Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

হুঁশিয়ারি দিয়েও সুনীলদের সমীহ করছেন জামাল

বিকেলে সেখানে বসেই বাংলাদেশের ইংরেজ কোচ জেমি ডে বললেন, ‘‘ভারত কিন্তু আমাদের চেয়ে মাত্র এক পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছে।  আমাদের দুর্বল ভাবলে ওরা ভুল করবে। ভুটানের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি। ফিটনেসে আমরাও সমানে সমানে পাল্লা দেব।’’

আগমন: সতীর্থের সঙ্গে জামাল (বাঁ দিকে)। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

আগমন: সতীর্থের সঙ্গে জামাল (বাঁ দিকে)। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:০০
Share: Save:

ভারতের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ ফুটবলের বাছাই পর্বের ম্যাচ খেলতে শুক্রবারেই কলকাতা চলে এল বাংলাদেশ। ভারতের মাটিতে পা দিয়েই ইগর স্তিমাচের দলের উদ্দেশে হুঙ্কারও দিয়ে রাখলেন বাংলাদেশের কোচ এবং অধিনায়ক।

এ দিন বেলা বারোটা নাগাদ কলকাতায় নামে বাংলাদেশ দল। বিমানবন্দর থেকেই তারা সরাসরি চলে যায় বাইপাস সংলগ্ন হোটেলে। বিকেলে সেখানে বসেই বাংলাদেশের ইংরেজ কোচ জেমি ডে বললেন, ‘‘ভারত কিন্তু আমাদের চেয়ে মাত্র এক পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছে। আমাদের দুর্বল ভাবলে ওরা ভুল করবে। ভুটানের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি। ফিটনেসে আমরাও সমানে সমানে পাল্লা দেব।’’

আর ইউরোপে বেড়ে ওঠা বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়ার হুঙ্কার, ‘‘ঘরের মাঠে চাপটা বেশি সুনীল ছেত্রীদের। কারণ ম্যাচটা ওদের জিততে হবে।’’ যোগ করেন, ‘‘প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে আবেগের এই ফুটবল ম্যাচটা হারতে চাই না। কড়া ট্যাকল, ধাক্কাধাক্কি হবেই। আমাদের দলে অনূর্ধ্ব-২৩ ফুটবলারের সংখ্যা বেশি। ভারতকে হারানোর জন্য মরিয়া তাগিদ ও তারুণ্যই আমাদের অস্ত্র।’’

বৃহস্পতিবারেই ঢাকায় বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের ম্যাচে কাতারের বিরুদ্ধে ০-২ হেরেছে বাংলাদেশ। সে প্রসঙ্গ তুললেই আফসোস ঝরে পড়ে বাংলাদেশ অধিনায়কের গলায়। বলেন, ‘‘কাতারের বিরুদ্ধে সুযোগ তৈরি করেও কাজে লাগাতে পারলাম না। নিজেই দু’টো সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করেছি। তিন বার গোললাইন থেকে বল বিপন্মুক্ত করেছে কাতার। ভাগ্য সঙ্গে ছিল না।’’

বাংলাদেশ অধিনায়কের জীবন চলচ্চিত্রকেও হার মানাতে পারে। বাবা-মা কিশোরগঞ্জের বাসিন্দা। সত্তরের দশকের শেষের দিকে তাঁরা ডেনমার্কে চলে যান। সেখানেই জন্ম ও বেড়ে ওঠা জামালের। ২০০৫ সালে তাঁর যখন ১৫ বছর বয়স তখন একদিন স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে কোপেনহাগেনের রাস্তায় এক বন্দুকবাজের গুলিচালনার সামনে পড়ে যান। চারটি গুলি বিঁধেছিল তাঁর শরীরে। এখনও ডান হাতে সেই জখম হওয়ার দাগ রয়েছে। সেই বৃত্তান্ত শুনিয়ে জামাল বলেন, ‘‘ভাগ্য ভাল থাকায় বেঁচেছিলাম। ওই ঘটনা আমাকে মানসিক ভাবে পরিণত ও পোক্ত হতে সাহায্য করেছে। অস্ত্রোপচারের ১৬ মাস পরে মাঠে ফিরেছিলাম। তাই শেষ পর্যন্ত লড়াই করাই আমার দর্শন।’’

সনি নর্দের সঙ্গে বাংলাদেশের ক্লাব শেখ জামাল ধানমন্ডির হয়ে অতীতে কলকাতায় আইএফএ শিল্ডে খেলে গিয়েছেন বর্তমান বাংলাদেশ অধিনায়ক। বলেন, ‘‘কলকাতার দর্শকদের সম্পর্কে আমার ধারণা রয়েছে। মঙ্গলবার মাঠে সুনীলদের বিরুদ্ধে ফুটবল-দ্বৈরথের পাশাপাশি গ্যালারির বিরুদ্ধ সমর্থনও
সামলাতে হবে।’’

ইতিবাচক মানসিকতা ও হুঙ্কারের মধ্যেও সুনীল ছেত্রী-উদান্ত সিংহ জুটির প্রসঙ্গ উঠতেই সমীহের সুর শোনা যায় জামালের গলায়। বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘‘এর আগে দু’বার ভারতের বিরুদ্ধে খেলেছি। প্রথম বার ১-১ শেষ হয়েছিল। দ্বিতীয় বার ফল হয় ২-২। ওই দু’টো ম্যাচেই গোল করেছিল সুনীল। ও আমাদের কাছে একটা বড়সড় বিপদ।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘ভারতের পুরো দলটার রিমোট কন্ট্রোলই সুনীলের হাতে। সঙ্গে উদান্তর গতি। গোলে গুরপ্রীত সিংহ সাঁধু! এই তিন জনের জন্যই ভারত ফেভারিট আমাদের বিরুদ্ধে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bangladesh India Football
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE