Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ

ফুটবলের আকর্ষণে টেনিস ছাড়েন মাতাইস

বিস্মিত ফুটবল পণ্ডিতেরাও। রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল আয়াখ‌্স।

স্বপ্নভঙ্গ: আয়াখ‌্‌সের কাছে হারের পরে হতাশ রোনাল্ডো। গেটি ইমেজেস

স্বপ্নভঙ্গ: আয়াখ‌্‌সের কাছে হারের পরে হতাশ রোনাল্ডো। গেটি ইমেজেস

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৯ ০৫:১৬
Share: Save:

জুভেন্তাস ১ • আয়াখ্স ২

মাঠের মধ্যে দু’হাতে মুখ ঢেকে বসে রয়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। গত পাঁচ বছরে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে চার বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছেন তিনি। যার মধ্যে খেতাব জয়ের হ্যাটট্রিকও রয়েছে। অথচ জুভেন্তাসে অভিষেকের মরসুমেই বিপর্যয়। আয়াখ‌্স আমস্টারডামের কাছে হেরে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হল। ২০১০ সালের পরে এই প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে নেই পাঁচ বারের ব্যলন ডি’ওর জয়ী তারকা।

বিস্মিত ফুটবল পণ্ডিতেরাও। রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল আয়াখ‌্স। ঘরের মাঠে জুভেন্তাসের বিরুদ্ধে প্রথম পর্বে পিছিয়ে থেকেও দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছিল ইয়োহান ক্রুয়েফের স্মৃতিবিজড়িত ক্লাব। তা সত্ত্বেও তুরিনে এই ম্যাচের আগে রোনাল্ডোদেরই এগিয়ে রেখেছিলেন তাঁরা। কারণ, ১৯৭৪ সালের পরে আয়াখ‌্সের বিরুদ্ধে কখনও হারেনি জুভেন্তাস। তার উপরে এই ম্যাচ ছিল তুরিনে নিজেদের ঘরের মাঠে।

ফুটবল যে চরম অনিশ্চয়তার খেলা তা ফের প্রমাণিত। জুভেন্তাসকে ২-১ হারিয়ে (দুই পর্ব মিলিয়ে ৩-২) ২২ বছর পরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চারে নেদারল্যান্ডসের ক্লাব। নেপথ্যে ১৯ বছর বয়সি এক ডিফেন্ডার, মাতাইস দে লিখ‌্ত। ১৯৯৭ সালে আয়াখ‌্স যখন শেষ বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল খেলেছিল, তখন তাঁর জন্মই হয়নি!

মঙ্গলবার রাতেও ২৮ মিনিটে দুরন্ত হেডে গোল করে জুভেন্তাসকে এগিয়ে দেন রোনাল্ডো। যদিও রেফারি প্রথমে গোলের বাঁশি বাজাননি। ভিডিয়ো অ্যাসিট্যান্ট রেফারি (ভার) দেখে গোলের নির্দেশ দেন তিনি। ৩৪ মিনিটে সমতা ফেরান ডনি ফান দে বেক। ৬৭ মিনিটে জুভেন্তাস ডিফেন্ডারদের টপকে লেসি সুয়েনার কর্নারে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন মাতাইস। শুধু গোল করাই নয়। রোনাল্ডো, পাওলো দিবালাদের সামনে কার্যত প্রাচীর হয়ে উঠেছিলেন তিনি। আয়াখ‌্স ডিফেন্ডারের কাছে আটকে গিয়ে হতাশায় হলুদ কার্ডও দেখেন সি আর সেভেন। ম্যাচের পরে আয়াখ‌্স অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘ফলটা প্রত্যাশিত। আমরা যে শক্তিশালী দল, ফের প্রমাণ করলাম। যে কোনও দলকেই হারাতে পারি।’’

দুরন্ত গোলে ম্যাচের রং বদলে দেওয়ার মতোই নাটকীয় মাতাইসের উত্থানের কাহিনি। ১৯৯৯ সালের ১২ অগস্ট আমস্টারডামের কাছে লাইডারড্রপে জন্ম ডাচ ডিফেন্ডারের। স্বপ্ন ছিল টেনিস খেলোয়াড় হওয়ার। পাঁচ বছর বয়সে লিখ‌্তকে টেনিস অ্যাকাডেমিতেও ভর্তি করে দিয়েছিলেন তাঁর বাবা। কিন্তু এক বন্ধু তাঁকে ফুটবলে আকৃষ্ট করেন। ছেলের ফুটবলার হওয়ার স্বপ্নে বাধা দেননি বাবা-মাও। মাতাইসকে তাঁরা ভর্তি করে দেন স্থানীয় একটি ক্লাবে। সেখান থেকেই নয় বছর বয়সে আয়াখ‌্‌সের অ্যাকাডেমিতে সুযোগ পান মাতাইস। অ্যাকাডেমির কোচ তাঁর গতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। এখন গতিই অন্যতম অস্ত্র মাতাইসের। তার সঙ্গে রয়েছে দুর্দান্ত পাস দেওয়ার ক্ষমতা। তাই তাঁকে নিতে আগ্রহী রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা-সহ ইপিএলের ক্লাবগুলো। কিন্তু এই মুহূর্তে আয়াখ‌্‌সের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে চান না মাতাইস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE