মস্ত বড় দু’টো ঝোলা। এক একটার ভিতরে অন্তত পনেরো কেজি করে আনাজ আছে। শসা, টোম্যাটো, গাজর— এই সব। কথা বলতে বলতেই তুলে মোটরবাইকের হাতলে ঝুলিয়ে দিলেন কুন্তী। পা রাখার জায়গাটায় বস্তার মধ্যে আলু। কম করে হলেও আধ কুইন্টাল ওজন হবে। পিছনে ঝোলায়, বস্তায় আরও নানা কিছু। সবটা নিয়ে দু’চাকায় পুরুলিয়ার হাট চষে বেড়ান কেন্দার কুন্তী গড়াই।
বয়স বছর তিরিশেক। মানবাজার, জিতুঝুড়ি, গোপালনগর, কেন্দার লোকজনের কাছে তাঁর হেলমেট পরা মুখটা বেশ পরিচিত। কুন্তীর রোজগারেই চলে সংসার। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা। স্কুলে পড়া ছেলে। কুন্তীকে কেউ জায়গা ছেড়ে দেয়নি। ১৭ বছরে বিয়ে। জানাচ্ছেন, বর্ধমানের মাল্লারপুর গ্রামে ছিল শ্বশুরবাড়ি। বিয়ের তিন মাসের মাথায় অসুখে ভুগে স্বামী মারা যান। গর্ভে সন্তান নিয়ে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন বাপের বাড়িতে।
কুন্তীর বাবা ফণী গড়াই বলেন, ‘‘জমি জমা নেই। ধারদেনা করে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলাম। মেয়েটাই সমস্ত কিছু করে। ও-ই সংসারটা চালায়।’’ মা শিবানী গড়াইয়ের মনে পড়ে, বাড়ি আসার কয়েক মাস পরে ছেলের জন্ম দিয়েছিলেন কুন্তী। সেই ছেলেও এখন হাইস্কুলে উঠে গেল।