Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

কব্জির জুটির দিকে তাকিয়ে বোলিং গুরু

নাইটদের দলে দুই স্পিনারের জুটিকে নিয়ে খুব আশাবাদী স্ট্রিক। চায়নাম্যান কুলদীপ যাদব এবং পীযূষ চাওলার জুটি। ভারতীয় দলের মতো কেকেআরেও রয়েছে দুই রিস্টস্পিনারের যুগলবন্দি।

জুটি: কুলদীপ ও পীযূষ (ডান দিকে)। নাইটদের স্পিন-অস্ত্র। ফাইল চিত্র

জুটি: কুলদীপ ও পীযূষ (ডান দিকে)। নাইটদের স্পিন-অস্ত্র। ফাইল চিত্র

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত
শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:৩৮
Share: Save:

জিম্বাবোয়ে ক্রিকেটের সর্বকালের অন্যতম সেরা তারকা তিনি। এ বারে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বোলিং কোচ। ২০১৯ বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি জিম্বাবোয়ে। তাই সরে দাঁড়াতে হয়েছে তাঁকে।

সে সব নিয়ে মন ভারী হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু হিথ স্ট্রিক তাকাতে চান সামনের দিকে। আসন্ন আইপিএলে কেকেআরের বোলিং বিভাগ যাতে সফল হতে পারে, সে দিকেই পুরোপুরি নজর দিতে চান তিনি। নাইটদের দলে দুই স্পিনারের জুটিকে নিয়ে খুব আশাবাদী স্ট্রিক। চায়নাম্যান কুলদীপ যাদব এবং পীযূষ চাওলার জুটি। ভারতীয় দলের মতো কেকেআরেও রয়েছে দুই রিস্টস্পিনারের যুগলবন্দি। তফাতের মধ্যে হচ্ছে, ভারতীয় দলে চায়নাম্যান কুলদীপের সঙ্গে আছেন যুজবেন্দ্র চহাল। নাইট রাইডার্সে কুলদীপের সঙ্গী চাওলা।

বুধবার আনন্দবাজার-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে কেকেআর-এর বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিক বলে দিলেন, ‘‘বোলিংই হয়ে উঠতে পারে কেকেআর-এর অস্ত্র। কুলদীপের মতো সফল চায়নাম্যান বোলার রয়েছে আমাদের দলে। প্রস্তুতি ম্যাচে অসাধারণ বোলিং করেছে পীযূষ। এ বারের আইপিএলে আমাদের স্পিন বিভাগ অনেক প্রতিপক্ষকেই কিন্তু সমস্যায় ফেলে দিতে পারে।’’

নাইট রাইডার্সের শক্তি স্পিন বোলিং হলেও ইডেনের পিচের চরিত্র অনেকটাই বদলে গিয়েছে। আগের সেই মন্থর, স্পিন-সহায়ক বাইস গজের জায়গায় গতি ও বাউন্সের পিচ এখন ইডেনে বেশি দেখা যাচ্ছে। ঘরের মাঠে পেস-সহায়ক পিচে কী ভাবে স্পিনকে অস্ত্র করা সম্ভব হবে? জিম্বাবোয়ে ক্রিকেটের ইতিহাসে সব চেয়ে সফল মিডিয়াম পেসার বলছেন, ‘‘যে কোনও উইকেটেই সফল হয়ে ওঠার ক্ষমতা রয়েছে ওদের। পাঁচ বছর পঞ্জাবে খেলেছে পীযূষ। মোহালির উইকেটও স্পিন-সহায়ক ছিল না। মোহালিতে ও সফল হতে পারলে ইডেনে কেন পারবে না? আর কুলদীপ তো দক্ষিণ আফ্রিকাতে গিয়েও ভাল করে এসেছে। আমি তাই মনে করি না, ওদের সাফল্য উইকেটের চরিত্রের উপর নির্ভর করবে।’’ যাঁরা কব্জির ব্যবহারে স্পিন করান, রিস্ট স্পিনার বলা হয় তাঁদের। এই ধরনের স্পিনারদের সাফল্য পিচের চরিত্রের উপর নির্ভর করে থাকে না বলেই এখন বেশি করে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে কুলদীপ যাদবদের চাহিদা বাড়ছে।

কেকেআর-এ যদিও দুই রিস্টস্পিনারের পাশাপাশি আছেন সুনীল নারাইন। যাঁর বোলিং অ্যাকশন নিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই প্রশ্ন উঠছে। এ বারে পাকিস্তান সুপার লিগেও (পিএসএল) তাঁর অ্যাকশন নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করেছিলেন আম্পায়ার। আর এক বার আম্পায়াররা প্রশ্ন তুললেই তাঁর বল করা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বোলিং কোচ কি চিন্তিত? স্ট্রিক বললেন, ‘‘ছেলেদের মানসিক ভাবে চাঙ্গা রাখার জন্য রয়েছেন মাইক হর্ন। মনোবল বাড়ানোর জন্য ওঁর মতো কোলের কোনও বিকল্প নেই। মাইক হর্নের উপস্থিতি নিশ্চয়ই নারাইনের উপকার করবে। তা ছাড়া নিজের ব্যক্তিগত কোচের সঙ্গে অ্যাকশন নিয়ে আলোচনা করেছে নারাইন। আইপিএলে নতুন করে আর ওর কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’’

নাইট সংসারে এ বার আছেন মিচেল জনসন। অস্ট্রেলিয়ার ‘বিগ ব্যাশ’ লিগে পার্‌থ স্কর্চার্স-এর জার্সিতে এ মরসুমেও তিনি সফল। কেকেআর কতটা তাঁর উপর ভরসা রাখছে? স্ট্রিকের জবাব, ‘‘চোট পেয়ে বাইরে চলে গিয়েছে মিচেল স্টার্ক। পুরো আইপিএলেই আর খেলতে পারবে না। বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে জনসন-কেই। ও যথেষ্ট অভিজ্ঞ বোলার। আমার বিশ্বাস ও বাড়তি দায়িত্ব নিতে পারবে।’’

মিচেল স্টার্কের বদলে কেকেআর নিয়েছে ইংল্যান্ডের টম কুরান-কে। আজ, বৃহস্পতিবারই কেকেআর শিবিরে যোগ দেওয়ার কথা তাঁর। স্টার্ক-এর বিকল্প হিসেবে কুরান-কে কেন বেছে নেওয়া হল? প্রাক্তন জিম্বাবোয়ে অধিনায়কের ব্যাখ্যা, ‘‘কুরানের বোলিংয়ে বৈচিত্র আছে। ব্যাট হাতে বড় শটও খেলতে পারে। এক জন বোলার ছিটকে গিয়েছে। তার জায়গায় আমরা এক জন অলরাউন্ডার পেলাম। খারাপ কী!’’

প্রথম ম্যাচেই কেকেআরের বিরুদ্ধে খেলতে দেখা যাবে বিরাট কোহালি, এ বি ডিভিলিয়ার্স, ব্রেন্ডন ম্যাকালাম-দের। তাঁদের আটকানো‌র ব্যাপারে কী ভেবেছেন দলের বোলিং কোচ? স্ট্রিক বলছেন, ‘‘বিশ্বের অন্যতম সেরা দুই ব্যাটসম্যান কোহালি ও এবি। তবে প্রত্যেকেরই কিছু দুর্বলতা রয়েছে। ওদের ভিডিয়ো দেখে সেটা আমরা বের করছি। সেই বুঝেই পরিকল্পনা ঠিক করা হবে।’’

কয়েক দিন আগেই বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্ব থেকে ছিটকে গিয়েছে তাঁর দেশ। তিনিই ছিলেন জিম্বাবোয়ের প্রধান কোচ। এই ঘটনার পরেই কোচের পদ থেকে তাঁকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেয় জিম্বাবোয়ে ক্রিকেট বোর্ড। স্ট্রিক বেশ হতাশ। বলে ফেললেন, ‘‘আমি কোচ থাকাকালীন ১৭ বছর পরে দেশের বাইরে সিরিজ জিতেছে জিম্বাবোয়ে। শ্রীলঙ্কাকে তাদের দেশে হারিয়েছি। এ ভাবে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে হবে, ভাবিনি। আসলে আমাদের বোর্ডের শীর্ষ কর্তাদের কেউ ক্রিকেট খেলেনি। তাই জিম্বাবোয়ের আজ এই অবস্থা।’’

বল-বিকৃতি কাণ্ড নিয়ে কী বলবেন তিনি? স্টিভ স্মিথদের কি একটু বেশি শাস্তিই দিয়ে ফেলেছে তাঁদের দেশের ক্রিকেট বোর্ড? ক্রিকেট জীবনে অন্যতম সেরা সুইং বোলারের আখ্যা পাওয়া হিথ স্ট্রিকের জবাব, ‘‘স্মিথদের ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার ক্ষতি হতে পারে। তবে ওরাও কিন্তু ক্রিকেটীয় ভদ্রতা, সৌজন্য রক্ষা করেনি। সেটা ভুললে চলবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE