ইঙ্গিত, শাস্ত্রীর পছন্দ ভরত অরুণ-ই শ্রীলঙ্কা সফরে থাকবেন দলের সঙ্গে।
মহম্মদ শামিদের বোলিং কোচ কে হবেন, তা নিয়ে নাটকের নিষ্পত্তি হয়ে যাবে আজ, মঙ্গলবারেই। দুপুরের দিকে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সদর দফতর ক্রিকেট সেন্টারে বোর্ড এবং সিওএ (সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্স) কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন রবি শাস্ত্রী।
মোটামুটি যা ইঙ্গিত, শাস্ত্রীর পছন্দ ভরত অরুণ-ই শ্রীলঙ্কা যাচ্ছেন বোলিং কোচ হিসেবে। এর আগে শাস্ত্রী যখন টিম ডিরেক্টর ছিলেন, তখনও বোলিং কোচ ছিলেন অরুণ। কিন্তু শাস্ত্রীকে সরিয়ে গত বছর অনিল কুম্বলে কোচ হওয়ার পর থেকে অরুণকে আর ভারতীয় দলের সঙ্গে রাখা হয়নি। কেউ তাঁকে একটি ফোন করেও বলেননি যে, তোমার সার্ভিস আর দরকার নেই।
শাস্ত্রীকে নিয়ে ক্রিকেট অ্যাডভাইসরি কমিটির একাংশের আপত্তি ক্রমশ প্রকট হয়ে উঠছে। তিন সদস্যের এই কমিটিতে রয়েছেন সচিন তেন্ডুলকর, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং ভি ভি এস লক্ষ্মণ। কোনও কোনও মহল থেকে যতই দাবি করা হোক, কোচ নির্বাচন নিয়ে ঐক্যমত্য হয়েছিল কমিটি, তা সর্বৈব মিথ্যা। ঘটনা হচ্ছে, শাস্ত্রীকে জোরাল ভাবে চেয়েছিলেন একমাত্র সচিন। তাঁর অনড় মনোভাবের জন্য এবং বিরাট কোহালির পছন্দ বলেই শাস্ত্রী কোচ হিসেবে প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ভারতীয় দলের বোলিং কোচের দায়িত্ব পেলে সব ছাড়তে রাজি ভরত
কিন্তু কোচ নির্বাচন মিটতে না মিটতেই ফের বিতর্ক বাধে সহকারী কোচ নির্বাচন নিয়ে। সব চেয়ে বেশি কাজিয়া এখন বোলিং কোচ নিয়ে। অ্যাডভাইসরি কমিটি বোলিং পরামর্শদাতা হিসেবে বেছে দিয়েছে জাহির খান-কে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে সেই নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে। সাধারণত, হেড কোচ নির্বাচিত হওয়ার পর তিনিই সহকারীদের বেছে নেন। সব খেলাতে এটাই প্রথা।
সহকারী নিয়োগ নিয়েও সৌরভ বনাম শাস্ত্রী কাজিয়া এসে পড়ছিল। সৌরভ চেয়েছেন জাহিরকে। আবার শাস্ত্রীর পছন্দ ভরত অরুণ। মানে ফের দু’জনের রেষারেষি এবং সঙ্ঘাত। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়াল যে, সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত সিওএ-কে হস্তক্ষেপ করতে হল। সিওএ প্রধান বিনোদ রাই বলে দেন, ‘‘জাহির খান বা রাহুল দ্রাবিড়কে নিয়োগ করা হয়নি। তাঁদের নাম সুপারিশ করেছে অ্যাডভাইসরি কমিটি। সহকারীর নাম চূড়ান্ত হবে হেড কোচের সঙ্গে কথা বলে।’’
সেই আলোচনাই হবে আজ, ক্রিকেট সেন্টারে। যেখানে শাস্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবে চার সদস্যের কমিটি। সেই কমিটিতে থাকছেন বোর্ড এবং সিওএ দু’পক্ষেরই প্রতিনিধি। বোর্ডের কার্যকরী প্রেসি়ডেন্ট এবং সচিব সি কে খন্না এবং অমিতাভ চৌধুরী থাকবেন। সঙ্গে সিইও রাহুল জোহরি এবং সিওএ সদস্য ও প্রাক্তন মহিলা ক্রিকেটার ডায়না এডুলজি।
বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগেও তুল্যমূল্য যুদ্ধ চলছে দুই প্রার্থীকে নিয়ে। অ্যাডভাইসরি কমিটি প্রকাশ্যে আর কোনও কথা না বললেও তাঁদের দেওয়া দু’টি নাম বাতিল হয়ে গেলে তাঁরা যে মোটেও প্রসন্ন হবেন না, ধরে রাখা যায়। শোনা যাচ্ছে, রাহুল দ্রাবিড় ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন, তিনি শ্রীলঙ্কা যাবেন না। জাহির সে রকম কিছু জানাননি বলে ধরে নেওয়া যায়, তিনি এই লড়াই থেকে নিজেকে তুলে নিচ্ছেন না।
জাহিরের হয়ে বোর্ডের প্রভাবশালী মহলেও ফোন গিয়েছে বলে খবর। কারা করলেন সেই ফোন? পরিষ্কার করে কেউ নাম প্রকাশ করতে ইচ্ছুক না হলেও এটুকু বোঝা যাচ্ছে যে, জাহির-পন্থীরা সহজে যুদ্ধ বিরতি দিতে চান না। তাঁরাও শেষ পর্যন্ত লড়ে দেখতে চান, শাস্ত্রীর পছন্দকে টেক্কা দিয়ে প্রাক্তন বাঁ হাতি পেসারকে বোলিং পরামর্শদাতা হিসেবে দলের সঙ্গে যুক্ত করা যায় কি না। যদিও সোমবার রাত পর্যন্ত য়া ইঙ্গিত, জাহিরকে নিয়ে চাপ বাড়ানোর জোরাল চেষ্টা করা গিয়েছে ঠিকই। কিন্তু শাস্ত্রীর পছন্দ অরুণকে সরিয়ে তাঁর বোলিং কোচ হওয়ার মতো অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
বোর্ডের উচ্চমহল এবং সিওএ এককাট্টা এই ব্যাপারে যে, সহকারী নির্বাচন নিয়ে শেষ কথা বলা উচিত শাস্ত্রীরই। মঙ্গলবার দুপুরে নতুন হেড কোচের উপরেই তাই জাহিরের ভাগ্য নির্ভর করে রয়েছে। এবং, এখনও পর্যন্ত যা পূর্বাভাস, শাস্ত্রী সাফ সাফ বলবেন তিনি সহকারী কোচেদের ‘কোর গ্রুপ’-কে নিয়মিত ভাবে দলের সঙ্গে চান। পরামর্শদাতা সফর ভিত্তিক ভাবে বিশেষ সেশনে আসতে পারেন।
যেমন ফিল্ডিংয়ে পরামর্শদাতা হিসেবে আসতে পারেন জন্টি রোডস। স্পিন বোলিংয়ে শেন ওয়ার্ন। তেমনই জাহির এলেও পরবর্তী সময়ে আসতে পারেন স্বল্পমেয়াদী উপস্থিতিতে। যদিও বোলিং পরামর্শদাতা হিসেবে যদি তাঁর নাম মঙ্গলবার ঘোষণা না হয়, তার পরেও জাহির কোনও ভাবে কোহালিদের দলের সঙ্গে যুক্ত হতে চান কি না, সেটাও দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy