Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ফুটবলে রাজ্যকে সেরার মুকুট জেলার মেয়েদের

মঙ্গলবার ওড়িশার ভূবনেশ্বরে কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে অন্ধ্রপ্রদেশকে হারিয়ে বীরভূমের মেয়েরা দেশের সেরা  হওয়ায়  উচ্ছ্বসিত জেলা প্রশাসন।

বিজয়িনী: দেশের সেরার পদক জয়ের পরে জেলার মহিলা দলের খেলোয়াড়েরা। —নিজস্ব চিত্র।

বিজয়িনী: দেশের সেরার পদক জয়ের পরে জেলার মহিলা দলের খেলোয়াড়েরা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২৩:৫২
Share: Save:

স্পেশ্যাল অলিম্পিকে জাতীয় স্তরে ইউনিফায়েড ফুটবলে চ্যম্পিয়ন হল রাজ্যের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করা বীরভূমের মেয়েদের ফুটবল দল। মঙ্গলবার ওড়িশার ভূবনেশ্বরে কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে অন্ধ্রপ্রদেশকে হারিয়ে বীরভূমের মেয়েরা দেশের সেরা হওয়ায় উচ্ছ্বসিত জেলা প্রশাসন।

প্রশাসনের কর্তারা বলছেন— গত বার ছেলেদের দল দেশের সেরা হয়ে গর্বিত করেছে জেলাকে। এ বার মেয়েদের দল একই সাফল্য পাওয়া রীতিমত গর্বের বিষয়। সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক বাপ্পা গোস্বামী বলছেন, ‘‘দারুণ খবর। রাজ্যের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করাই বড় বিষয়। প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়ে দেশের সেরা হওয়া তো নিঃসন্দেহে বড় প্রাপ্তি। জেলায় মেয়েদের খেলাধূলা এগোচ্ছে, এতে তারই প্রমাণ মিলল।’’ ‘বাংলার মেয়েরা খুব ভাল খেলেছে’— বলছেন আয়োজক স্পেশ্যাল অলিম্পিক কমিটির এরিয়া ডাইরেক্টর প্রকাশ রথও।

সর্বশিক্ষা মিশন ও জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে,রবিবারই জাতীয় স্তরে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে ভূবনেশ্বরে রওনা হয়েছিল ৮ সদস্যের ছাত্রীদের দলটি। সেই দলে ৪ জন করে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ও সাধারণ ছাত্রী ছিল। সেভেন এ-সাইড প্রতিযোগিতায় মাঠে অবশ্যে লড়াইয়ে ছিল ৪ জন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ছাত্রী ও ৩ জন সাধারণ ছাত্রী। ফুটবল দলে দেবী মুর্মু, পারুল বেঁশরা, রুপি টুডু, নিবেদিতা সরেন আদিবাসী ছাত্রী। জয়ের পরে তারা জানাচ্ছে, ‘‘খুব খুশি হয়েছি। এতটা আশা করিনি।’’

সর্বশিক্ষা মিশনের (বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়া) কো-অর্ডিনেটর শুকদেব চক্রবর্তী, স্পেশ্যাল এডুকেটর কাকলি দাস ও বিপত্তারণ রায় জানান, সোমবার থেকে মঙ্গলবার বিকেলের ফাইনাল খেলা পর্যন্ত মোট চারটি খেলার প্রতিটিতে সমান দাপট দেখিয়েছে বীরভূমের বা রাজ্যের ইউনিফায়েড ফুটবল দল। লিগ পর্যায়ে প্রথম খেলায় অন্ধ্রপ্রদেশকে ৫-০ গোলে এবং ঝাড়খণ্ডকে ৬-০ গোলে হারায় বীরভূম। মঙ্গলবার প্রথমে সেমিফাইনালে পুদুচেরিকে ৩-০ গোলে হারায়। ফাইনালে ফের অন্ধ্রপ্রদেশের মুখোমুখি হয় বাংলা তথা বীরভূমের মেয়েদের দল। তবে চূড়ান্ত খেলায় একতরফা ম্যাচ হয়নি। যথেষ্ট ভাল লড়ে অন্ধ্রপ্রদেশ। তবে শেষ জয়ের হাসি হাসে জেলার মেয়েরা।

আলাদা স্কুলে নয়। একই স্কুলে সাধারণ পড়ুয়াদের সঙ্গে একত্রে পড়াশোনা করবে ও শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী পড়ুয়ারা । প্রয়োজনে উপযুক্ত প্রশিক্ষণের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে পিছিয়ে থাকা পড়ুয়াটিকে সাধারণ পড়ুয়াদের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া হবে। দু’দশক ধরে সরকারি ভাবে স্বীকৃত এই ধারনা। ২০০৭ সাল বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পড়ুয়াদের খেলাধূলায় একই ভাবে অংশগ্রহনের কর্মসূচি গৃহীত হয়। ২০০৮ সাল থেকে যে উদ্যোগের নোডাল এজেন্সি স্পেশ্যাল অলিম্পিক ভারত। যাতে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কোনও পড়ুয়া হীনমন্যতায় না ভোগে। প্রথম থেকেই ইফনিফায়েড স্পোর্টসে উল্লেখযোগ্য প্রাধান্য রেখেছে বীরভূম।

ইউনিফায়েড ফুটবলে গত বছর বীরভূমের ছেলেদের ফুটবল দল দেশের সেরা হয়েছিল। তার পর স্পেশ্যাল অলিম্পিক কমিটি বীরভূমকে নোডাল জেলা ঘোষণা করে। মেয়েদের সাফল্য সেই তালিকায় নতুন মুকুট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Football Birbhum Olympic
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE