Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

এই পুজোয় নতুন

ঠাকুর দেখতে দেখতে মুখ চলছে প্রাণপণ কদমতাল, কিন্তু পরবর্তী ঝঞ্ঝাটে পাঁইপাঁই তাকাও, নাই ত্রাণ-স্থান। এ বছর মোবাইলে থাক তুলকালাম নতুন অ্যাপ, ‘কমোডিফিকেশন’, ক্লিক করলেই ঝটাং বেরিয়ে আসবে একখান তকতকে কমোড। ব্যস, বসে পড়লেই হল। হ্যাঁ, লজ্জার ব্যাপারটা তো আছেই, সে জন্যই পরের অ্যাপ, ‘টেন্ট্যাক্ল’, যা টিপলে বেরিয়ে আসবে ছোট্ট টেকসই তাঁবু। কমোড ঘিরে টাঙিয়ে নিলেই, তোফা।

ছবি: সুমিত্র বসাক

ছবি: সুমিত্র বসাক

অনেকে মিলে
শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:০৫
Share: Save:

ঠাকুর দেখতে দেখতে মুখ চলছে প্রাণপণ কদমতাল, কিন্তু পরবর্তী ঝঞ্ঝাটে পাঁইপাঁই তাকাও, নাই ত্রাণ-স্থান। এ বছর মোবাইলে থাক তুলকালাম নতুন অ্যাপ, ‘কমোডিফিকেশন’, ক্লিক করলেই ঝটাং বেরিয়ে আসবে একখান তকতকে কমোড। ব্যস, বসে পড়লেই হল। হ্যাঁ, লজ্জার ব্যাপারটা তো আছেই, সে জন্যই পরের অ্যাপ, ‘টেন্ট্যাক্ল’, যা টিপলে বেরিয়ে আসবে ছোট্ট টেকসই তাঁবু। কমোড ঘিরে টাঙিয়ে নিলেই, তোফা। হুঁ, লোকে তো আপত্তি করবেই, রাস্তার মাঝখানে তাঁবু, হোঁচট, উদ্যোক্তারাও হাজির, অ্যাই এটা তো থিমে ছিল না! এবং অবিলম্বে পুলিশ। এইও, ভেতরে কে! এ দিকে দেখা দেওয়া তো আপনি অ্যাফোর্ড করতে পারেন না। মোবাইলে ফের ক্লিকিয়ে দিন অভিনব অ্যাপ, ‘ঘুষিফাই’, উঁহু, ঘুসি মারার সঙ্গে নো সম্পর্ক, এতে ফোনের ভেতর থেকে একটা হাত বেরিয়ে এসে অতি ভদ্র ভাবে পুলিশের পেছনপকেটে তুরন্ত গুঁজে দেবে অ্যাক্কেরে ঠিকঠাক অ্যামাউন্টের ঘুষ।

মানুষ তো আর নিজে প্রতিমা দেখে না, মোবাইলকে দেখায়। পাড়ায় পাড়ায় অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাক ‘মো-ম্যান’। বস্তা নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাবে, মোবাইলগুলো ঢিপি করে কালেক্ট করবে, তার পর ট্যাঙস ট্যাঙস সমস্ত পুজো ঘুরেঘারে তাবৎ ছবি ফোনে ফোনে তুলে, রাতে ফেরত দিয়ে আসবে। আপনি সারা দিন পায়ের ওপর পা তুলে বাড়িতে রিল্যাক্স করুন, রাত্রে আরামসে শুয়ে ঢেকুর তুলতে তুলতে সেরা ঠাকুর দেখা সেরে নিন। মোবাইল থেকে হাজারটা ছবি চালানও করুন বন্ধুদের, কী র্যা, এইটে দেখেছিস? একটাই গ্যাঁড়াকল, যদি একই মডেলের ফোন বলে সাহাবউদির ফোনটা ফট করে সেনকাকুর বাড়ি ডেলিভারি হয়ে যায়। জেনিফার লরেন্সের দেখাদেখি লোকে ফোনে যা ছবি রাখছে!

পুজোর সময় গোটা কলকাতা স্লো মোশনে। দুটো পুজো দেখতে পাঁচ ঘণ্টা কাবার। তাই পুজো ট্রান্সফার হয়ে যাক মাটির নীচে মাইল মাইল প্রান্তরে— মেট্রো রেল! বড় বড় পুজোগুলোকে ধড়াচুড়ো, ঠাকুর, কর্মকর্তা, লাইটিং, সর্বস্বসমেত নীচে নামিয়ে, দুটো স্টেশনের মাঝের ধুলো পড়া কংক্রিট-পিলারগুলোর ফাঁকে ফাঁকে গুঁজে দিন। ব্যস, পাবলিক জানলার ওপর হামলে পড়ে পুজো দেখতে দেখতে বোঁ বোঁ করে বেরিয়ে যাচ্ছে। পুজো-কমিটি ডবল খুশ। সকলে পুজো দেখছে, কিন্তু প্যান্ডেল ছুঁতে চাইছে না। এমনকী, ছবি পর্যন্ত তুলতে চাইছে না। মানে পারছে না আর কী। লোকে মেট্রোর সিঁড়িতে এগরোল খেল, কাউন্টারে বন্ধুকে দাঁড় করিয়ে প্যাসেজে গিয়ে নাগরদোলা চেপে এল, প্ল্যাটফর্মে র্যাফের জওয়ানদের সঙ্গে সেল্ফি তুলল, তার পর ট্রেনে চড়ে শেষ স্টেশন অবধি চলে গেল। যাওয়ার সময় লাইনের ডান দিকে ঠাকুর দেখল, ফেরার সময় বাঁ দিকের।

বিশ্বকর্মা পুজোয় অবধি হাফছুটি হচ্ছে, আর দুর্গাপুজো স্রেফ চার দিন? এখন ছুটির জমানা, মস্তির যুগ, পুজো শুরু হয়ে যাক জুলাইয়ের মাঝামাঝি। মাস তিনেক ধরে চলুক। প্রত্যেক সপ্তাহে চার দিন করে সপ্তমী, এক এক সপ্তাহের অষ্টমী এক এক রকম। মানে, কোনও বার হয়তো নবমীর পরে এল। শুধু বিজয়া দশমীটা হাফবেলা হলেও চলবে। জুলাই ফুরোতে না ফুরোতে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে তো বটেই, শপিং মলগুলোর কোণে কোণে ঠাকুর আর ঢাকি বসিয়ে দিন। লোকে ঠাকুর দেখতে দেখতেই জামা কিনুক। এর পর যে ঠাকুরই আসবেন, দুর্গার সাইডে। সে বিশ্বকর্মাই হোন আর মা কালী। মা জগদ্ধাত্রীর সঙ্গেই বিশ্বকর্মা, দুর্গা, লক্ষ্মী, কালী, কার্তিক সক্কলে একসঙ্গে শোভাযাত্রা করে ভাসান। ৮০-৯০ দিন ধরে ঠাকুর দেখা, নতুন হেয়ারকাট, আলোর মালা, প্রেম, ওমলেট, নিষিদ্ধ বাজি, ব্যান্ডেড। বোর লাগলে, টিভির ব্রেকের মতন দু-এক দিন করে রেস্ট। এক দিন ঘুমের ব্রেক, এক দিন ব্যাংকে যাওয়ার, দু’দিন কলেজ ঘেরাওয়ের। তখন রাস্তার মাথায় কাউন্টডাউন স্ক্রিন— ইয়োর পূজা রিটার্নস ইন: 38: 48: 15!

মেয়েরা বাহা-শাড়ি ছাড়ুন, এ বার নতুন ফ্যাশন: পুলিশের উর্দি। পুলিশ এখন সাংঘাতিক ‘ইন’। শাহরুখ পর্যন্ত দীপিকা-করিনা ছেড়ে পুলিশের সঙ্গে নাচেন, তাকে কোলে তুলে হিরোইনের মতো প্যাম্পার করেন। ও দিকে ঘরের লক্ষ্মী রানি মুখোপাধ্যায় এত বচ্ছর সাইডে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু ‘মর্দানি’তে পুলিশ সাজতেই আঙুল ফুলে চোপড়াগাছ। উর্দি পরে ঠাকুর দেখুন, ইভ টিজাররাও ধারেকাছে আসবে না, আবার ইচ্ছে করলেই আপনি যেখানে-সেখানে যার-তার সঙ্গে ঝিংকু আইটেম নাম্বার।

ওই রে, বিল নিয়ে ফের আসছে তেড়ে। পাঁচশো, পাঁচ হাজার না পঞ্চাশ হাজার কত লিখবে? লিখলেই দিতে হবে, কিন্তু আমারই পয়সায় পুজো করেও এক চামচে ভোগ পর্যন্ত দেবে না। বিসর্জনে মা’কে সিঁদুর পরাতে গেলে ‘কোত্থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসল রে’ লুক দিয়ে দুচ্ছাই করবে। আবার চাঁদা কালেকশনের ডিউটিতেও হ্যাপা! পুরাণের প্রশ্ন পারলে তবে তেতলার প্রফেসর-বউদি চাঁদা দেবেন। গোপালের মাকে পুজোয় কিছু কনট্রিবিউট করতে বললেই এক থাবা গাঁদাফুল দেন। তাই, দু’তরফের স্বার্থে অ্যানাউন্স করুন, এ বার পুজোয় যে সব থেকে বেশি চাঁদা দেবে, তাকে সারা বছর যাতায়াতের জন্য একটা ট্যাক্সির ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। সেই ট্যাক্সিওয়ালা মহাপ্রস্থানের পথে যেতে বললেও রিফিউজ করবে না, গলি তো নস্যি, বললে জলের পাইপের মধ্যেও গাড়ি ঢুকিয়ে দেবে হাসিমুখে, পারলে বাড়ি বেয়ে উঠে বিছানার সামনে ট্যাক্সি দাঁড় করায়, মিটারে কোনও কারচুপি নেই, ‘কুড়ি টাকা বেশি’ কাকে বলে জানে না, পকেটে ঝনঝন থইথই খুচরো। এমন একখান অ্যাড দিয়েই দেখুন, চাঁদার লাইনেও দড়ি ফেলতে হবে এই বারে।

পাড়ার পুজোকে দুর্দান্ত মেকওভার দিন, ভ্যাদভেদে বোরিং নামগুলো বিদেয় করে আইপিএল-গন্ধী নাম রাখুন। ‘পুঁটিয়ারি সর্বজনীন’ হোক ‘পুঁটিয়ারি প্যান্থার্স’, ‘হেদুয়া বারোয়ারি’ এখন ‘হেদুয়া হট্স’, ‘৩৩ পল্লি’র নাম ‘থার্টি থ্রি থান্ডার্স’, ‘আদি চালতাবাগান’ অবশ্যই ‘চালতাবাগান চ্যালেঞ্জাসর্র্। অ্যাদ্দিন যারা চোখনাক কুঁচকে-সিঁটকে আন-মণ্ডপে পা বাড়াত, তারাই দেখুন এ বার প্যান্ডেলে চিপকাবে ফেভিকল সে। উফ, শখেরবাজার শাইনার্স-এর অসুরটা দেখেছিস? ছোঃ, নাকতলা নিন্জাস-এর ঠাকুরের কাছে ওরা? অধিক ফুটফল টানতে পাড়াসুন্দরীদের চিয়ারলিডার করুন।

বছর বছর দুগ্গাকে ওই দাঁত-খিঁচোনো সিংহের ওপর দেখতে দেখতে চোখ পচে গেল! বাহনগুলোকে বদলে দিন। গণেশকে রেড পান্ডা, কার্তিককে ঈগল, লক্ষ্মী-সরস্বতীকে কুকুর আর বেড়াল দিন। বিলুপ্ত-বিপন্নপ্রায় প্রাণীর ক্যাম্পেনিংও হল, ঘরের ফেলনা পুষ্যিগুলোও একটু ট্রিবিউট পেল। দুর্গাকে অক্টোপাস আর অসুরকে সাড়ে সাতশো দাঁতওলা পিরানহা। ফাটাফাটি অ্যাকশন।

ফি বছর পুজো নষ্ট করতে হাজির সেডিস্ট নিম্নচাপ, ঘূর্ণিঝড়, মেঘলা লো-ভোল্টেজ আকাশ। ঝক্কি এড়াতে গোটা পশ্চিমবঙ্গের মাথা টু পা চার দিন মুড়ে দেওয়া হোক চমৎকার প্লাস্টিক ত্রিপলে। আশপাশ কাকভেজা, অথচ আমরা শুকনো গায়ে, খোশমেজাজে ঠাকুর দেখছি। তখন বৃষ্টির শব্দ আহা জলতরঙ্গ। তবে, ত্রিপল নীল-সাদা হবে কি না, সে নিয়ে ধুন্ধুমার।

ঠাকুর-দেখাকে করা হোক রিয়েলিটি-কাম-গেম শো। ‘মশা’র চেয়ে কন্টেমপোরারি থিম কিছু আছে? প্যান্ডেলের ঠিক ঢোকার মুখটায় দর্শকদের অভ্যর্থনা জানাতে তৈরি থাকবে কোটি কোটি মশা। গৃহপালিত নিরীহ মশা তো বটেই, এ ছাড়াও ডেঙ্গি, এনসেফ্যালাইটিস, ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়ার পান্ডারা। ঝাঁকে ঝাঁকে অ্যাটাক। সেটা ঠেলে দুর্গা অ্যান্ড ফ্যামিলিকে দর্শন করতে হবে এবং পৌনে চার মিনিটের আকুল প্রার্থনা। লাইফলাইন হিসেবে প্রত্যেককে দেওয়া হবে এক মিটার লম্বা, এক মিটার চওড়া এক ফালি মশারি। প্যান্ডেল খুলছে দ্বিতীয়ার দিন। পরের তিন দিন কড়া অবজারভেশন। যাঁরা মশার কামড় খেয়েও কোনও জ্বর না বাধিয়ে পঞ্চমী অবধি কাটিয়ে দিতে পারবেন, ষষ্ঠীতে তাঁদের জন্য জব্বর পুরস্কার: ‘মসকুইটোশ্রী’ তকমা, লাখ লাখ টাকা, সারা বছরের মশারোধী মলমের বিনামূল্যে সাপ্লাই।

নেটিভদের সঙ্গে ভিড়ে স্যান্ডউইচ হয়ে অনেক তো ঠাকুর দেখলেন। এ বার খরচা করে জাতে উঠুন। আসুক হেলি-দর্শন। তুরতুরে মেজাজে স্ট্যান্ড থেকে হেলিকপ্টারে উঠে জিপিএস-এ লোকেশনটা সেট করে ফেলুন। আর তার পর ঝোলা দড়ি দিয়ে টুপ করে এক্কেবারে মণ্ডপের ছাদে। একসঙ্গে খানতিনেক টিকিট কিনে ফেলতে পারলে প্যারাশুট ফ্রি। বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: এলোমেলো হাওয়া ছাড়লে নাকতলার বদলে শীতলা বোস লেনের প্যান্ডেলেও ল্যান্ড করতে হতে পারে।

গোটা বাংলা সদ্য তার ‘মা’কে হারিয়েছে। সেই মাতৃশোকের রেশ মেলাতে না মেলাতে আর এক মা’কে নিয়ে পক্ষকালের মোচ্ছব? কভি নেহি! তার চেয়ে উমার মুখ এ বার ঠোঙাচাপাই থাকুক। এত বচ্ছর ধরে ঝিলিক আর পরীর সঙ্গে রাত আটটায় কেঁদে ককিয়ে মা’কে খুঁজেছে বাঙালি। সেই অভ্যেস এত তাড়াতাড়ি পালটায়? বরং দশমীর দিন, বিসর্জনের আগে, সব প্রতিমার মুখের ঠোঙা খুলে ঝিলিক সেরা মা বেছে নিক। প্রত্যেক মণ্ডপে ঢোকার মুহূর্তে দর্শকের পাওনা ফের সেই ‘পেল, কি পেল না’ মার্কা সাসপেন্স, আর ঝিলিকের বেকারত্বের হাত থেকে মুক্তি।

আজকাল লোকের কী হল, তৃতীয়া-চতুর্থী থেকেই প্যান্ডেলের বাইরে ইয়া অ্যানাকন্ডার মতো লাইন। অত ঝক্কির দরকার কী? আপনার পছন্দসই পুজোর ‘টাইম স্লট’ কিনে ফেলুন। নেট-এ সার্চ করে ‘বুক মাই পুজো’ অ্যাপটা ডাউনলোড করতে হবে। তার পর নির্দেশমতো জোন, পুজো, সময় বেছে ফেলুন। পেমেন্টেরও ঝঞ্ঝাট নেই, অনলাইন। সব থেকে বেশি সময় ২০ ন্যানোসেকেন্ড। সঙ্গে অফারও আছে। প্রথম একশো জন ডাউনলোডকারীকে দেওয়া হবে সেরা তিনটে পুজোয় ২০ ন্যানোসেক করে এক্সট্রা টাইম। আর লাকি ড্র’র মাধ্যমে নির্বাচিত সেরা বিজেতাকে দেওয়া হবে মায়ের অটোগ্রাফ দেওয়া পার্সোনাল হাই-ফাই ত্রিশূল। এটা সঙ্গে থাকলে কোনও মেয়ের পার্সোনাল সেফ্টি নিয়ে চিন্তা? ছোঃ!

পুজোর দু’মাস আগে থেকে শারদীয়ারা স্টলে স্টলে, কিন্তু কিনে এনেও পড়া হয়ে ওঠে না। ধুস! আবেগ-থরথর, প্রতিবাদ-গরগর ফেসবুক স্টেটাস পড়তে পড়তে ‘রিড মোর’ দেখলেই আর পড়ি না, আর ২৭৬ পাতা খুদি খুদি অক্ষরওলা পুজোসংখ্যা পড়ব? এই পুজোয় নিজের পুজোসংখ্যা নিজেই লিখুন, অবশ্যই ১৪১ ক্যারেক্টার-এর মধ্যে। লেখা ছাপান টুইটার-হাতলে, ‘আমি লেখক’ হ্যাশট্যাগ-এ। স্মার্ট হতে ইউজ করুন অ্যাব্রিভিয়েশন: হাই (হা ইশ্বর, ঈ লিখবেন না), হ্যালো (হ্যাজালেই লোকসান), হাহাকার (হাসতে হাসতে কানে রুমাল)!

ফি-বছর ভাসান নিয়ে মহা হুজ্জোত! বলির পাঁঠার মতো টেনেহিঁচড়ে ম্যাটাডোরে ঠাকুর তোলা, সেই গাড়িতেই সব্বাই গাদাগাদি, তেত্রিশ মিনিটের বাবুঘাট তিন ঘণ্টা। সঙ্গী আপদ: ভাসান-ভেনু বাবুঘাট না আর্মেনিয়ান ঘাট, টাইম সন্ধে ছ’টা না রাত দশটা, ফিরতি পথে হুইস্কি না রাম, খ্যাচামেচি। এ বছর বরং খাল কেটে গঙ্গা আনুন। ইয়েস, আপনার প্যান্ডেলে। পাড়ার বেকার ছেলেদের ‘প্যান্ডেলে গঙ্গা আনুন’ প্রকল্পের অধীনে ‘দুশো দিনের কাজ’-এ লাগিয়ে দিন। দোলের দিন থেকে প্রজেক্ট হাতে নিলে মহালয়ায় আপনার প্যান্ডেল-পার্শ্বে পতিতোদ্ধারিণী বইবেনই, বাজি! সেখানেই মহালয়ায় তর্পণ, সপ্তমীতে কলাবউ চান, পুজোর তিন দিন প্রতিমার মহাস্নান। একাদশীতেই ঠাকুর-বিসর্জনের সরকারি ফতোয়াকে জলে ভাসিয়ে আরও তেরো দিন ঠাকুর প্যান্ডেলে রাখুন, মায়া ঘুচলে প্যান্ডেল-লাগোয়া গঙ্গা-ক্যানেলে টুপুস করে ডুবিয়ে দিন। বিজয়া সম্মিলনীতে পাড়ায় পাড়ায় গঙ্গা-খালে আইএসএল (ইন্ডিয়ান সুইমিং লিগ) আয়োজন করুন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

pujo anandabazar rabibasariya
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE