বাংলাদেশের মাঠে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির দল আর দেশে আইনি যুদ্ধে তাদের বোর্ড— দুটো লড়াই সম্পুর্ণ দুই মেরুতে। বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানকে গো হারান হারানোর ম্যাচে নামার আগে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে কড়া বাউন্সারের মুখে পড়তে হল বিসিসিআইকে। যে বাউন্সারের মুখে রীতিমতো অস্বস্তিতে বোর্ডের আইনজীবীরা।
দু’দিন আগে বোর্ডের তরফে পেশ করা হলফনামার শুনানি ছিল এ দিন। বিসিসিআইয়ের কাছে সেই লড়াইটা যতটা কঠিন হল, ততটাই সোজা হল ধোনিদের মীরপুরের ম্যাচ। হলফনামায় দেওয়া লোঢা কমিশনের বিভিন্ন সুপারিশের বিপক্ষে দেওয়া যুক্তিগুলো এ দিন মানতে চাননি প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুর ও বিচারপতি ইব্রাহিম কলিফুল্লাহ।
এ দিনই অবশ্য রায় শুনিয়ে দেননি দুই বিচারপতি। বিশ্বকাপে ভারত-পাক ম্যাচের আগের দিন, অর্থাৎ ১৮ তারিখ ফের শুনানির দিন ধার্য করেছেন। সে দিন আবার বিষেন সিংহ বেদী, কীর্তি আজাদদের মতো বোর্ড বিরোধী প্রাক্তন ক্রিকেটারদের বক্তব্যও শুনবেন বিচারপতিরা। শুনবেন কিছু রাজ্য সংস্থার বক্তব্যও।
হলফনামায় বোর্ডের বক্তব্য, বিচারপতি লোঢা ও তাঁর কমিশন সদস্যরা সুপারিশনামা পেশের আগে বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে নিলে ভাল করতেন। সেগুলি বাস্তবসম্মত কি না, তা বোঝার জন্য। তাই এখন লোঢা কমিশনের সঙ্গে বসার আর্জি জানিয়েছে বোর্ড। এর উত্তরে প্রধান বিচারপতি ঠাকুর মন্তব্য করেন, ‘‘লোঢা কমিশন গঠনের খবর যেখানে সারা দুনিয়া জেনে ফেলল, সেখানে আপনারা বলছেন, আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি! আপনারা কী করছিলেন? আলোচনার জন্য নেমন্তন্নর কার্ডের অপেক্ষায় ছিলেন? লোঢা কমিশনের সঙ্গে ফের বসার প্রয়োজন আছে কি না, তা আদালত ঠিক করবে। বোর্ড নয়।’’
‘এক রাজ্য এক ভোট’ সুপারিশ সম্পর্কে হলফনামায় বোর্ড যুক্তি দেয়, এমন হলে ফিফার মতো কেলেঙ্কারি বোর্ডেও হতে পারে। তা ছাড়া বোর্ড যে ক্রিকেট মানচিত্র তৈরি করে দিয়েছে, সেই অনুযায়ীই বিভিন্ন সংস্থা গঠন হয়েছে। জবাবে বিচারপতি ঠাকুর বলেন, ‘‘পঞ্চাশ বা একশো বছরে ফিফার একটা কেলেঙ্কারির জন্য এই নীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায় না। তা ছাড়া ক্রিকেটের মানচিত্র তৈরির অধিকার বোর্ডকে কে দিয়েছে? নিজেদের সুবিধামতো মানচিত্র তৈরি করে নিলেই হল?’’ মন্ত্রীদের ক্রিকেট প্রশাসনে থাকা নিয়ে প্রাক্তন বোর্ড প্রেসিডেন্ট এন কে পি সালভের প্রসঙ্গ ওঠায় আদালত প্রশ্ন তোলে, ‘‘একজন এনকেপি সালভে ছিলেন বলে সব মন্ত্রীকেই ক্রিকেট প্রশাসনে আসতে দিতে হবে? বোর্ড যেখানে সিএজি প্রতিনিধিকে প্রশাসনে চায় না না, সেখানে মন্ত্রীদের চাইছে কেন?’’ যার কোনও জবাব দিতে পারেননি বোর্ড কৌঁসুলি কে কে বেণুগোপাল।
এ ভাবেই সত্তরোর্ধ প্রশাসক, এক ব্যক্তি এক পদ, ক্রিকেট সম্প্রচারে বিজ্ঞাপন কমানোর সুপারিশ নিয়ে বোর্ডের পাল্টা যুক্তি একের পর এক উড়িয়ে দেন বিচারকরা। রাজ্য সংস্থাগুলির অনুদান ও তাদের ব্যয়ের বিবরণ পেশ করার নির্দেশও দেন তাঁরা। ওয়াকিবহাল মহল যেখানে আরও বড় অশনি সঙ্কেত দেখছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy