ক্ষতবিক্ষত মেয়েবেলায় তিনি দিনের পর দিন বাবার হাতে মাকে বেধড়ক মার খেয়ে শেষে ঘর ছাড়তে দেখেছিলেন। পড়াশোনার প্রবল আগ্রহ থাকলেও বাবা আর সৎ মা ১৩-য় পা দেওয়ামাত্র তাঁর বিয়ে দিলেন দ্বিগুণের বেশি বয়সি বরের সঙ্গে। শুরু হল আর এক দুঃস্বপ্ন।
মা হলেন ১৪ বছর বয়সে, আর ২৫ বছর বয়সে তিন ছেলেমেয়ে নিয়ে সহায়-সম্বলহীন অবস্থায় দিল্লির ট্রেনে উঠলেন। পড়ে পড়ে মার খেতে চাননি তিনি। আস্থা রেখেছিলেন নিজের ক্ষমতায় আর সন্তানদের দিতে চেয়েছিলেন সুস্থ জীবনের ঠিকানা। ভবিষ্যতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতে করতেই তিনি হয়ে উঠলেন ‘আলো-আঁধারি’র মতো বইয়ের জন্য পুরস্কারজয়ী লেখিকা বেবি হালদার।
সোনাগাছির ভিতর একটি অসরকারি সংস্থা পরিচালিত এক কামরার ছোট্ট স্কুলঘরে সেই বেবি এখন বাংলা আর হিন্দির দিদিমণি। বদনাম-গলির অন্ধকারে ডুবে থাকা শিশুদের তিনি আলোর দিশা দেখাতে চাইছেন। অমর্যাদা, নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে বড় হওয়া এই বাচ্চাগুলোর জন্যই প্রতিদিন হালিশহরের বাড়ি থেকে ট্রেনে করে যাতায়াত করেন তিনি। এদের মধ্যে নিজের শৈশবের ছায়া দেখে দম বন্ধ হয়ে আসে তাঁর।