বোলিং অনেক ব্যালান্সড
টিম ইন্ডিয়া যে বিভাগে সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে, সেটা অবশ্যই বোলিং। দেশের মাঠে আমাদের স্পিনাররা বরাবরই বাঘ। রেকর্ডই বলে দিচ্ছে সে কথা। কিন্তু এখন দেশের মাঠে পেসাররাও বিপক্ষকে আক্রমণ করছে। আগ্রাসী হয়ে উঠছে মহম্মদ শামি, উমেশ যাদবরা। কোন উইকেটে কী রকম লেংথ, লাইনে বল করলে ফল পাওয়া যাবে, সেটা এই দু’জনই এখন খুব ভাল জানে। আর বিভিন্ন কন্ডিশন ও উইকেটে দ্রুত মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা এই জুটির আছে। মোহালির মতো স্পোর্টিং উইকেটে ওরা যেমন কার্যকর, তেমনই রাজকোটে পাটা উইকেটেও বিপক্ষকে প্রচুর রান দিয়েও অল আউট করার মতো ধৈর্য ওদের রয়েছে। ও দিকে টার্নার না পেলেও ব্যাটসম্যানদের চাপে রাখছে অশ্বিন-জাডেজারা। যেটা আগে হত না। এই ব্যাপারে অনিল কুম্বলেকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। লাইন ও লেংথের অ্যাডজাস্টমেন্ট ওর চেয়ে ভাল আর কে বোঝে? ওর এই জ্ঞানটাই ও দলের বোলারদের সঙ্গে শেয়ার করেছে বলেই আজ এই ফলটা পাওয়া যাচ্ছে। তা ছাড়া ওর চেয়ে ভাল স্পিন কোচ ভারতে আর কে হতে পারে?
টেল এন্ডাররাও ভরসা
লোয়ার অর্ডার ব্যাটিংয়ের ধারাবাহিক রান পাওয়াটা ভারতীয় দলে একটা বাড়তি অ্যাডভান্টেজ হয়ে উঠেছে। সাত থেকে ন’নম্বর ব্যাটসম্যানও যদি দলকে যথেষ্ট ভরসা জোগায়, তা হলে তো সেই দলের ব্যাটিং নিয়ে কোনও সমস্যাই নেই বলতে হয়। অশ্বিন, জাডেজার ব্যাটিং দক্ষতার উদাহরণ এর আগে আমরা অনেকবারই পেয়েছি। তার উপর এই জয়ন্ত যাদবও যথেষ্ট ভাল ব্যাটসম্যান। একজন ক্রিকেটারের ব্যাটিং-স্কিল কেমন, তা তার টেকনিক, শট বাছাই দেখে অনেকটাই বোঝা যায়। কে কত রান করল, তা নয় কিন্তু। গাদাগুচ্ছের রান তো টি টোয়েন্টিতে অনেকেই করে। তাই বলে তারা যে সবাই ভাল ব্যাটসম্যান, তা তো বলা যায় না। সে দিক থেকেই বলছি, এরা তিনজনই ভাল ব্যাটসম্যান। তাই মুরলী বিজয়, অজিঙ্ক রাহানেরা ফর্মে না থাকলেও ভারতীয় ব্যাটিং কিন্তু ভেঙে পড়ছে না। চেতেশ্বর পূজারা, বিরাট কোহালিদের ফর্মে থাকাটা এর অন্যতম কারণ হলেও মোহালিতেই তো আমাদের লোয়ার অর্ডার এবং টেল এন্ডাররা বুঝিয়ে দিল ওদের প্রয়োজন ঠিক কতটা।
টেলরমেডের প্রয়োজন নেই
ঘরের মাঠে টার্নার তৈরি করে ভারত সিরিজ জেতে— এই অভিযোগ এখন থেকে ক্রিকেটবিশ্ব আর তুলবে বলে মনে হয় না। নিউজিল্যান্ডের পর এ বার ইংল্যান্ড, তারাও নিশ্চয়ই এই ধারণা নিয়েই দেশে ফিরবে। বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট দলের এই সুনামটা তো অবশ্যই থাকা দরকার। রাজকোট, বিশাখাপত্তনম, মোহালি কোথাও ঘূর্ণি উইকেট ছিল না। তা সত্ত্বেও অশ্বিনের ১৫ ও জাডেজার ১০ উইকেট নেওয়াই প্রমাণ করে দিল টেলরমেড পিচ না পেলেও ওরা তা থেকেই উইকেট তুলতে পারে। ম্যাচ জেতাতে পারে। টেস্ট জয়ের পর শুনলাম বিরাট এটা নিয়ে ব্যঙ্গও করেছে। এটা ও এখন করতেই পারে। কারণ, আর মনে হয় টেস্ট জিততে ওকে উইকেটের উপর নির্ভর করে থাকতে হবে না।
ক্যাপ্টেন্সি আরও কুল
বিরাট এত দ্রুত পাল্টে ফেলছে নিজেকে যে, ভাবা যাচ্ছে না। ওর সেই ছটফটানি ভাবটা এখন আর নেই। অনেক শান্ত ও ঠান্ডা এখন। কিন্তু আগ্রাসনটা বদলায়নি। সেটা প্রকাশ পাচ্ছে অন্য ভাবে। অন্য সব ভাল খবরের সঙ্গে এটাও অবশ্যই একটা ভাল খবর। ফিল্ডিং সাজানো বা বোলিং চেঞ্জ-এ একদম তাড়াহুড়ো নেই। সতীর্থদের সঙ্গে আলোচনাও করছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে। একজন ভাল ক্যাপ্টেনের সব রকম গুণই দেখা যাচ্ছে ওর মধ্যে। তবে এটা তো ঠিকই যে, ভাল দল না পেলে একজন ক্যাপ্টেন তার দক্ষতা দেখাতে পারে না। যেমন একটা সময় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় পেয়েছে। মহেন্দ্র সিংহ ধোনিও পেয়েছে।
কিপার নিয়ে চিন্তা নেই
ভারতীয় দলে কিপার নিয়ে কোনও লড়াই আছে বলে মনে করি না। একটা প্রতিযোগিতা তৈরির চেষ্টা হচ্ছে বটে। কিন্তু সেটা অসম। কারণ, ঋদ্ধিমান সাহাই এখন দেশের সেরা কিপার। আর বাকিরা ওর চেয়ে অনেক পিছিয়ে। পার্থিব পটেলও। ঋদ্ধির চোটের জন্য পার্থিব একটা টেস্টে ভাল ব্যাটিং করে দিতেই পারে। তাই বলে ঋদ্ধি সুস্থ হয়ে ওঠা সত্ত্বেও তাকে বাইরে রেখে পার্থিবকে দলে রাখার চেয়ে ভুল সিদ্ধান্ত আর হবে বলে মনে হয় না। ঋদ্ধি থাকা সত্ত্বেও পার্থিবকে শুধু ওপেনার হিসেবে রেখে দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু ব্যাটিং অর্ডারে ঋদ্ধি কার জায়গায় নামবে, সেটা বিরাটদের কাছে কঠিন সিদ্ধান্ত হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy