) আবেদন জানান তিনি। ম্যাটের নির্দেশ অনুযায়ী তাঁকে পুনর্বহাল করা হয়।

২০০৮ সালে ধারাবীতে পোস্টিং হয় প্রদীপ শর্মার। কিন্তু দাউদ ইব্রাহিমের দলের সঙ্গে যোগসাজশ থাকার অভিযোগে তিন মাসের মধ্যে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়। ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে বিষয়টি নিয়ে মহারাষ্ট্র অ্যাডমিনিস্ট্রিটিভ ট্রাইবুনালে (ম্যাট) আবেদন জানান তিনি। ম্যাটের নির্দেশ অনুযায়ী তাঁকে পুনর্বহাল করা হয়।

১১ ১৪
লখন ভাইয়া ভুয়ো এনকাউন্টার কাণ্ডে ২০১০ সালে প্রদীপ শর্মাকে গ্রেফতার করে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। বলা হয়, এক প্রমোটারের নির্দেশে লখনকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে লখনকে গুলি করে মারা হয়। সেই মামলায় মোট ২২ জন পুলিশকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে থেকে শুধুমাত্র প্রদীপ শর্মাই ২০১৩-র জুলাই মাসে মুক্তি পেয়ে যান।

লখন ভাইয়া ভুয়ো এনকাউন্টার কাণ্ডে ২০১০ সালে প্রদীপ শর্মাকে গ্রেফতার করে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। বলা হয়, এক প্রমোটারের নির্দেশে লখনকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে লখনকে গুলি করে মারা হয়। সেই মামলায় মোট ২২ জন পুলিশকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে থেকে শুধুমাত্র প্রদীপ শর্মাই ২০১৩-র জুলাই মাসে মুক্তি পেয়ে যান।

১২ ১৪
এ ছাড়াও প্রদীপ শর্মার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। তাই কাজে ফিরতে চাইলেও মহারাষ্ট্রের তৎকালীন ডিজিপি সতীশ মাথুর তাতে আপত্তি তোলেন। কিন্তু রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের অনুমতিতে ২০১৭ সালে ফের মহারাষ্ট্র পুলিশে যোগ দেন প্রদীপ শর্মা।

এ ছাড়াও প্রদীপ শর্মার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। তাই কাজে ফিরতে চাইলেও মহারাষ্ট্রের তৎকালীন ডিজিপি সতীশ মাথুর তাতে আপত্তি তোলেন। কিন্তু রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের অনুমতিতে ২০১৭ সালে ফের মহারাষ্ট্র পুলিশে যোগ দেন প্রদীপ শর্মা।

১৩ ১৪
পুলিশের চাকরিতে ৩৫ বছর কাটিয়ে ২০১৯-এর জুলাই মাসে পদত্যাগ করেন প্রদীপ শর্মা। গত বছর ১৩ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে শিবসেনায় যোগ দেন তিনি। সেনার হয়ে মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনেও দাঁড়ান। কিন্তু বহুজন বিকাশ আঘাডির ক্ষিতিজ ঠাকুরের কাছে পরাজিত হন। নির্বাচনে লখন ভাইয়ার ভাই রামপ্রসাদ গুপ্ত তাঁর বিরুদ্ধে প্রচারে নামেন।

পুলিশের চাকরিতে ৩৫ বছর কাটিয়ে ২০১৯-এর জুলাই মাসে পদত্যাগ করেন প্রদীপ শর্মা। গত বছর ১৩ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে শিবসেনায় যোগ দেন তিনি। সেনার হয়ে মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনেও দাঁড়ান। কিন্তু বহুজন বিকাশ আঘাডির ক্ষিতিজ ঠাকুরের কাছে পরাজিত হন। নির্বাচনে লখন ভাইয়ার ভাই রামপ্রসাদ গুপ্ত তাঁর বিরুদ্ধে প্রচারে নামেন।

১৪ ১৪
২০০৪ সালে প্রদীপ শর্মাকে নিয়েই ‘অব তক ছপ্পন’ ছবিটি তৈরি করেন পরিচালক রামগোপাল ভার্মা। ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন নানা পটেকর।

২০০৪ সালে প্রদীপ শর্মাকে নিয়েই ‘অব তক ছপ্পন’ ছবিটি তৈরি করেন পরিচালক রামগোপাল ভার্মা। ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন নানা পটেকর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE