Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
দেশের মাঠে ঘূর্ণি উইকেট বানানো নিয়ে আইসিসি ও ভারতের সংঘাত বাড়ছে

বেঙ্গালুরু নিয়ে প্রশ্ন রিপোর্টে

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বনাম আইসিসি— নতুন সংঘাতের গোলাবারুদ জমতে শুরু করেছে। নতুন এই সংঘাতের কেন্দ্রে বিরাট কোহালিদের ঘরের মাঠের ঘূর্ণি পিচ।

সরেজমিনে: ঘুরবে তো? রাঁচীতে মাঠে পৌঁছেই কভার সরিয়ে পিচ দেখতে নেমে গেলেন কোচ অনিল কুম্বলে। বল ঘোরার আশ্বাস খুঁজছেন? পিটিআই

সরেজমিনে: ঘুরবে তো? রাঁচীতে মাঠে পৌঁছেই কভার সরিয়ে পিচ দেখতে নেমে গেলেন কোচ অনিল কুম্বলে। বল ঘোরার আশ্বাস খুঁজছেন? পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৭ ০৪:০৬
Share: Save:

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বনাম আইসিসি— নতুন সংঘাতের গোলাবারুদ জমতে শুরু করেছে। নতুন এই সংঘাতের কেন্দ্রে বিরাট কোহালিদের ঘরের মাঠের ঘূর্ণি পিচ।

অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে চলতি সিরিজে এখনও পর্যন্ত দু’টি টেস্ট ম্যাচ হয়েছে। দুই জায়গাতেই ঘূর্ণি পিচ ছিল। পুণের পিচকে ‘পুওর’ আখ্যা দিয়েছেন আইসিসি ম্যাচ রেফারি। বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের পিচ নিয়েও ম্যাচ রেফারির রিপোর্টে মোটেও ভাল কথা লেখা নেই।

বিশ্বস্ত সূত্রে খবর, ম্যাচ রেফারি বেঙ্গালুরুর পিচকে ‘বিলো অ্যাভারেজ’ আখ্যা দিয়েছেন। ‘বিলো অ্যাভারেজ’ রেটিং মানে ‘পুওর’ অর্থাৎ নিম্নমানের চেয়ে এক ধাপ ওপরে কিন্তু খারাপ পিচের দিকেই নির্দেশ করে। একই সিরিজের পর-পর দু’টি টেস্টের পিচ নিয়ে এমন নেতিবাচক রেটিং কার্যত নজিরবিহীন। তবে চিন্নাস্বামীর আউটফিল্ডের প্রশংসা করে ‘ভেরি গুড’ রেটিং দিয়েছেন ম্যাচ রেফারি।

ভারতীয় ক্রিকেট মহলে উষ্মা তৈরি হয়েছে ক্রিস ব্রড-কে নিয়ে। প্রথম দু’টি টেস্টে তিনিই ছিলেন ম্যাচ রেফারি। কিন্তু মনের মধ্যে ক্ষোভ থাকলেও স্টুয়ার্ট ব্রডের পিতাকে নিয়ে সরকারি ভাবে কোনও অভিযোগ জানায়নি ভারতীয় দল বা ভারতীয় বোর্ড। রিচি রিচার্ডসন যে রাঁচী এবং ধর্মশালায় সিরিজের শেষ দু’টি টেস্টে ম্যাচ রেফারি থাকবেন, সেটা আগে থেকেই ঠিক ছিল। বেঙ্গালুরুর উত্তাপকে কেন্দ্র করে হট সিটে বদল হল, এমন কোনও ব্যাপার নেই।

পিচ নিয়ে মোট ছয় ধরনের রেটিং রয়েছে। এই ছয়টি রেটিং হচ্ছে যথাক্রমে: ১) ভেরি গুড (খুব ভাল), ২) গুড (ভাল), ৩) অ্যাভারেজ (গড়পরতা), ৪) বিলো অ্যাভারেজ (গড়পরতার চেয়ে খারাপ), ৫) পুওর (নিম্নমানের), ৬ আনফিট (খেলার অযোগ্য)। গত ৪ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ে নিয়ামক সংস্থার বোর্ড মিটিংয়ে খারাপ পিচের ক্ষেত্রে ‘ডিমেরিট’ পয়েন্ট দেওয়ার প্রথা চালু করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই ‘ডিমেরিট’ বা নেতিবাচক পয়েন্ট চালু হচ্ছে ‘বিলো অ্যাভারেজ’ রেটিং থেকে। যে রেটিং পেয়েছে চিন্নাস্বামীর বাইশ গজ। গড়পরতার চেয়ে খারাপ পিচ হলে পাবে ২ ‘ডিমেরিট পয়েন্টস’। পিচ নিম্নমানের হলে ৩ ‘ডিমেরিট পয়েন্টস’। আর খেলার অযোগ্য পিচ হলে ৫ ‘ডিমেরিট পয়েন্টস’। সিদ্ধান্ত হয়েছে, ৫ ‘ডিমেরিট পয়েন্টস’ জমে গেলেই সেই কেন্দ্রকে এক বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হবে। ১০ ‘ডিমেরিট পয়েন্টস’ হয়ে গেলে দু’বছরের জন্য সাসপেন্ড হবে।

পুণে এবং বেঙ্গালুরু, দু’টি কেন্দ্রই তাই বিপদসীমার কাছাকাছি এসে পড়েছে। পুণের ‘ডিমেরিট পয়েন্টস’ এখন ৩। বেঙ্গালুরুর ‘ডিমেরিট পয়েন্টস’ ২। দুই জায়গাতেই বল প্রথম থেকে ঘোরার পাশাপাশি নিচুও হয়েছে। দুবাইয়ের বৈঠকে এই নতুন রেটিং প্রথা চালু করার পক্ষে মত দিয়েছে প্রত্যেকটি সদস্য দেশ। বোঝাই যাচ্ছে, নিজেদের ঘরের মাঠে ইচ্ছে মতো পিচ বানিয়ে ম্যাচ জেতার নকশা বন্ধ করতে চাইছে আইসিসি।

আরও পড়ুন: গড়াপেটা নিয়ে এ বার সাসপেন্ড ইরফানও

ভারতীয় বোর্ড যদিও পিচ নিয়ে সংঘাতের মেজাজে রয়েছে। তারা মানতে চায়নি পুণের পিচ ‘পুওর’ ছিল। ধরে রাখা যায়, সদ্য হাতে পাওয়া বেঙ্গালুরু পিচ-রিপোর্টও তারা মেনে নেবে না। নিয়ম অনুযায়ী, ভারতীয় বোর্ডের আপত্তি খতিয়ে দেখবেন ম্যাচ রেফারিদের ওপরের পদে থাকা জেফ অ্যালারডাইস বা রঞ্জন মদুগলে। তাঁরা বিচার করবেন, ভারতের আপত্তি ঠিক কি না।

আইসিসি প্রধান ভারতেরই শশাঙ্ক মনোহরের সঙ্গে লভ্যাংশ বন্টন নিয়ে কাজিয়া তুঙ্গে কোহালিদের বোর্ডের। আর্থিক বিষয় নিয়ে তুলকালামের মধ্যেই পরপর দু’টি টেস্টের পিচ নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলে ম্যাচ রেফারির নেতিবাচক রেটিং দু’পক্ষের মধ্যে চাপানউতোর বাড়িয়ে তুলছে।

পিচ নিয়ে আইসিসি-র বাউন্সারে কোহালিদের বোর্ড পুরোপুরি ব্যাকফুটে। এখন দেখার যে, অশনি সঙ্কেত পেয়ে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির শহর রাঁচীতে ঐতিহাসিক প্রথম টেস্টের পিচ ভাল হয় না খারাপ!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE