Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

নায়কের মুখে শহরের কথা

তখন ২০১০ সাল। হুগলির মশাটে একটি স্কুলস্তরের ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলেন শিলিগুড়ি সাই-এর তৎকালীন কোচ সমীর পাল। সেখানেই তাঁর নজরে পড়ে রবিবারের ডার্বির নায়ক আজহারউদ্দিন। তখন তিনি স্কুলস্তরে নিয়মিত খেলেন।

নিশ্চিন্ত: রবিবারের ম্যাচের নায়ক আজহারকে সোমবার দেখা গেল অনেক চাপম্ুক্ত হয়ে। শিলিগুড়ির হোটেলে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

নিশ্চিন্ত: রবিবারের ম্যাচের নায়ক আজহারকে সোমবার দেখা গেল অনেক চাপম্ুক্ত হয়ে। শিলিগুড়ির হোটেলে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

সৌমিত্র কুণ্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৭ ০২:২০
Share: Save:

তখন ২০১০ সাল। হুগলির মশাটে একটি স্কুলস্তরের ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলেন শিলিগুড়ি সাই-এর তৎকালীন কোচ সমীর পাল। সেখানেই তাঁর নজরে পড়ে রবিবারের ডার্বির নায়ক আজহারউদ্দিন। তখন তিনি স্কুলস্তরে নিয়মিত খেলেন। তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সেই বছরেই আজহারউদ্দিনকে শিলিগুড়ির সাই-এ নিয়ে আসেন সমীর পাল। তারপর থেকে সাই-এ কঠোর অনুশীলন শুরু হয় নেইমার ভক্ত এই তরুণ ফুটবলারের।

সোমবার দলের সঙ্গে শিলিগুড়ি থেকে ফেরার পথে কোচ সমীর পালের প্রসঙ্গই উঠে এসেছে আজহারউদ্দিনের মুখে। তিনি বলেন, ‘‘ওনার হাত ধরেই আমার সাইয়ে আসা। কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের মাঠেই কত অনুশীলন করেছি। আমাকে আরও ভাল খেলতে হবে।’’

নিজের পুরনো ছাত্রকে দরাজ সার্টিফিকেট দিয়েছেন সাই থেকে অবসর নেওয়া সমীরবাবু। তিনি বলেন, ‘‘আজহার চার বছর শিলিগুড়ি সাইতে আমার কাছে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। বলের উপর ওর নিয়ন্ত্রণ, ড্রিবলিং, ট্যাকেল, পাসিং ভাল।’’ পরে কলকাতা লিগে খেলার জন্য কলকাতা সাই দলে আজহারউদ্দিনকে সুযোগ করে দেওয়া হয় বলে জানান তিনি। সমীরবাবু জানান, আইএফএ শিল্ডে ২০১৫ সালে ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট ছিল আজহারউদ্দিন। সেরা স্কোরারও ছিলেন তিনি। ইউনাইটেড স্পোর্টিংয়ের হয়ে খেলেছেন। তাঁর দাদা ওয়াসিম গত বছর কলকাতা সাইতে খেলেছেন। আজহারউদ্দিনরা সাতভাই, চার বোন। চার ভাই ফুটবলে কেরিয়ার গড়তে নামায় পাড়ায় তাঁদের ফুটবল পরিবার বলেই একডাকে সকলে চেনে। আজহারউদ্দিনের দুই ভাই জাহির ও জাকিরও বর্তমানে শিলিগুড়ি সাইয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।

শিলিগুড়ি সাইয়ের বর্তমান কোচ বেণুগোপালও প্রশংসা করেছেন রবিবারের ডার্বির নায়কের। তিনি বলেন, ‘‘এখানে আমি ওর খেলা দেখেছি। ও অনেক দূর যাবে।’’ আজহারের প্রশংসা করেছেন ইস্টবেঙ্গলের তারকা ফুটবলার মেহতাব হোসেনও। তাঁর কথায়, ‘‘ও ভাল খেলেছে। কিন্তু এখানেই থেমে গেলে হবে না। এই জায়গাটা ওকে ধরে রাখতে হবে।’’

রবিবারের ডার্বির দ্বিতীয় গোল যেন অকাল উৎসব হাজির করেছে হুগলির প্রত্যন্ত মশাটে। রবিবারের ডার্বিতে আজহারউদ্দিনের গোলের পরেই তাঁর বাড়ি মশাট থেকে ফোন আসে আজহারউদ্দিনের ভাই জাহিরের কাছে। তখন জাহির বন্ধুদের সঙ্গে মাঠে বলে দাদার খেলা দেখছে।

ফোনের অপরপ্রান্তে আজহারউদ্দিনের বাবা কেবাতআলি মল্লিকের গলায় তখন বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। ততক্ষণে মশাট স্পোর্টিং ক্লাবের সদস্যরা হুল্লোড়ে মেতেছেন ঘরের ছেলের গোলে। কেবাতআলি বলেন, ‘‘ওর খেলায় আমরা সকলেই খুশি। অনেকে বাড়িতে এসে অভিনন্দন জানাচ্ছেন।’’ বাড়ি ফিরলে আজহারউদ্দিনের পছন্দের বিরিয়ানি রান্না হবে বলেও জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE