নায়ক: মেলবোর্নে অসাধারণ ইনিংস অ্যালেস্টার কুকের।
তিনি ভয় পাচ্ছিলেন, অ্যাশেজ সিরিজের মাঝপথেই না নির্বাচকেরা তাঁকে দল থেকে বাদ দিয়ে দেন। সেই আশঙ্কা দূর হয়ে গেল বক্সিং ডে টেস্টে। মেলবোর্ন শুধু অ্যালেস্টার কুকের প্রত্যাবর্তনই দেখল না, দেখছে ইংল্যান্ডের ফিরে আসার লড়াইও। ওপেন করতে নেমে তৃতীয় দিনের শেষে কুক অপরাজিত ২৪৪ রানে। ইংল্যান্ডের স্কোর ন’উইকেটে ৪৯১। অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে ১৬৪ রানে এগিয়ে। সিরিজের প্রথম তিন টেস্ট হেরে অ্যাশেজ হাতছাড়া করার পরে হঠাৎ করে মেলবোর্নে জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে ইংল্যান্ড। এবং যে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন প্রাক্তন অধিনায়ক কুক। দেখাচ্ছে তাঁর মহাকাব্যিক ইনিংস।
আগের দিন শতরান করে সুনীল গাওস্করের অস্ট্রেলিয়ার সব মাঠে সেঞ্চুরি করার রেকর্ড ছুঁয়েছিলেন কুক। বৃহস্পতিবার ডাবল সেঞ্চুরি করে টেস্ট রান সংগ্রকারীদের তালিকায় ব্রায়ান লারা-কে (১১,৯৫৩) টপকে গেলেন কুক (১১, ৯৫৬ রান)। এবং ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান কিংবদন্তিকে টপকে গিয়ে কুকের প্রতিক্রিয়া, ‘‘সত্যি বলতে কী আমার ব্রায়ান লারার জন্য একটু খারাপই লাগছে। তবে হ্যাঁ, ওই তালিকায় নিজের নামটা দেখা একটা বিশেষ অনুভূতি তো বটেই।’’
শুধু লারাই নন, কুকের প়ঞ্চম ডাবল সেঞ্চুরি তাঁকে নিয়ে গেল আর এক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান কিংবদন্তির ওপরে। তিনি ভিভিয়ান রিচার্ডস। এত দিন এক জন সফররত ব্যাটসম্যান হিসেবে মেলবোর্নে সবচেয়ে বেশি রান ছিল রিচার্ডসেরই। ২০৮। সেই রেকর্ড ভেঙে দিলেন ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক। একই সঙ্গে এমসিজি-তে যে কোনও ইংরেজ ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ স্কোরের রেকর্ডও ভেঙে দিলেন তিনি। এত দিন যা ছিল ওয়ালি হ্যামন্ডের (২০০) দখলে।
অপরাজিত ডাবল সেঞ্চুরি করার পথে ৬৩৪ মিনিট ব্যাট করেছেন কুক। খেলেছেন ৪০৯ বল। কী মনে হচ্ছে এখন? পুনর্জন্ম হয়েছে? দিনের শেষে সাংবাদিক বৈঠকে এসে কুক বলেন, ‘‘নির্বাচকেরা আমাকে বাদ দিতেই পারতেন। সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে এজবাস্টনের পরে আমি কোনও রান করিনি।’’ চতুর্থ টেস্টের আগে পর্যন্ত এই সিরিজে ছয় ইনিংসে কুকের রান ছিল ৮৩। ‘‘আমি এটা জানতাম, নির্বাচকদের আস্থা আছে আমার ওপর। কিন্তু সেটা কত দিন? আমাকেও তো রান করতে হবে। যেটা এই সফরে করতে পারছিলাম না। তাই খুব হতাশ লাগছিল,’’ বলেন তিনি।
কুকের এই ম্যাচ ঘোরানো ইনিংসের পিছনে অবশ্য অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক স্টিভ স্মিথেরও অবদান আছে। ৬৬ এবং ১৫৩ রানের মাথায় কুকের ক্যাচ ফেলেন স্মিথ। নিজের সম্পর্কে কুক বলেছেন, ‘‘গত ১২ বছর ধরে নিজের দক্ষতার ওপর আমার অনেক সময়ই সন্দেহ জেগেছে। আবার যখন বড় রান করতে পেরেছি, তখন আবার নিজেকে নিয়ে গর্বও হয়েছে। আজ এমনই একটা দিন গেল।’’
নিজের প্রত্যাবর্তনের পিছনে তাঁর সতীর্থদের অবদানের কথাও বলেছেন কুক। ধন্যবাদ দিয়েছেন ইংল্যান্ড টিমের ক্রিকেটারদের। এ দিন যেমন কুকের সঙ্গে অনেকক্ষণ সঙ্গ দিলেন স্টুয়ার্ট ব্রডও (৫৬)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy