Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
National news

ছিলেন সাধারণ কৃষক, জৈব চাষে বিপুল আয়ের সঙ্গে পদ্মশ্রী সম্মানও পেলেন হুকুমচাঁদ

কৃষকের ছেলে যে কৃষকই হবেন বড় হয়ে, তা যেন জন্মের সময় থেকেই তাঁর কপালে লেখা হয়ে গিয়েছিল।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৫:০৯
Share: Save:
০১ ১৭
রাজস্থানের আলওয়ার জেলার মানপুরা গ্রামের এক কৃষক পরিবারের ছেলে। কৃষকের ছেলে যে কৃষকই হবেন বড় যে, তা যেন জন্মের সময় থেকেই তাঁর কপালে লেখা হয়ে গিয়েছিল।

রাজস্থানের আলওয়ার জেলার মানপুরা গ্রামের এক কৃষক পরিবারের ছেলে। কৃষকের ছেলে যে কৃষকই হবেন বড় যে, তা যেন জন্মের সময় থেকেই তাঁর কপালে লেখা হয়ে গিয়েছিল।

০২ ১৭
সারাদিন তপ্ত রোদে পরিশ্রম করে ফসল ফলানো আর তার পর সেটা বিক্রি করা। কিন্তু সারা বছর হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পরও ফসলের মূল্য সে ভাবে না পেয়ে হতাশ থাকতেন দেশের আর পাঁচজন কৃষকের মতোই।

সারাদিন তপ্ত রোদে পরিশ্রম করে ফসল ফলানো আর তার পর সেটা বিক্রি করা। কিন্তু সারা বছর হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পরও ফসলের মূল্য সে ভাবে না পেয়ে হতাশ থাকতেন দেশের আর পাঁচজন কৃষকের মতোই।

০৩ ১৭
মানপুরার কৃষকদের এটাই যেন নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। চাষাবাদের মাধ্যমে পরিবারের একটা আলাদা পরিচিতি এবং আর্থিক অবস্থার যে ব্যাপক উন্নতি ঘটানো যায়, তা কোনও দিনই কেউ ভাবতে পারেননি। কিন্তু ভেবেছিলেন একজন, তিনি হুকুমচাঁদ পাতিদার।

মানপুরার কৃষকদের এটাই যেন নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। চাষাবাদের মাধ্যমে পরিবারের একটা আলাদা পরিচিতি এবং আর্থিক অবস্থার যে ব্যাপক উন্নতি ঘটানো যায়, তা কোনও দিনই কেউ ভাবতে পারেননি। কিন্তু ভেবেছিলেন একজন, তিনি হুকুমচাঁদ পাতিদার।

০৪ ১৭
রাজস্থানের মানপুরা গ্রামের পাতিদার পরিবারে জন্ম হুকুমচাঁদ পাতিদারের। ছোট থেকে মাঠে অভিভাবকদের সঙ্গে চাষাবাদেই কেটে গিয়েছিল তাঁর অনেকটা সময়।

রাজস্থানের মানপুরা গ্রামের পাতিদার পরিবারে জন্ম হুকুমচাঁদ পাতিদারের। ছোট থেকে মাঠে অভিভাবকদের সঙ্গে চাষাবাদেই কেটে গিয়েছিল তাঁর অনেকটা সময়।

০৫ ১৭
পূর্বপুরুষদের শিখিয়ে দেওয়া সেই একই রীতি মেনে কৃষিকাজ এগিয়ে নিয়ে চলাটাই ছিল দস্তুর। কিন্তু ওই কৃষকই চাষাবাদের অন্য দিশা দেখালেন।

পূর্বপুরুষদের শিখিয়ে দেওয়া সেই একই রীতি মেনে কৃষিকাজ এগিয়ে নিয়ে চলাটাই ছিল দস্তুর। কিন্তু ওই কৃষকই চাষাবাদের অন্য দিশা দেখালেন।

০৬ ১৭
জৈব সার তৈরি করে সব্জি ফলিয়ে বছরে ব্যবসার প্রসারও যেমন ঘটল, তেমনই চাষে নতুন পথ দেখিয়ে সরাসরি রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পদ্মশ্রী পুরস্কার নিয়ে গোটা গ্রামের মান বাড়ালেন হুকুমচাঁদ।

জৈব সার তৈরি করে সব্জি ফলিয়ে বছরে ব্যবসার প্রসারও যেমন ঘটল, তেমনই চাষে নতুন পথ দেখিয়ে সরাসরি রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পদ্মশ্রী পুরস্কার নিয়ে গোটা গ্রামের মান বাড়ালেন হুকুমচাঁদ।

০৭ ১৭
হুকুমচাঁদ প্রথমে যখন পরিবারের কাছে অর্গানিক ফার্মিং-এর কথা বলেছিল, কেউই তাতে রাজি হননি। ফসলের উত্পাদন বাড়ানো এবং বিভিন্ন পোকা-মাকড় থেকে ফসলকে রক্ষা করার জন্য রাসায়নিক সারের প্রয়োগ এ দেশে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।

হুকুমচাঁদ প্রথমে যখন পরিবারের কাছে অর্গানিক ফার্মিং-এর কথা বলেছিল, কেউই তাতে রাজি হননি। ফসলের উত্পাদন বাড়ানো এবং বিভিন্ন পোকা-মাকড় থেকে ফসলকে রক্ষা করার জন্য রাসায়নিক সারের প্রয়োগ এ দেশে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।

০৮ ১৭
জৈব সারে ভাল ফসল পাওয়া সম্ভব নয়, চাষাবাদে ক্ষতি হবে— এগুলোই ছিল পরিবারের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া। তারপর অনেক বাকবিতণ্ডার পর পারিবারিক জমি থেকে হুকুমচাঁদকে জৈব সারের ব্যবহার পরীক্ষা করার জন্য অর্ধেক একর জমি দেওয়া হয়।

জৈব সারে ভাল ফসল পাওয়া সম্ভব নয়, চাষাবাদে ক্ষতি হবে— এগুলোই ছিল পরিবারের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া। তারপর অনেক বাকবিতণ্ডার পর পারিবারিক জমি থেকে হুকুমচাঁদকে জৈব সারের ব্যবহার পরীক্ষা করার জন্য অর্ধেক একর জমি দেওয়া হয়।

০৯ ১৭
সেই জমিতেই জৈব চাষ করতে শুরু করলেন হুকুমচাঁদ। গোবর, শুকনো পাতা, খড়, কেঁচো, সব্জির খোসা-সমস্ত কিছু দিয়ে তৈরি করলেন জৈব সার।

সেই জমিতেই জৈব চাষ করতে শুরু করলেন হুকুমচাঁদ। গোবর, শুকনো পাতা, খড়, কেঁচো, সব্জির খোসা-সমস্ত কিছু দিয়ে তৈরি করলেন জৈব সার।

১০ ১৭
তারপর মাটি ভাল করে কুপিয়ে সেই সার মিশিয়ে দিলেন। কড়ে রোদ যাতে জমির আর্দ্রতা সব টেনে না নেয়, তার জন্য খড় বিছিয়ে দিলেন উপরে।

তারপর মাটি ভাল করে কুপিয়ে সেই সার মিশিয়ে দিলেন। কড়ে রোদ যাতে জমির আর্দ্রতা সব টেনে না নেয়, তার জন্য খড় বিছিয়ে দিলেন উপরে।

১১ ১৭
এই জমিতেই রসুন, মেথি, ধনে-সহ নানা রকম সব্জি চাষ করলেন। পরিবারের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে রাসায়নিক সারের সব্জি খাওয়ার ফলে গবাদি পশুরাও অসুস্থ হয়ে পড়ছিল।

এই জমিতেই রসুন, মেথি, ধনে-সহ নানা রকম সব্জি চাষ করলেন। পরিবারের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে রাসায়নিক সারের সব্জি খাওয়ার ফলে গবাদি পশুরাও অসুস্থ হয়ে পড়ছিল।

১২ ১৭
এ সব দেখে এবং জৈব সব্জির পুষ্টিগুণ ও উত্পাদন হিসাব করে শেষমেশ ২০০৪ সালে হুকুমচাঁদকে পুরো জমিতে চাষের অনুমতি দিয়ে দেয় তাঁর পরিবার।

এ সব দেখে এবং জৈব সব্জির পুষ্টিগুণ ও উত্পাদন হিসাব করে শেষমেশ ২০০৪ সালে হুকুমচাঁদকে পুরো জমিতে চাষের অনুমতি দিয়ে দেয় তাঁর পরিবার।

১৩ ১৭
পারিবারিক ৪০ একর জমিতে জৈব চাষ করতে শুরু করেন হুকুমচাঁদ। প্রথমেই তাঁর ফসলের গুণগত মান যাচাইয়ের জন্য রাজস্থান স্টেট অর্গানিক সার্টিফিকেশন এজেন্সিতে পাঠান। সেখান থেকে তাঁকে সার্টিফিকেটও দেওয়া হয়।

পারিবারিক ৪০ একর জমিতে জৈব চাষ করতে শুরু করেন হুকুমচাঁদ। প্রথমেই তাঁর ফসলের গুণগত মান যাচাইয়ের জন্য রাজস্থান স্টেট অর্গানিক সার্টিফিকেশন এজেন্সিতে পাঠান। সেখান থেকে তাঁকে সার্টিফিকেটও দেওয়া হয়।

১৪ ১৭
এই সার্টিফিকেটের সাহায্যে হুকুমচাঁদ ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত, এমনকি আমেরিকা ও অন্যান্য দেশেও জৈব ফসল রফতানির অনুমতি পান।

এই সার্টিফিকেটের সাহায্যে হুকুমচাঁদ ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত, এমনকি আমেরিকা ও অন্যান্য দেশেও জৈব ফসল রফতানির অনুমতি পান।

১৫ ১৭
প্রথম বছরই হুকুমচাঁদের লাভ হয় ২০ লক্ষ টাকা। আমেরিকার পাশাপাশি সুইত্জারল্যান্ড, জার্মানি এবং জাপানেও তাঁর ফসল রফতানি হয়।

প্রথম বছরই হুকুমচাঁদের লাভ হয় ২০ লক্ষ টাকা। আমেরিকার পাশাপাশি সুইত্জারল্যান্ড, জার্মানি এবং জাপানেও তাঁর ফসল রফতানি হয়।

১৬ ১৭
তাঁর জমি থেকে প্রতি বছর দু’হাজার কিলোরও বেশি রসুন যায় সুইত্জারল্যান্ডে, ৫০ টন মেথি যায় জার্মানিতে আর ১০০ টন ধনে গুঁড়ো যায় জাপানে।

তাঁর জমি থেকে প্রতি বছর দু’হাজার কিলোরও বেশি রসুন যায় সুইত্জারল্যান্ডে, ৫০ টন মেথি যায় জার্মানিতে আর ১০০ টন ধনে গুঁড়ো যায় জাপানে।

১৭ ১৭
৬২ বছরের হুকুমচাঁদ ২০১৮ সালে পদ্মশ্রী পান। তাঁর কাছে এখন সারা দেশ থেকে জৈব চাষের পাঠ নিতে আসেন চাষিরা।

৬২ বছরের হুকুমচাঁদ ২০১৮ সালে পদ্মশ্রী পান। তাঁর কাছে এখন সারা দেশ থেকে জৈব চাষের পাঠ নিতে আসেন চাষিরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE