Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

সেই ‘ধন্যি মেয়েরা’ খেলেন ৩০ গোল

হাওড়া জগৎবল্লভপুরের যে মাঠে উত্তমকুমারের বিখ্যাত ছবি ‘ধন্যি মেয়ে’-র শুটিং হয়েছিল, সেখানেই নিয়মিত অনুশীলন করেন সুস্মিতা পাল, সুচরিতা জানা, সুচরিতা খাঁ, কাবেরি নিমাই, সনিয়া জানারা। বুধবার মেয়েদের কলকাতা লিগে তাঁরাই মুখোমুখি হয়েছিলেন গতবারের চ্যাম্পিয়ন দীপ্তি সঙ্ঘের

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫২
Share: Save:

এক ডজন বা দু’ডজন নয়, এক ম্যাচে তিরিশ গোল খেলেন ‘ধন্যি মেয়ে’-রা !

হাওড়া জগৎবল্লভপুরের যে মাঠে উত্তমকুমারের বিখ্যাত ছবি ‘ধন্যি মেয়ে’-র শুটিং হয়েছিল, সেখানেই নিয়মিত অনুশীলন করেন সুস্মিতা পাল, সুচরিতা জানা, সুচরিতা খাঁ, কাবেরি নিমাই, সনিয়া জানারা। বুধবার মেয়েদের কলকাতা লিগে তাঁরাই মুখোমুখি হয়েছিলেন গতবারের চ্যাম্পিয়ন দীপ্তি সঙ্ঘের। সেই ম্যাচেই চমকপ্রদ গোলের রেকর্ড হল। দীপ্তি সঙ্ঘ জিতল রেকর্ড সংখ্যক ৩০-০ গোলে। প্রথমার্ধে হল ১৬ গোল। ছাত্রীদের একের পর এক গোল করা দেখে হিসাবই রাখতে পারছিলেন না দীপ্তি সংঘের কোচ সুজাতা কর। ভারতীয় দলের প্রাক্তন স্ট্রাইকার বলছিলেন, ‘‘আমি তো গুনেছি ২৯ গোল। কিন্তু রেফারির হিসাবটাই হয়তো ঠিক। আমাদের পুজা কর্মকার (৮), স্বাতী দেবনাথ (৬), কবিতা সোরেন (৫) বেশি গোল করেছে। তবে আমি খুশি নই। দুর্বল দলের বিরুদ্ধে খেলতে ভাল লাগে না।’’ আর বারাসতের মাঠে যাঁরা আড়াই ডজন খেলেন, তাদের মধ্যে অবশ্য কোনও অনুশোচনা নেই। তাঁরা কেউ কান্নাতেও ভেঙে পড়েননি। একাদশ শ্রেণির ছাত্রী সনিয়া জানা ছিলেন দলের একমাত্র গোলকিপার। তিনি হাসতে হাসতেই জঙ্গিপুরের বাড়ি ফিরলেন। ফেরার পথে দলের কর্তা শেখ ইদ্রিশ বলছিলেন, ‘‘দু’বছর আমরা লিগে দল নামাইনি। এ বার ফের দল গড়েছি। গ্রাম থেকে বেশির ভাগ স্কুল-কলেজে এনসিসি করা ছাত্রীদের জোগাড় করে এনেছি। ওদের বেশির ভাগ মাস খানেক হল ফুটবলে লাথি মারতে শিখেছে। খেলার মাঠে ওদের টেনে আনাই আমাদের লক্ষ্য ছিল। হেরে তাই কেউ হতাশ নয়। এরাই পরের বার দেখবেন দারুণ খেলবে।’’ আর একাই তিরিশ গোল খাওয়া গোলকিপার কৃষক পরিবারের মেয়ে সনিয়া বললেন, ‘‘কত গোল খেলাম বড় ব্যাপার নয়। শহরে গিয়ে ফুটবল খেলেছি এটাই আমার কাছে অনেক। মনের জোর অনেক বেড়ে গেল।’’

মেয়েদের লিগে দুর্বল দলের সংখ্যা অনেক। ২২ দলের মধ্যে দশ বা বারোটি দল শক্তিশালী। সাধারণত সাত-আট গোল হওয়ার পর বিজয়ী দল সৌজন্য দেখিয়ে গোলের সংখ্যা বাড়ায় না। রেকর্ড গোলের পরে ময়দান জুড়ে তাই প্রবল বিতর্ক। ময়দানে মেয়েদের ফুটবলের পরিচিত কর্তা ও লিগ কমিটির সদস্য রত্না নন্দী বলছিলেন, ‘‘এটা ঠিক হয়নি। মেয়েদের ফুটবল জনপ্রিয় করতে হলে নতুনদের টানতে হবে। এত গোলে হারলে পরের ম্যাচে ওরা মাঠে আসতেই চাইবে না। লিগ কমিটির সভা হলে আমি প্রশ্ন করব, কেন এত গোল তোরা দিলি।’’ যা শুনে দীপ্তি সঙ্ঘের কোচ সুজাতার মন্তব্য, ‘‘আমরা তো ২০১১তে জাতীয় গেমসে বাংলার হয়ে খেলতে নেমে ২৭ গোলে হারিয়েছিলাম ত্রিপুরাকে। তখন কেউ কিছু

বলেনি তো।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Football Women's League
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE