Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

নির্বাসনমুক্ত ইস্টবেঙ্গলের লক্ষ্য এ বার আইজল জয়

ফেডারেশনের নিষেধাজ্ঞার জেরে ষষ্ঠ বিদেশি সই করাতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। তার উপরে মালয়েশিয়ায় প্রস্তুতি শিবির শেষ করে কলকাতায় ফেরার পর থেকেই চোটের কারণে মাঠের বাইরে মহম্মদ আল আমনা।

মহড়া: আইজল ম্যাচের প্রস্তুতিতে সতীর্থদের সঙ্গে বোরখা। নিজস্ব চিত্র

মহড়া: আইজল ম্যাচের প্রস্তুতিতে সতীর্থদের সঙ্গে বোরখা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৪৪
Share: Save:

আইজল রওনা হওয়ার চব্বিশ ঘণ্টা আগে স্বস্তি ফিরল ইস্টবেঙ্গল শিবিরে। ফুটবলার সই করানোর ব্যাপারে যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন, সরকারি ভাবে বুধবারই তা তুলে নেওয়া হল। ১ ডিসেম্বর থেকে নতুন ফুটবলার সই করাতে পারবেন লাল-হলুদ কর্তারা। তবে নির্বাসন উঠলেও সাত লাখ টাকা জরিমানা দিতে হবে ইস্টবেঙ্গলকে।

ফেডারেশনের নিষেধাজ্ঞার জেরে ষষ্ঠ বিদেশি সই করাতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। তার উপরে মালয়েশিয়ায় প্রস্তুতি শিবির শেষ করে কলকাতায় ফেরার পর থেকেই চোটের কারণে মাঠের বাইরে মহম্মদ আল আমনা। এখনও পর্যন্ত আই লিগের কোনও ম্যাচই খেলতে পারেননি মাঝমাঠের অন্যতম ভরসা। আর এক বিদেশি কাশিম আইদারার খেলায় খুশি নন লাল-হলুদের স্প্যানিশ কোচ। কোনও ম্যাচেই প্রথম একাদশে তাঁকে রাখেননি মেনেন্দেস। লাজং এফসি-র দ্বিতীয় ম্যাচে পরিবর্ত হিসেবে মাত্র ১৪ মিনিট খেলিয়েছিলেন কাশিমকে। কার্যত তিন জন বিদেশি নিয়েই খেলছেন তিনি। বুধবার সকালে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন সংলগ্ন মাঠে ইস্টবেঙ্গলের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার (সিইও) বলছিলেন, ‘‘অনেক চাপমুক্ত লাগছে। ষষ্ঠ বিদেশি আনার জন্য এ বার আমাদের প্রস্তুতি শুরু করতে হবে।’’ নতুন বিদেশি কে? লাল-হলুদ সিইও বললেন, ‘‘নতুন ফুটবলারের সঙ্গে কবে থেকে চুক্তি করতে পারব, তা জানতাম না। সেই কারণেই এখনও কাউকে চূড়ান্ত করা হয়নি। কোচের সঙ্গে কথা বলেই ষষ্ঠ বিদেশির সঙ্গে চুক্তি করা হবে।’’

নির্বাসনমুক্তির দিনেই লাল-হলুদ শিবিরে আমনা ও কাশিমের ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা আরও জোরালো হয়েছে। ইস্টবেঙ্গল সিইও অবশ্য বলে দিলেন, ‘‘আমনা আমাদের চুক্তিবদ্ধ ফুটবলার। ও যদি সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে পারে, তার চেয়ে ভাল কিছু হতে পারে না।’’ আর কাশিম? তিনি বললেন, ‘‘কাশিমের সঙ্গেও আমাদের চুক্তি রয়েছে। এই মুহূর্তে আমরা শুধু ষষ্ঠ বিদেশিই নেব।’’ স্বস্তি ফেরার দিনেই নতুন স্পনসরের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের দূরত্ব প্রকাশ্যে চলে এল। সিইও বললেন, ‘‘ফুটবলার সই করানো নিয়ে কিছু ভুলের জন্যই এই নির্বাসনের শাস্তি। যদিও সেই সময় ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে আমরা যুক্ত হইনি।’’ বুধবারই কাতসুমি ইউসা প্রসঙ্গে লাল-হলুদ কর্তারা জানালেন, চুক্তি থাকা সত্ত্বেও জাপানি তারকা নিজের ইচ্ছেতেই নেরোকা এফসি-তে সই করেছেন। তাই ইস্টবেঙ্গলের কোনও দায় নেই।

কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস অবশ্য নির্বাসনমুক্তি নিয়ে উচ্ছ্বাস দেখালেন না। তাঁর পাখির চোখ এখন শনিবারের আইজল ম্যাচ। অনুশীলনের পরে বললেন, ‘‘দল নিয়ে আমি খুশি। এই মুহূর্তে শুধু আইজল ম্যাচেই মনঃসংযোগ করতে চাই।’’

দু’বছর আগে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে চমকে দিয়েছিল আইজল। ‘ভারতের লেস্টার সিটি’ও বলা হচ্ছিল মিজোরামের দলকে। কিন্তু এই মরসুমে আইজলের বেহাল অবস্থা। পাঁচ ম্যাচে দুই পয়েন্ট নিয়ে আই লিগ টেবলে সবার শেষে তারা। এখনও পর্যন্ত কোনও ম্যাচ জেতেননি আনসুমানা ক্রোমারা। হেরেছেন তিনটি ম্যাচ। ড্র দু’টি ম্যাচে। তবুও প্রতিপক্ষকে হাল্কা ভাবে নিচ্ছেন না ইস্টবেঙ্গল কোচ। তিনি বলেছেন, ‘‘কঠিন ম্যাচ। আমাদের প্রতিপক্ষ শুধু আইজল এফসি নয়, ওখানকার মাঠও। তবে পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারলে জেতার সম্ভাবনা রয়েছে।’’

চব্বিশ ঘণ্টা আগে রিয়াল কাশ্মীরকে হারিয়ে লিগ টেবলে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে মোহনবাগান। চার ম্যাচে আট পয়েন্ট সনি নর্দে-দের। এক ম্যাচ কম খেলে ছয় পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে নেমে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। যদিও এই পিছিয়ে যাওয়াকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না মেনেন্দেস। তাঁর কথায়, ‘‘যদি ৩ মার্চ (মিনার্ভা এফসি-র বিরুদ্ধে আই লিগে ইস্টবেঙ্গলের শেষ ম্যাচ) আমরা পয়েন্ট টেবলে পিছিয়ে যাই, তা হলে সেটা আমার কাছে হতাশার। এখন আমি শুধু সব ম্যাচ জেতা ছাড়া অন্য কিছু ভাবছি না।’’

ঘরের মাঠে আগের ম্যাচে চেন্নাই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে হারের পরে সমালোচিত হয়েছেন লাল-হলুদ কোচ। প্রাক্তন ফুটবলারদের কেউ কেউ তাঁর রণকৌশল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। এ দিন মেনেন্দেস জানিয়ে দিলেন, আইজলের বিরুদ্ধেও রণনীতি পরিবর্তন করার কথা ভাবছেন না। বললেন, ‘‘আগের ম্যাচে যে ভাবে খেলেছি, তা পরিবর্তন করতে চাই না। এ ভাবে খেলেই বেশি গোল করা লক্ষ্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Football I LEague East Bengal Aizawl F.C. AIFF
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE