Report card of Indian Cricketers after Test Series dgtl
Cricket
৪-১ হারা সিরিজে বিরাট-ধওয়ন-শামিরা কে কত নম্বর পেলেন
সদ্য শেষ হল ভারতের ইংল্যান্ড সফর। টি২০-তে জয় দিয়ে সফর শুরু করা কোহালিরা ৪-১ ফলে টেস্ট সিরিজ হেরে ফিরেছে। বোলাররা অসাধারণ পারফর্ম করলেও মূলত ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় টেস্টে হার মানতে হয়েছে।
সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৫:৪১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৪
সদ্য শেষ হল ভারতের ইংল্যান্ড সফর। টি২০-তে জয় দিয়ে সফর শুরু করা কোহালিরা ৪-১ ফলে টেস্ট সিরিজ হেরে ফিরেছে। বোলাররা অসাধারণ পারফর্ম করলেও মূলত ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় টেস্টে হার মানতে হয়েছে। সিরিজ শেষে খাতা পেনসিল নিয়ে ভারতীয় দলকে নম্বর দিলেন সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
০২১৪
শিখর ধওয়ন (০/১০): গোল্লা না দিয়ে পারলাম না। চার টেস্টে আট ইনিংসে ১৬২ রান। গড় ২০.২৫। একটা পঞ্চাশও নেই। বারবার একই ভুল করে গিয়েছে। নিজেকে শুধরে নেওয়ার তাগিদ নেই। নিজের উইকেটের যেন কোনও মূল্যই নেই। একজন ওপেনারকে তো বাইরের বল ছাড়তে হবে। সেটাই করতে পারেনি। স্লিপে খোঁচা দিয়ে আউট হয়েই গিয়েছে। টেস্টে ওর জায়গা হয় না।
০৩১৪
লোকেশ রাহুল (৭/১০): হতাশ করেছে। শেষ টেস্টের শতরান ছাড়া নিজেকে মেলে ধরতেই পারল না। ১০ ইনিংসে ২৯৯ রান। তার মধ্যে একটা ইনিংসেই ১৪৯। ওটা বাদ দিলে নয় ইনিংসে ১৫০। অথচ, ও যে কত প্রতিভাবান, তা শেষ ইনিংসে বুঝিয়ে দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়াতেও শতরান রয়েছে। কিন্তু ভিতরে ঢুকে আসা বলে পাঁচ বার বোল্ড হয়েছে। এটা মানা যায় না। দ্রুত শুধরে নিতে হবে।
০৪১৪
চেতেশ্বর পূজারা (৮/১০): কঠিন সিরিজ ছিল। প্রথম টেস্টে বাদ। দ্বিতীয় টেস্টে দলে ফিরে রান আউট। তৃতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে অহেতুক হুক করে আউট। তারপর চতুর্থ টেস্টে দুরন্ত শতরান। ওই টেস্টে একাই টেনেছিল দলকে। চার টেস্টে আট ইনিংসে ২৭৮ করেছে। তবে আরও ভাল খেলার ক্ষমতা রয়েছে। টেস্টের আদর্শ ব্যাটসম্যান।
০৫১৪
বিরাট কোহালি (৯.৫/১০): পাঁচ টেস্টে ৫৯৩ রান। চার বছর আগে ইংল্যান্ডে চরম ব্যর্থ হয়েছিল। এই সিরিজ সে জন্যই ব্যাটসম্যান কোহালির অ্যাসিড টেস্ট ছিল। সেই পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ। দুটো শতরান করেছে। তিনটি অর্ধশতরান। গড় ৫৯.৩০। তবে ক্যাপ্টেন কোহালির থেকে হাফ পয়েন্ট কাটতেই হল। দশে সাড়ে নয় দিতেই হচ্ছে কোহালিকে।
০৬১৪
অজিঙ্ক রাহানে (৫/১০): অনেক বেশি প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু, কেন জানি না, রাহানে মেজাজে ছিল না। ১০ ইনিংসে ২৫৭ রান ওর মানে অনেক কম। ২৫.৭০ গড়ও বেশ দৃষ্টিকটু। অথচ, ৮১ রানের ইনিংসে বুঝিয়েছে, কেমন ব্যাট করার ক্ষমতা ধরে রাহানে। মিডল অর্ডারে ওর জায়গা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সেই জায়গার প্রতি সুবিচার করতে পারেনি অধিকাংশ সময়ে।
০৭১৪
হনুমা বিহারী (৫/১০): টেস্টে প্রথম ইনিংসেই অর্ধশতরান করেছে বলেই নয়, টেস্ট ম্যাচের টেম্পারামেন্ট দেখিয়েছে বলেও ভাল লেগেছে। প্রচুর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলে এসেছে। ফলে, রক্ষণ মজবুত। বল ছাড়তে পারে। টেস্টে যে ভাবে ইনিংস গড়তে হয়, তা পারে। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে আবার খাতাই খুলতে পারেনি। ধারাবাহিক থাকতে হবে হনুমাকে। আর ওর অফস্পিনও চলনসই।
০৮১৪
ঋষভ পন্থ (৩/১০): এককথায়, খুব খারাপ কিপার। ইংল্যান্ডেই এই হলে দেশের মাঠে ধূলো-ওড়া পিচে আরও সমস্যায় পড়বে। ইংল্যান্ডে ঋদ্ধিমানের অভাব কিন্তু টের পেয়েছে ভারত। ভাবা যায়, তিন টেস্টে ছয় ইনিংসেই ঋষভ সত্তরের বেশি বাই দিয়েছে! তবে ব্যাটিং খারাপ নয়। কিন্তু, বড্ড বেশি শট খেলে। টেস্ট আর আইপিএলের ফারাক বুঝতে হবে।
০৯১৪
হার্দিক পান্ড্য (৩/১০): অলরাউন্ডার মানে যে শুধু ব্যাটিং বা বোলিংয়ের জোরেই দলে আসার ক্ষমতা ধরে। কিন্তু, ওর কোনওটাই আন্তর্জাতিক পর্যায়ের উপযুক্ত নয়। সাউদাম্পটন টেস্টে যতই পাঁচ উইকেট নিক আর পঞ্চাশ করুক, এই ধারণা তাতে বদলাচ্ছে না। কারণ, ওর মধ্যে ধারাবাহিকতা একেবারেই নেই। উল্টো দিকে সিরিজের সেরা হওয়া স্যাম কারেন যা দেখাল সিরিজ জুড়ে।
১০১৪
রবিচন্দ্রন অশ্বিন (৪/১০): প্রথম টেস্টে পাঁচ উইকেট নিয়ে শুরু করেছিল। কিন্তু ক্রমশ ছন্দ হারিয়েছে। চোটও একটা কারণ। না হলে, যে পিচে ইংল্যান্ডের মইন আলি একাই ভারতীয় ব্যাটিংয়ে আতঙ্ক এনেছে, সেই পিচেই অশ্বিনকে নির্বিষ দেখিয়েছে। উপমহাদেশের বাইরে রেকর্ড কিন্তু খুব সাদামাটা। সাত ইনিংস হাত ঘুরিয়ে মাত্র ১১ উইকেট। যে মানের স্পিনার, তাতে খুব খারাপ!
১১১৪
রবীন্দ্র জাদেজা (৭/১০): মাত্র একটা টেস্টে খেলেছে। কিন্তু আরও বেশি সুযোগ প্রাপ্য ছিল। ইংল্যান্ড শিবিরও পঞ্চম টেস্টের সময় এই কথা মেনেছে। একটা টেস্ট খেলে ৯৯ রান আর সাত উইকেট। আমার কাছে, জাদেজাই হল সত্যিকারের অলরাউন্ডার। পঞ্চম টেস্টে তো ব্যাটে-বলে ওই লড়াইয়ে রেখেছিল ভারতকে। কিন্তু বাকিদের থেকে সাহায্য পায়নি।
১২১৪
ইশান্ত শর্মা (৮/১০): খুব ভাল বল করেছে। ১৮ উইকেট নিয়েছে। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে ওই সফলতম। তবে আরও বেশি উইকেট পেতেই পারত। সিরিজে একমাত্র জেমস অ্যান্ডারসন ওর থেকে বেশি উইকেট নিয়েছে। ভারতের বোলিংয়ের প্রধান শক্তি হয়ে উঠেছিল ইশান্ত। লেংথে অদল-বদল ঘটিয়েই তীক্ষ্ণ হয়ে উঠেছিল ও। সঙ্গে নিয়ন্ত্রণও রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় এই ইশান্তকেই লাগবে।
১৩১৪
জশপ্রীত বুমরা (৮.৫/১০): চোটের জন্য প্রথম দুই টেস্টে খেলেনি। কিন্তু, তৃতীয় টেস্টে ফারাক গড়ে দিয়েছিল। শেষ দুই টেস্টেও ভাল বল করেছে। তিন টেস্টে ১৪ উইকেট নিয়েছে। প্রথম দুই টেস্টে থাকলে ভারত হয়তো জঘন্য ভাবে নাও হারতে পারত। রীতিমতো গতিতে লম্বা স্পেল করেছে। বাউন্স আদায় করে মুশকিলে ফেলেছে ব্যাটসম্যানদের।
১৪১৪
মহম্মদ শামি (৯/১০): আনলাকি। কপাল সঙ্গে ছিল না। অজস্রবার ব্যাটকে পরাস্ত করেও খোঁচা আসেনি। হতাশা আসাই স্বাভাবিক। কিন্তু, ও তার পরও একই ভাবে বল করে গিয়েছে। নিয়েছে ১৬ উইকেট। মাথায় রাখতে হবে, অধিকাংশ সময়েই ও নতুন বল পায়নি। পুরনো বলে রিভার্স করিয়েছে। ব্যাটসম্যানকে চাপে রেখেছে সারাক্ষণ।