Advertisement
০৪ মে ২০২৪
International Space Station

International Space Station: বড় ফাটল আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে! ভেঙে পড়ার আশঙ্কা, ঝুঁকি বাড়ছে মহাকাশচারীদের

ফাটলগুলি বন্ধ করা না গেলে অত্যন্ত শক্তিশালী মহাজাগতিক রশ্মি ও নানা ধরনের ক্ষতিকারক মহাজাগতিক বিকিরণ ঢুকে পড়তে পারে মহাকাশ স্টেশনে।

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন। -ফাইল ছবি।

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন। -ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২১ ১৮:৫৫
Share: Save:

বড় বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন। বেশ কয়েকটি জায়গায় বড়সড় ফাটল ধরা পড়েছে আন্তর্জাতিক ফুটবল মাঠের দৈর্ঘ্যের মহাকাশ স্টেশনে। তড়িঘড়ি ব্যবস্থা না নেওয়া হলে ফাটলগুলি আরও বড় হতে পারে। ছড়িয়ে পড়তে পারে মহাকাশ স্টেশনের অন্যত্রও। এমনকি সেই সব জায়গার বিভিন্ন অংশ ভেঙে পড়তে পারে মহাকাশে। যা মহাকাশে আবর্জনা (‘স্পেস ডেব্রি’) হয়ে বিপদ ঘটাতে পারে বহু মহাকাশযান ও পৃথিবীর বিভিন্ন কক্ষপথে থাকা বহু উপগ্রহেরও।

রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমস-এর তরফে এই খবর দিয়ে জানানো হয়েছে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফাটলগুলি বন্ধ করা না গেলে অত্যন্ত শক্তিশালী মহাজাগতিক রশ্মি ও নানা ধরনের ক্ষতিকারক মহাজাগতিক বিকিরণ ঢুকে পড়তে পারে মহাকাশ স্টেশনে।

ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩৭০ কিলোমিটার উপরে পৃথিবীর কাছের কক্ষপথে (‘লো-আর্থ অরবিট’) থাকা মহাকাশ স্টেশনে এই মুহূর্তে রয়েছেন মোট ১১ জন মহাকাশচারী। এঁদের মধ্যে অন্যতম নাসা, রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘রসকসমস’, জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘জাক্সা’ ও ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (‘এসা’)-র মহাকাশচারীরা। দিনকয়েক আগে নাসার তরফে জানানো হয়েছিল, এত বেশি সংখ্যায় মহাকাশচারী রয়েছেন এখন মহাকাশ স্টেশনে যে ঘুমানোর জন্য তাঁদের স্থানাভাব হচ্ছে।

রসকসমস-এর তরফে মঙ্গলবার জানানো হয়েছে, বেশ কয়েকটি জায়গায় বড় বড় ফাটল ধরা পড়েছে মহাকাশ স্টেশনের। যে বিশেষ অংশে ফাটলগুলি ধরা পড়েছে, তার নাম ‘জারিয়া মডিউল’। পৃথিবী থেকে মহাকাশচারীদের জন্য পাঠানো গবেষণার যাবতীয় যন্ত্রপাতি, তাদের যন্ত্রাংশ, অণু উদ্ভিদ ও অণুজীবদের প্রাথমিক ভাবে রাখা হয় মহাকাশ স্টেশনের এই ‘ফাংশনাল কার্গো ব্লক’-এই। রাখা হয় মহাকাশচারীদের জন্য পাঠানো যাবতীয় খাদ্যদ্রব্যও।

নাসা জানিয়েছে, মহাকাশ স্টেশনকে কক্ষপথে স্থাপনের জন্য তার বিভিন্ন অংশ উৎক্ষেপণ শুরু হয়েছিল ২৩ বছর আগে। মহাকাশ স্টেশনের প্রথম যে অংশটির উৎক্ষেপণ হয়েছিল ১৯৯৮ সালের ২০ নভেম্বর, সেটি ছিল এই ফাংশনাল কার্গো ব্লক। ফলে, মহাকাশ স্টেশনের এটাই সবচেয়ে পুরনো অংশ।

২৩ বছর বয়সী মহাকাশ স্টেশনের অন্যান্য অংশেও এর আগে ফাটল ধরতে দেখা গিয়েছিল। গত মার্চে মহাকাশ স্টেশনের ‘জ্‌ভেজদা মডিউল’-এও ধরা পড়েছিল বেশ কয়েকটি ফাটল। তবে সেগুলি ছিল মাথার চুলের মতো সরু। রুশ মহাকাশচারীরা সেগুলি দ্রুত মেরামতও করেছিলেন। এই মডিউলে দুই মহাকাশচারীর থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। তা ছাড়াও গোটা মহাকাশযানের লাইফ সাপোর্ট ব্যবস্থাই রয়েছে এই অংশে। এমনকি সেই লাইফ সাপোর্ট ব্যবস্থা কাজ না করলে তার জন্য বিকল্প ব্যবস্থাও রাখা আছে মহাকাশ স্টেশনের এই অংশে।

উপরে- রাশিয়ার বানানো মহাকাশ স্টেশনের ‘জারিয়া মডিউল’। নীচে- আমেরিকার বানানো 'ইউনিটি নোড'। জোড়া হচ্ছে একে অন্যের সঙ্গে মহাকাশে। ১৯৯৮-এর  ডিসেম্বরে। ছবি সৌজন্যে- নাসা।

উপরে- রাশিয়ার বানানো মহাকাশ স্টেশনের ‘জারিয়া মডিউল’। নীচে- আমেরিকার বানানো 'ইউনিটি নোড'। জোড়া হচ্ছে একে অন্যের সঙ্গে মহাকাশে। ১৯৯৮-এর ডিসেম্বরে। ছবি সৌজন্যে- নাসা।

এই মাসেই মহাকাশ স্টেশনের বড় বিপদ ঘনিয়ে এনেছিল রসকসমস-এর পাঠানো গবেষণার মডিউল ‘নওকা’। মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছনোর পর সেই নওকা-র জেট থ্রাস্টারগুলি এতটাই সজোরে ধাক্কা মেরেছিল যে কক্ষপথে নিজের অবস্থান থেকে হঠাৎই বিপজ্জনক ভাবে অনেকটা সরে গিয়েছিল মহাকাশ স্টেশন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

International Space Station
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE