মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুই প্রধানের কর্তাদের সঙ্গে নবান্নে সভা করে ইতিমধ্যেই বলে দিয়েছেন, ‘‘কোনও অন্যায়ের কাছে মাথা নত করবেন না।’’ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তিনি সবরকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানকে।
এ বার দুই প্রধানের লড়াইয়ের সঙ্গী হতে মাঠে নামল বিজেপি। আইএসএল এবং আই লিগ নিয়ে যে ঝামেলা চলছে সেটা মেটাতে সবরকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি নিয়ে হাজির নরেন্দ্র মোদীর দল। বুধবার দুই প্রধানকে চিঠি পাঠিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাশ বিজয়বর্গীয় জানিয়ে দিলেন, দুই প্রধান চাইলে তিনি কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রীড়া দফতরের সঙ্গে সভার ব্যবস্থা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবেন। ‘‘শতাব্দীপ্রাচীন বাংলার দুই ক্লাবের জন্য কিছু করতে পারলে আমি গর্বিত হব,’’ লিখেছেন পশ্চিমবঙ্গে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা।
যা থেকে স্পষ্ট, লাল-হলুদ এবং সবুজ মেরুনের পাশে দাঁড়িয়ে অসংখ্য সমর্থককে ভোটের বাক্সে টেনে আনতে দিদিকে জমি ছাড়তে নারাজ মোদির দল। মমতার পাল্টা তারা কেন্দ্রীয় সরকারের ক্রীড়ামন্ত্রককে এই ইস্যুতে নামাতে চাইছে।
বাংলার রাজনীতির ময়দানে মমতা বনাম বিজেপি এখন আগুনে বিষয়। কিন্তু কোটি কোটি সমর্থক সমৃদ্ধ দুই প্রধানের অস্তিত্বের সংকটের সময় দু’তরফই পাশে দাঁড়াতে চাওয়ায় ময়দানেও লেগেছে রাজনীতির রং। স্পর্শকাতর ব্যাপার বলে দুই প্রধানের কর্তারা মুখ খুলছেন না চিঠি নিয়ে। তবে মনে মনে তারা খুশি এটা ভেবে যে রাজ্য এবং কেন্দ্র এক যোগে চাপ দিলে যদি ফেডারেশন এবং আইএসএল কর্তৃপক্ষের অনড় মনোভাবে ফাটল ধরে।
ক্লাবের ক্ষমতা দখলে রাজনীতির লোকজন যুক্ত থাকলেও এ ভাবে কখনও সরাসরি রাজনীতির অনুপ্রবেশ দেখেনি ময়দান। ফলে মমতা বা বিজেপির এই ভূমিকায় বিতর্কের ঢেউ উঠেছে। শুরু হয়েছে চাপানউতোর। একদলের বক্তব্য, ‘‘দিদি-মোদি মিলে যদি প্রফুল্ল-নীতাদের দুই প্রধানকে মুছে ফেলার চেষ্টা আটকাতে পারেন তা হলে তো সেটা ভালই।’’ অন্য পক্ষের বক্তব্য, ‘‘পাশে দাঁড়ালে ক্ষতি নেই। কিন্তু দুই প্রধানের আবেগ নিয়ে কেউ যদি রাজনীতি করতে চায় তবে সেটা ঠিক হবে না।’’
মমতা বা বিজয়—মাঠে নামলেও ফেডারেশনের অবশ্য কোনও হেলদোল নেই। তিন দিনের মধ্যে নিজেদের সিদ্ধান্ত পাল্টে ফেলার পর দুই প্রধানকে প্রফুল্ল পটেল-কুশল দাশ এখনও এমন কোনও স্পষ্ট বার্তা দেননি যাতে আই লিগের পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ হবেই তা জোর দিয়ে বলা যায়। এ দিন আবার ফেডারেশন সচিব কুশল দাসকে কড়া চিঠি লিখেছেন আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়। মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘শনিবার ফেডারেশন ও ক্লাবেদের সভায় যে প্রস্তাবগুলো নেওয়া হয়েছে সেটি আইএসএল সংগঠকরা অনুমতি না দিলে কার্যকর করা যাবে না সেটা কোথাও বলা ছিল না।’’
পরিস্থিতি যা তাতে দুই প্রধান এবং আইএফএ-র অপেক্ষা করা ছাড়া কোনও গতি নেই। প্রেসিডেন্ট টুটু বসু পদত্যাগ করার পর মোহনবাগান ছন্নছাড়া। সচিব অঞ্জন মিত্র কারও ফোন ধরছেন না। ক্লাব তাঁবুতে হতাশা আর হতাশা। ইস্টবেঙ্গল অবশ্য নিজের মতো করে ঘর গোছাতে শুরু করেছে। তবে এ সবের মধ্যেই শোনা যাচ্ছে, ফুটবলার সমস্যা মেটাতে আইএসএলের মতোই ছয় বিদেশি ফুটবলার আই লিগের ক্লাবেরা নথিভুক্তি করতে পারবে, এই নিয়ম চালু হতে পারে এ বছর। সেটা নিয়ে আলোচনাও শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy