Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

রিয়েলিটি শো

তত দিনে কসমেটিক সার্জারি মার্কিন মুলুকে হামেশাই হচ্ছে। সাধারণ, মাঝারি চেহারা, তাই লোকে আমায় পাত্তা দেয় না— এ সব মনে হুল ফোটালেই মানুষ টুক করে সেঁধিয়ে যাচ্ছে ডাক্তারের চেম্বারে। তার পর নাক টিকোলো করে, হরিণ-চোখ বানিয়ে, মেদ কমিয়ে হাসিখুশি বেরিয়ে আসছে। কিন্তু সেটা বেশ ব্যয়বহুল। ফলে এই সার্জারি করানোর ক্ষমতা সব আমেরিকানদের ছিল না। সেখানেই টোপ ফেলল এই শো। বলল, কিস্যু খরচ করতে হবে না।

শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৪ ০০:০৫
Share: Save:

তত দিনে কসমেটিক সার্জারি মার্কিন মুলুকে হামেশাই হচ্ছে। সাধারণ, মাঝারি চেহারা, তাই লোকে আমায় পাত্তা দেয় না— এ সব মনে হুল ফোটালেই মানুষ টুক করে সেঁধিয়ে যাচ্ছে ডাক্তারের চেম্বারে। তার পর নাক টিকোলো করে, হরিণ-চোখ বানিয়ে, মেদ কমিয়ে হাসিখুশি বেরিয়ে আসছে। কিন্তু সেটা বেশ ব্যয়বহুল। ফলে এই সার্জারি করানোর ক্ষমতা সব আমেরিকানদের ছিল না। সেখানেই টোপ ফেলল এই শো। বলল, কিস্যু খরচ করতে হবে না। আপনি আসবেন, আমাদের সার্জেন, এক্সারসাইজ এক্সপার্ট, হেয়ারড্রেসার, স্টাইলিস্টরা সবাই রেডি। সবাই মিলে আপনার ভোল পালটে দেবেন পুরো। আরও একটা মজা আছে। স্টুডিয়োর অন্দরে যখন এই পরিবর্তন চলছে, তখন আপনার বাড়ির ও কাছের লোক কিচ্ছুটি দেখতে-জানতে পাবে না। আপনি যখন এক্কেবারে অন্য মানুষ হয়ে যাবেন, তখন ফেরত গিয়ে দেখা দেবেন তাদের। তারা আপনাকে দেখে আদৌ চিনতে পারল কি না, পারলে কতটা অবাক হল, এই নতুন চেহারা পছন্দ করল কি করল না, আঁতকে উঠল না খুশিতে উথলে উঠল: রেকর্ড করবে ক্যামেরা।

এক সিজন শো চলার পরই বাড়ল চেঁচামেচি, নিন্দে। বলা হল, এই শো বলতে চাইছে সৌন্দর্য পেতে গেলে কসমেটিক সার্জারিই করাতে হবে, আর অসম্ভব অস্বাভাবিক সব লক্ষ্য তুলে ধরছে মানুষের সামনে। শারীরিক সৌন্দর্যকে মাত্রাতিরিক্ত পাত্তা দিয়ে পিছিয়ে দিচ্ছে মননকে। খুন করছে প্রকৃত সভ্যতাকে। মেয়েদের কী ভাবে পণ্য বানিয়ে তুলতে হয়, চোখে আঙুল দিয়ে শেখাচ্ছে।

প্রোগ্রামটা বন্ধ হয়ে গেলেও, প্রভাব পড়েছিল সাংঘাতিক। এর পর মেক-ওভার, গ্রুমিং’কে কেন্দ্র করে যত শো হয়েছে, সবক’টাকেই নাকি পথ দেখিয়েছিল এই শো। ২০০৪ সালে এম টিভিতে ‘আই ওয়ান্ট আ ফেমাস ফেস’ বলে একটা বিতর্কিত শো চলেছিল বছরখানেক ধরে। তাতে, কমবয়সি ছেলেমেয়েরা আসত, তাদের প্লাস্টিক সার্জারি করে কোনও কোনও তারকার মতো দেখতে করে দেওয়ার চেষ্টা চলত। কেউ কেউ তাতে ব্র্যাড পিট, জেনিফার লোপেজ-এর মতো দেখতে হয়ে গিয়েছিল ঠিকই, অনেকে কিন্তু অসুস্থও হয়ে পড়েছিল।

সম্প্রতি আবার ‘এক্সট্রিম মেকওভার’কে গালমন্দ করা শুরু হয়েছে। কারণ, ভ্যালেরিয়া নামের একটি রাশিয়ান মেয়ে সারা শরীরে গুচ্ছের ছুরি-কাঁচি চালিয়ে পুরো বার্বি ডলের মতো দেখতে বানিয়ে ফেলেছেন নিজেকে। তার পর আসতে শুরু করেছে তাঁর নানাবিধ অসুস্থতা ও শারীরিক বিকৃতির খবর। ফলে, নিন্দুক ফের সরব। কেন যে সেই-ইই শো’টা সমাজের মাথাটা চিবিয়ে খেয়েছিল সে বার!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE