বঙ্গ ক্রিকেট থেকে মণি-মুক্ত খুঁজে বের করতে এক সপ্তাহ পরেই শহরে চলে আসছেন ক্রিকেট বিশ্বের দুই কিংবদন্তি ওয়াকার ইউনিস ও মুথাইয়া মুরলীধরন। আগামী শুক্রবার সেই দিন। পরের দিন থেকে কাজেও নেমে পড়বেন তাঁরা। ১৫ থেকে ১৮ মার্চ এই চার দিনে তাঁরা বেছে নেবেন এই শহরের প্রতিভাবান পেসার ও স্পিনারদের।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ইডেনের ক্লাব হাউসে সিএবি প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়ার ঘরে বসে সেরা ক্রিকেটার তৈরির এই প্রকল্পের নীল নকশা চূড়ান্ত করে ফেললেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। যাঁর দেখানো পথেই নতুন করে বাংলা ক্রিকেটের সাপ্লাই লাইন গঠনের কাজ শুরু করতে চলেছে সিএবি। যদিও এই প্রকল্পে সিলমোহর পড়া এখনও বাকি। তবে সোমবার ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যদের সামনে সৌরভ নিজেই এই প্রকল্পের ‘ডেমনস্ট্রেশন’ দেওয়ার পর এই ব্যাপারে তাঁরা সম্মতি দিতে কোনও ইতস্তত করবেন বলে মনে করে না ওয়াকিবহাল মহল। এক কর্তা বলেই দিলেন, “বাংলার ক্রিকেটে এমন আধুনিক ও বাস্তবসম্মত প্রকল্প যখন আর আসেইনি, তখন তো এতে সিলমোহর না পড়ার কোনও কারণ আছে বলে মনে হয় না।”
শহরের ৯৪টি ক্লাব, বাংলার বিভিন্ন বয়সভিত্তিক ও সিনিয়র দল থেকে নেওয়া আড়াইশোরও বেশি ক্রিকেটারকে বেছে নিয়ে আগামী ১৫ তারিখ সল্টলেকের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে ওয়াকার, মুরলীদের সামনে আনা হবে। এই দু’জনের সঙ্গে থাকবেন সৌরভ নিজেও। পেসারদের কোচ হিসেবে কার্টলে অ্যামব্রোজের আসার কথা থাকলেও তিনি শেষ মুহূর্তে জানিয়েছেন, নিয়মিত সময় দিতে পারবেন না। তাই ওয়াকার ইউনিসেই আস্থা রাখছে সিএবি। বছরে চার বা পাঁচ বার এঁরা আসবেন প্রকল্পকে এগিয়ে দেওয়ার জন্য। প্রতিবারই এক সপ্তাহ থেকে দশ দিন করে থাকবেন। বাকি সময়ে বাংলার বিভিন্ন দলের কোচেরা, যেমন অশোক মলহোত্র, গৌতম সোমদের (জুনিয়র) তত্ত্বাবধানে থাকবেন বাছাই ক্রিকেটাররা।
বিশেষজ্ঞ হিসেবে পেসারদের জন্য রণদেব বসুকে রাখা হচ্ছে। কিন্তু স্পিনারদের সারা বছর কে দেখাশোনা করবেন, সেই নিয়ে ধন্দে পড়েছে সিএবি। এই ব্যাপারে উৎপল চট্টোপাধ্যায়কে প্রস্তাব দেওয়া হলেও তিনি ‘ব্যক্তিগত কারণে’ সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন। ফলে তাঁর জায়গায় কাকে এই দায়িত্ব দেওয়া যায়, সেই নিয়েই চিন্তা। উৎপলের স্তরের আর কোনও প্রাক্তন স্পিনারের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানালেন সিএবি কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে। তিনি বলেন, “এই ব্যাপারে আমরা আরও খোঁজ খবর চালাচ্ছি। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কাকে পাওয়া যায়।” দুই কিংবদন্তির সঙ্গে তিন বছরের চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে কোচিং কমিটি। ওয়ার্কিং কমিটির সবুজ সঙ্কেত মিললে তিন বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ হবেন তাঁরা। বিশ্বরূপ বললেন, “ওয়াকার, মুরলীকে চুক্তির ড্রাফট পাঠানো হয়েছে। তাতে ওঁদের আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন। ওয়ার্কিং কমিটি সম্মতি দিলে ১৫ তারিখ শহরে এসে ওঁরা চুক্তিতে সই করবেন।”
দুই তারকার জন্য কত ব্যয় করতে হবে সিএবি-কে, কোষাধ্যক্ষ তা না জানাতে চাইলেও সিএবি-র বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, দু’জনের প্রত্যেককে বছরে অন্তত পঞ্চাশ লক্ষ টাকা করে পারিশ্রমিক দেওয়া হবে। অর্থাৎ, দুই উপদেষ্টার জন্য এক কোটি টাকা ব্যয় হবে সিএবি-র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy