Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
cricket

চেয়েছিলেন নৃত্যশিল্পী হতে, এখন তাঁর ব্যাটেই রাতের ঘুম ওড়ে বোলারদের

১৯৯৯ সাল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবির্ভাব ঘটলো পাঁচ ফুট চার ইঞ্চির এক ভারতীয় ক্রিকেটারের। বয়স তখন মাত্র ১৬। এরপর কেটে গিয়েছে অনেকগুলো বছর।রেকর্ডের বহু শৃঙ্গ জয় করেছেন তিনি। কী ভাবছেন? আবার সচিন তেন্ডুলকরকে নিয়ে কেন লিখতে বসলাম? মিল পেলেও ইনি সচিন নন, ইনি ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের রানি, মিতালি রাজ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৩:১৫
Share: Save:
০১ ১৪
১৯৯৯ সাল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবির্ভাব ঘটলো পাঁচ ফুট চার ইঞ্চির এক ভারতীয় ক্রিকেটারের। বয়স তখন মাত্র ১৬। এরপর কেটে গিয়েছে অনেকগুলো বছর।রেকর্ডের বহু শৃঙ্গ জয় করেছেন তিনি। কী ভাবছেন? আবার সচিন তেন্ডুলকরকে নিয়ে কেন লিখতে বসলাম? মিল পেলেও ইনি সচিন নন, ইনি ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের রানি, মিতালি রাজ।

১৯৯৯ সাল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবির্ভাব ঘটলো পাঁচ ফুট চার ইঞ্চির এক ভারতীয় ক্রিকেটারের। বয়স তখন মাত্র ১৬। এরপর কেটে গিয়েছে অনেকগুলো বছর।রেকর্ডের বহু শৃঙ্গ জয় করেছেন তিনি। কী ভাবছেন? আবার সচিন তেন্ডুলকরকে নিয়ে কেন লিখতে বসলাম? মিল পেলেও ইনি সচিন নন, ইনি ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের রানি, মিতালি রাজ।

০২ ১৪
অনেকেই তাঁকে ‘লেডি সচিন’ বলে ডাকেন। তবে তিনি সচিন নন, তিনি মিতালি। নিজের জগতে একে বারে স্বতন্ত্র। বাবা দরাই রাজ ছিলেন বায়ুসেনায়। তাই ছোট থেকেই ছিল লড়াকু মনোভাব। জানতেন, যুদ্ধে মাথা ঠান্ডা রাখাই সব চেয়ে বেশি দরকার।

অনেকেই তাঁকে ‘লেডি সচিন’ বলে ডাকেন। তবে তিনি সচিন নন, তিনি মিতালি। নিজের জগতে একে বারে স্বতন্ত্র। বাবা দরাই রাজ ছিলেন বায়ুসেনায়। তাই ছোট থেকেই ছিল লড়াকু মনোভাব। জানতেন, যুদ্ধে মাথা ঠান্ডা রাখাই সব চেয়ে বেশি দরকার।

০৩ ১৪
১৯৮২ সালে হায়দরাবাদের ত্রিমুলঘেরিতে জন্ম মিতালির। ছোটবেলায় প্রথমে যান সেকেনদরাবাদের কিইস হাই স্কুলে। এখানে থাকতেই শুরু হয় ক্রিকেটের পাঠ। পরবর্তী সময় ভর্তি হন কস্তুরবা গাঁধী জুনিয়র কলেজে।অনেক কম বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলতে শুরু করায় ক্লাস টুয়েলভের পর আর এগোয়েনি পড়াশোনা।

১৯৮২ সালে হায়দরাবাদের ত্রিমুলঘেরিতে জন্ম মিতালির। ছোটবেলায় প্রথমে যান সেকেনদরাবাদের কিইস হাই স্কুলে। এখানে থাকতেই শুরু হয় ক্রিকেটের পাঠ। পরবর্তী সময় ভর্তি হন কস্তুরবা গাঁধী জুনিয়র কলেজে।অনেক কম বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলতে শুরু করায় ক্লাস টুয়েলভের পর আর এগোয়েনি পড়াশোনা।

০৪ ১৪
তাই বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে ব্যাট করতে নামার আগে দেখা যায় বই পড়ছেন মিতালি। আসলে বরাবরই শান্ত তিনি। মাঠে নেমে বোলারদের ঘুম উড়িয়ে দিলেও নিজে থাকেন নির্লিপ্ত। যদিও ক্রিকেট নয়, ছোটবেলায় তিনি স্বপ্ন দেখতেন নৃত্যশিল্পী হওয়ার।

তাই বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে ব্যাট করতে নামার আগে দেখা যায় বই পড়ছেন মিতালি। আসলে বরাবরই শান্ত তিনি। মাঠে নেমে বোলারদের ঘুম উড়িয়ে দিলেও নিজে থাকেন নির্লিপ্ত। যদিও ক্রিকেট নয়, ছোটবেলায় তিনি স্বপ্ন দেখতেন নৃত্যশিল্পী হওয়ার।

০৫ ১৪
ছোট থেকে ভরতনাট্যম শিখতেন। নাচ দিয়েই নিজেকে প্রতিষ্ঠা করবেন ভেবেছিলেন। কিন্তু বড় অলস ছিলেন তিনি, নিজেই এক বার জানিয়েছিলেন সে কথা। সেনায় যুক্ত থাকা কর্মঠ বাবার পছন্দ ছিল না আলস্য। মেয়েকে জব্দ করতে ভর্তি করে দিলেন ক্রিকেট কোচিং ক্লাসে।

ছোট থেকে ভরতনাট্যম শিখতেন। নাচ দিয়েই নিজেকে প্রতিষ্ঠা করবেন ভেবেছিলেন। কিন্তু বড় অলস ছিলেন তিনি, নিজেই এক বার জানিয়েছিলেন সে কথা। সেনায় যুক্ত থাকা কর্মঠ বাবার পছন্দ ছিল না আলস্য। মেয়েকে জব্দ করতে ভর্তি করে দিলেন ক্রিকেট কোচিং ক্লাসে।

০৬ ১৪
মা-বাবা-কে খুশি করতে ক্রিকেট খেলতে শুরু করা মিতালি ধীরে ধীরে ভালবেসে ফেলেন ক্রিকেটকে। যদিও তাঁর ইচ্ছে ছিল সিভিল সার্ভিসে যোগ দেওয়ার। তা হলে হয়তো ভারত হারিয়ে ফেলত এক অনন্য ক্রিকেটারকে।

মা-বাবা-কে খুশি করতে ক্রিকেট খেলতে শুরু করা মিতালি ধীরে ধীরে ভালবেসে ফেলেন ক্রিকেটকে। যদিও তাঁর ইচ্ছে ছিল সিভিল সার্ভিসে যোগ দেওয়ার। তা হলে হয়তো ভারত হারিয়ে ফেলত এক অনন্য ক্রিকেটারকে।

০৭ ১৪
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম বার খেলতে নেমেই সেঞ্চুরি। ১১৪ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে। অভিষেক ম্যাচের স্কোরের হিসেবে যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটারদের মধ্যে তিনিই প্রথম ব্যাটসম্যান যিনি অভিষেক ম্যাচে শতরান করেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম বার খেলতে নেমেই সেঞ্চুরি। ১১৪ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে। অভিষেক ম্যাচের স্কোরের হিসেবে যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটারদের মধ্যে তিনিই প্রথম ব্যাটসম্যান যিনি অভিষেক ম্যাচে শতরান করেন।

০৮ ১৪
১৬ বছর ২৫০ দিন বয়সে অভিষেক ঘটে তাঁর। আর সেই ম্যাচে শতরানের মাধ্যমে তিনি হয়ে যান কনিষ্ঠতম সেঞ্চুরিপ্রাপক। রেকর্ড গড়ে ক্রিকেট জীবন শুরু করেছিলেন, সেই রেকর্ড ভাঙাই যেন অভ্যাস করে ফেলেছিলেন ক্রিকেট জীবনে।

১৬ বছর ২৫০ দিন বয়সে অভিষেক ঘটে তাঁর। আর সেই ম্যাচে শতরানের মাধ্যমে তিনি হয়ে যান কনিষ্ঠতম সেঞ্চুরিপ্রাপক। রেকর্ড গড়ে ক্রিকেট জীবন শুরু করেছিলেন, সেই রেকর্ড ভাঙাই যেন অভ্যাস করে ফেলেছিলেন ক্রিকেট জীবনে।

০৯ ১৪
অভিষেক ম্যাচে ভারতীয় মহিলাদের মধ্যে সব চেয়ে বড় পার্টনারশিপ গড়া (রেশমা গাঁধীর সঙ্গে ২৫৮ রানের), একদিনের ক্রিকেটে সব থেকে বেশি রান (৬৭২০) এমন বহু রেকর্ড রয়েছে তাঁর ঝুলিতে।

অভিষেক ম্যাচে ভারতীয় মহিলাদের মধ্যে সব চেয়ে বড় পার্টনারশিপ গড়া (রেশমা গাঁধীর সঙ্গে ২৫৮ রানের), একদিনের ক্রিকেটে সব থেকে বেশি রান (৬৭২০) এমন বহু রেকর্ড রয়েছে তাঁর ঝুলিতে।

১০ ১৪
২০০৪ সালে ভারতের অধিনায়ক হন মিতালি। ৯০টি একদিনের ম্যাচে অধিনায়ক ছিলেন তিনি। এর মধ্যে টানা ৫৭টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি।এই তালিকায় এক নম্বরে রয়েছেন বেলিন্ডা ক্লার্ক। তিনি টানা ৫৮টি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ছিলেন। ভারতের মহিলা দলের কনিষ্ঠতম অধিনায়কও তিনিই। মাত্র ২১ বছর বয়সে নেতৃত্বর দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় তাঁর কাঁধে।

২০০৪ সালে ভারতের অধিনায়ক হন মিতালি। ৯০টি একদিনের ম্যাচে অধিনায়ক ছিলেন তিনি। এর মধ্যে টানা ৫৭টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি।এই তালিকায় এক নম্বরে রয়েছেন বেলিন্ডা ক্লার্ক। তিনি টানা ৫৮টি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ছিলেন। ভারতের মহিলা দলের কনিষ্ঠতম অধিনায়কও তিনিই। মাত্র ২১ বছর বয়সে নেতৃত্বর দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় তাঁর কাঁধে।

১১ ১৪
তাঁর নেতৃত্বেই ভারতীয় মহিলা দল প্রথম টেস্ট সিরিজ যেতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২০০৬ সালে। ২০০৫ সালের ওয়ান ডে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকায় তাঁর নেতৃত্বে ফাইনালে ওঠে ভারত। যদিও শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার কাছে হার মানতে হয় তাঁদের।

তাঁর নেতৃত্বেই ভারতীয় মহিলা দল প্রথম টেস্ট সিরিজ যেতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২০০৬ সালে। ২০০৫ সালের ওয়ান ডে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকায় তাঁর নেতৃত্বে ফাইনালে ওঠে ভারত। যদিও শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার কাছে হার মানতে হয় তাঁদের।

১২ ১৪
মঙ্গলবার টি-২০-কে বিদায় জানালেন তিনি।তবে একদিনের ম্যাচ খেলবেন বলেই জানিয়েছেন। ২০২১ সালের ওয়ান ডে বিশ্বকাপকে পাখির চোখ করছেন মিতালি। এখনও অবধি ২০৩টি একদিনের ম্যাচে ৬৭২০ রান করেছেন তিনি, রয়েছে সাতটি সেঞ্চুরি। ১০টি টেস্ট ম্যাচে করেছেন ৬৬৩ রান, সেখানেও রয়েছে একটি সেঞ্চুরি।

মঙ্গলবার টি-২০-কে বিদায় জানালেন তিনি।তবে একদিনের ম্যাচ খেলবেন বলেই জানিয়েছেন। ২০২১ সালের ওয়ান ডে বিশ্বকাপকে পাখির চোখ করছেন মিতালি। এখনও অবধি ২০৩টি একদিনের ম্যাচে ৬৭২০ রান করেছেন তিনি, রয়েছে সাতটি সেঞ্চুরি। ১০টি টেস্ট ম্যাচে করেছেন ৬৬৩ রান, সেখানেও রয়েছে একটি সেঞ্চুরি।

১৩ ১৪
তাঁর ২০ বছরের ক্রিকেট কেরিয়ারে অনেক ঝড়-ঝাপটা সামলেছেন তিনি। ২০১৮ সালের টি-২০ বিশ্বকাপে বাদ পড়তে হয় প্রথম একাদশ থেকেও। বয়স থাবা বসিয়েছে ফর্মে। রান মেশিন মিতালি একদিনের ক্রিকেটে শেষ শতরান করেছেন এক বছর আগে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে। যদিও গড় এখনও পঞ্চাশের ওপরে। টেস্টে রয়েছে দ্বিশতরানও।

তাঁর ২০ বছরের ক্রিকেট কেরিয়ারে অনেক ঝড়-ঝাপটা সামলেছেন তিনি। ২০১৮ সালের টি-২০ বিশ্বকাপে বাদ পড়তে হয় প্রথম একাদশ থেকেও। বয়স থাবা বসিয়েছে ফর্মে। রান মেশিন মিতালি একদিনের ক্রিকেটে শেষ শতরান করেছেন এক বছর আগে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে। যদিও গড় এখনও পঞ্চাশের ওপরে। টেস্টে রয়েছে দ্বিশতরানও।

১৪ ১৪
২০০৩ সালে অর্জুন পুরস্কার, ২০১৫ সালে পদ্মশ্রী পান তিনি। ২০১৫ সালেপ্রথম মহিলা ক্রিকেটার হিসেবে পান উইজডেন ইন্ডিয়া ক্রিকেটার অব দ্য ইয়ার সম্মান। এই মুহূর্তে একদিনের ক্রিকেটে তাঁর র‍্যাঙ্কিং পাঁচ। বিশ্বকাপের মঞ্চে তাঁর থেকে দুর্দান্ত কিছু ইনিংস দেখার অপেক্ষায় দেশবাসী।

২০০৩ সালে অর্জুন পুরস্কার, ২০১৫ সালে পদ্মশ্রী পান তিনি। ২০১৫ সালেপ্রথম মহিলা ক্রিকেটার হিসেবে পান উইজডেন ইন্ডিয়া ক্রিকেটার অব দ্য ইয়ার সম্মান। এই মুহূর্তে একদিনের ক্রিকেটে তাঁর র‍্যাঙ্কিং পাঁচ। বিশ্বকাপের মঞ্চে তাঁর থেকে দুর্দান্ত কিছু ইনিংস দেখার অপেক্ষায় দেশবাসী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE