Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

শেষ আটে ঋদ্ধিদের আনার চেষ্টা

বোলিং, ফিল্ডিংয়ে উন্নতি না হলে শেষ চারে ওঠা যে বেশ কঠিন হবে বাংলার, তা এই ম্যাচই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল বঙ্গ শিবিরকে।

নায়ক: জোড়া শতরানের মালিক অনুষ্টুপ মজুমদার। গোয়ার বিরুদ্ধে রঞ্জি ম্যাচে সাত উইকেট নিয়ে উচ্ছ্বাস অশোক ডিন্ডার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

নায়ক: জোড়া শতরানের মালিক অনুষ্টুপ মজুমদার। গোয়ার বিরুদ্ধে রঞ্জি ম্যাচে সাত উইকেট নিয়ে উচ্ছ্বাস অশোক ডিন্ডার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

রাজীব ঘোষ
শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:০৭
Share: Save:

মঙ্গলবার পড়ন্ত বিকেলে ইডেনে ছোটখাটো এক মেলার ছবি। দুই দলের ক্রিকেটাররা ড্রয়ের শেষে নিজেদের মধ্যে হাত মেলালেন, তার পরে সবাই গোল হয়ে দাঁড়িয়ে শুনলেন ম্যাচ রেফারির সংক্ষিপ্ত বক্তব্য ও ম্যাচের সেরা অনুষ্টুপ মজুমদারের নাম ঘোষণা।

এ সব তো হয়েই থাকে। নিয়ম মাফিক। কিন্তু এর পরে যা যা হল, সেগুলো নিয়মে বাঁধা নয়। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে গোয়ার ক্রিকেটারদের গ্রুপ ছবি তোলা এবং বাংলার ক্রিকেটারদেরও সবাই মিলে একসঙ্গে ক্যামেরাবন্দি হওয়ার দৃশ্য দেখে মনে হল, দুই শিবিরেই বেশ স্বস্তির হাওয়া বইছে। গোয়ার নয় রঞ্জি মরসুম শেষ। কিন্তু বাংলা শিবিরে ফুরফুরে মেজাজ কেন? তাদের লড়াই তো শেষ হয়ে যায়নি।

কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার চাপ কাটানোটাই হয়তো বঙ্গ ব্রিগেডের কাছে স্বস্তির বড় কারণ হয়ে উঠল এ দিন। গত কয়েক দিনে যা বোলিং, ফিল্ডিং হয়েছে তাদের, তাতে শেষ আটে ওঠা নিয়েও দুশ্চিন্তার কালো মেঘ দেখা গিয়েছিল। এমনকী শেষ দিনেও। অনুষ্টুপ মজুমদার তাঁর ছ’রানের মাথায় নো বলে আউট হওয়ায় সে যাত্রায় বেঁচে যায় বাংলা। সেই অনুষ্টুপই এ দিন ফের সেঞ্চুরি হাঁকান। প্রথম ইনিংসের মতো। যে কীর্তি গতবার জয়পুরে রঞ্জির প্রথম ম্যাচে উত্তরপ্রদেশের বিরুদ্ধে গড়েন অভিমন্যু ঈশ্বরনও। অনুষ্টুপের আউট নাকচ না হলে বাংলা হয়তো আবার চাপে পড়ত।

বোলিং, ফিল্ডিংয়ে উন্নতি না হলে শেষ চারে ওঠা যে বেশ কঠিন হবে বাংলার, তা এই ম্যাচই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল বঙ্গ শিবিরকে। কার্যত তা মেনেও নিলেন অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি। দিনের শেষে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ফিল্ডিংয়ে আরও উন্নতি করা দরকার। বিশেষ করে ক্যাচিংয়ে। ডিন্ডার সঙ্গে যে বোলাররা বোলিং করছে, তারা যেন ঠিক জায়গায় বল রাখতে পারে, সে দিকটাও দেখতে হবে। আশা করি তারা তা করবেও।’’

না পারলে ২০১৫-১৬ মরসুমের মতো এ বারেও শেষ আট থেকেই ফিরে আসতে হবে বাংলাকে। এ বার কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলার সামনে গতবারের চ্যাম্পিয়ন গুজরাত। যারা লিগপর্বে ছ’টার মধ্যে পাঁচটা ম্যাচেই সরাসরি জিতে শেষ আটে উঠেছে।

তবে কোয়ার্টার ফাইনালে ভাল কিছু করার ব্যাপারে আশাবাদী মনোজ। বললেন, ‘‘আমরা আত্মবিশ্বাসী যে ভাল কিছু করতে পারব পরের ম্যাচে।’’ সে জন্য ভারতীয় টেস্ট দল থেকে ঋদ্ধিমান সাহা, মহম্মদ শামি ও বোর্ডের অনূর্ধ্ব ১৯ চ্যালেঞ্জার থেকে ঈশান পোড়েলকে এনে এই ম্যাচে খেলানোর চেষ্টাও হচ্ছে বলে তিনি জানান।

দিল্লিতে ভারত-শ্রীলঙ্কা টেস্ট শেষ হওয়ার কথা ৬ ডিসেম্বর। সে দিন বা নাগপুরের মতো এক দিন আগে খেলা শেষ হয়ে গেলে ঋদ্ধি, শামিদের পাওয়া যাবে কি না, বোর্ডের কাছে জানতে চেয়েছে সিএবি। বিরাট কোহালিদের টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কথা বলে যা পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছে বোর্ড। সায়ন ঘোষ, কণিষ্ক শেঠ, বি অমিতদের ওপর ভরসা করতে না পেরেই কি এই মরিয়া চেষ্টা বাংলার? সেটাই স্বাভাবিক। দুই ইনিংসে অশোক ডিন্ডা যেখানে সাত উইকেট নিয়েছেন, সেখানে অন্য দুই বোলার মিলে মাত্র পাঁচ উইকেট পান। ১১ ইনিংসে ৩০ উইকেট নিয়ে ডিন্ডা চলতি রঞ্জি ট্রফির সর্বোচ্চ শিকারিদের তালিকায় চার নম্বরে। যার পরে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কেও বলতে শোনা গেল, ‘‘ডিন্ডা তো ধারাবাহিক ভাবে উইকেট নিয়ে যাচ্ছে। ওকে কেন দলে নিচ্ছে না জাতীয় নির্বাচকরা, সে বিতর্কে ঢুকতে চাই না। তবে ওর বোধহয় একটা সুযোগ প্রাপ্য।’’

এ দিন ৩৩৪-৫ তুলে, ৪০৩ রানের ‘লিড’ নিয়ে চায়ের বিরতির আগে ডিক্লেয়ার করে দেন মনোজ। ২১৪ রানের পার্টনারশিপ গড়ে অনুষ্টুপ (১০৮ অপরাজিত)ও ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায় (১০২ অপরাজিত) ভালই ব্যাটিং প্র্যাকটিস সেরে নেন। মনোজ তাই বলছেন, ‘‘ব্যাটিং নিয়ে আমার চিন্তা নেই। আমাদের এক থেকে দশ সবাই ব্যাট করতে পারে।’’ কিন্তু বল হাতে নেমে আবার বাংলার সেইরকম বোলিং। যা আগের দিনও দেখা গিয়েছিল। দু’টি উইকেট নেন সেই ডিন্ডাই। বাকিরা সেই খালি হাতেই ফেরেন। এ সব চলতে থাকলে চললে জয়পুর থেকে হয়তো খালি হাতেই ফিরতে হবে।

রঞ্জি ট্রফি কোয়ার্টার ফাইনাল

৭-১১ ডিসেম্বর

গুজরাত-বাংলা (জয়পুর)

দিল্লি-মধ্যপ্রদেশ (বিজয়ওয়াড়া)

কেরল-বিদর্ভ (সুরত)

কর্নাটক-মুম্বই (নাগপুর)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE