মহারণের আগে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে মোহনবাগান কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী এবং কিঙ্গসলে।—নিজস্ব চিত্র।
আর ৪৮ ঘণ্টাও বাকি নেই, ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের মহারণ ঘিরে ইতিমধ্যেই ফুটতে শুরু করেছে কলকাতা ময়দান। শুধু ময়দানই নয়, লাল-হলুদ এবং সবুজ-মেরুনের চিরাচরিত দ্বৈরথের স্বাদ নিতে দেশ এবং রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ভিড় জমাতে শুরু করেছে মহনগরীতে। আর আনুষ্ঠানিক ভাবে এই লড়াইয়েরই ঢাকে কাঠি পড়ে গেল শুক্রবার। এই দিনই দুই কোচের সাংবাদিক সম্মেলন দিয়ে শুরু হয়ে গেল মহারণের আনুষ্ঠানিক প্রহর গোনার পালা।
রবিবাসরীয় ডার্বির আগে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব তাঁবুতে এসে সাংবাদিক সম্মেলন করে গেলেন মোহনবাগান কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী এবং গত ডার্বির একমাত্র গোলদাতা কিঙ্গসলে। তবে সাংবাদিক সম্মেলন করতে প্রতিপক্ষ ক্লাবে এলেও যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করল না মোহনবাগান। সাংবাদিক সম্মেলন তো দূরঅস্ত্ সৌজন্য সাক্ষাৎও করলেন না দুই দলের কোচ এবং ফুটবলাররা। যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন না করলেও চিত্র সাংবাদিকরা অনুরোধ জানিয়েছিলেন অন্তত এক সঙ্গে দুই কোচের করমর্দনের ছবির জন্য। কিন্তু সেই অনুরোধও রাখেননি মোহন কোচ। সাংবাদিক সম্মেলন শেষে সটান বেরিয়ে যান ক্লাব থেকে।
তবে মাঠের বাইরে একে অন্যকে এড়িয়ে গেলেও হাইভোল্টেজ এই ম্যাচের আগে কিন্তু ইস্টবেঙ্গলকেই এগিয়ে রাখলেন মোহন কোচ। এ দিন শঙ্করলাল স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ধারে এবং ভারে মোহনবাগানের থেকে এই মুহূর্তে এগিয়ে ইস্টবেঙ্গলই। দুই কোচের প্রসঙ্গ তুলেও শঙ্করলাল বলেন, খালিদের থেকে তিনি অনেকটাই পিছিয়ে। তাঁর কথায়: “দল হিসেবে ইস্টবেঙ্গল অনেক শক্তিশালী। লিগে একটা ছাড়া আরও কোনও ম্যাচ হারেনি ওরা। ডুডুর সংযুক্তি নিঃসন্দেহে ইস্টবেঙ্গলের শক্তি বাড়িয়েছে।”
আরও পড়ুন: আক্রমকে চিনি না, হুঙ্কার আমনার
আরও পড়ুন: ‘কোচ-কর্তারা চাইলে মাঠে নামব ডার্বিতে’
খালিদ এবং তাঁর প্রসঙ্গে শঙ্করলাল বলেন, “মুম্বই এফসি-কে দীর্ঘ দিন কোচিং করিয়েছেন খালিদ। গত বার আইজলকে চ্যাম্পিয়নও করেছেন। সে ক্ষেত্রে আমার থেকে অনেকটাই এগিয়ে তিনি।”
এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে ঘুরে ফিরে আসে মোহনবাগানের অন্যতম ভরসা সোনি নর্দের কথাও। তবে, সোনির খেলা নিয়ে এ দিনও ধোঁয়াশা রেখে দিলেন বাগানের নতুন হেডস্যার। তিনি বলেন, “সোনিকে খেলানোর চেষ্ট চলছে। এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি ওকে খেলানোর বিষয়ে। ও না পারলে পরিবর্তনও আমার হাতে মজুদ আছে।”
তবে ইস্টবেঙ্গলে ডুডুর সংযোজন তাঁকে যে চিন্তায় রেখেছে তা শঙ্করলালের শরীরী ভাষা থেকেই স্পষ্ট। তবে, কোচ-সমর্থকদের এ দিন অভয় দিয়ে বাগান ডিফেন্সের অন্যতম প্রহরী কিঙ্গসলে জানিয়ে গেলেন ডুডুকে রোখার বিষয়ে তাঁরা তৈরি। তিনি বলেন, “ডুডু নিঃসন্দেহে ভাল ফুটবলার। তবে লড়াইটা একা ডুডুর সঙ্গে নয়। মোহনবাগানের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের। ফলে সব খেলোয়াড়ের উপরেই নজর রাখতে হবে। দু-তিন বছর আগে কলকাতা লিগে ডুডুর বিরুদ্ধে আমার খেলার অভিজ্ঞতা আছে।”
অন্য দিকে, মোহন কোচ খালিদকে এগিয়ে রাখলেও সেই তত্ত্ব মানতে নারাজ ইস্টবেঙ্গলের হেডস্যার। তিনি বলেন, “এখানে কোনও তুলনার জায়গা নেই। এই ম্যাচটা আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এই ম্যাচ থেকে জয় ছাড়া কিছু ভাবছি না।”
সাংবাদিক সম্মেলনে ইস্টবেঙ্গল কোচ খালিদ জামিল এবং উইলিস প্লাজা।
গত ডার্বিতে হারের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “আমরা গত ডার্বিতে চেষ্টা করেও জিততে পারিনি। মোহনবাগান বড় দল। ওদের হালকা ভাবে নেওয়ার কোনও জায়গাই নেই। ”
ডার্বির আগে সোনির না থাকাটাকেও বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাইছেন না লাল-হলুদ কোচ। তিনি বলেন, “ফুটবল এগারো জনের খেলা। সোনি নিঃসন্দেহে ভাল প্লেয়ার তবে, বাকিরাও আছে।”
পর পর ম্যাচ ড্র করে এমনিতেই সমালোচকদের নিশানায় খালিদের ডিফেন্সিভ স্ট্র্যাটেজি। তবে ডুডু এসে যাওয়ায় বড় ম্যাচে হয়তো নিজের চেনা ছকের বাইরে বেরোতে দেখা যেতে পারে খালিদকে। অন্তত এই দিনের সাংবাদিক সম্মেলনে সেই আভাসই দিয়ে রাখলেন আই লিগ জয়ী কোচ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy